Home কলাম হিন্দু ও বৌদ্ধগণকে নিশ্চিহ্ন করতে ধর্মান্ধগণের ফেসবুকে ভুয়া আইডি

হিন্দু ও বৌদ্ধগণকে নিশ্চিহ্ন করতে ধর্মান্ধগণের ফেসবুকে ভুয়া আইডি

সোনা কান্তি বড়ুয়া : বাংলাদেশে অতীত ও ঐতিহ্যে হিন্দু বৌদ্ধ অবদান! বর্তমান বাংলাদেশে জামায়াত ধর্মান্ধগণের ইসলামীকরণ ও মৌলবাদী গোষ্ঠীদের জঘন্য চাতুরীর ইতিহাস লিখতে গেলে একটি মহাভারত লিখতে হয়। আমাদের বাংলাদেশ আমাদের ধর্ম! বাঙালি সংস্কৃতির মূল কথা হলো অসা¤প্রদায়িকতা ও স¤প্রীতি। বর্তমান বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে মুসলমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, চাকমা, সাঁওতালসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (INDEGENOUS) এক সঙ্গে স¤প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছে বলেই সব স্রোত এক ধারায় এসে মিলিত হয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে করেছে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর অভূতপূর্ব বিজয় অর্জনে এককভাবে যে উপাদানটি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে তা হলো বাঙালি সংস্কৃতির শক্তি।
সত্য কখনো চাপা থাকে না! ইতিহাস কিন্তু বড় নির্মম! রামুর মুসলমান ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা ফেক আইডি বানিয়ে কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বৌদ্ধবিহার বুদ্ধমন্দির ও বৌদ্ধ বাড়ি ধ্বংস করেছে ২০১২ সালে ২৯ শে সেপ্টেম্বর ভয়াল কালো রাতে! আইনের শাসনে বাংলাদেশে কোরআন নিয়ে গুজব ছড়িয়ে মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই জামাতের হিংসায় উন্মত্ত সা¤প্রদায়িক রাজনীতি! জঙ্গিবাদ ছড়াতে জামায়াত ধর্মান্ধগণের ফেসবুকে ভুয়া আইডি শত শত হিন্দু ও বৌদ্ধদের বৌদ্ধ বিহার হিন্দু মন্দির ও বাড়িঘর ভস্মীভূত করে ইসলাম ধর্মের কোনো লাভ হয়নি। এতে আসলে এই সকল মানুষরূপী অমানুষদের লজ্জা বলিয়া কিছু নাই। বাংলাদেশে অতীত ও ঐতিহ্যে হিন্দু বৌদ্ধ অবদান এবং মুসলিম জঙ্গীরা বাঙালি’ শব্দের আবিষ্কারক ছিলেন না! বৌদ্ধ চর্যাপদের অপাপবিদ্ধ সিদ্ধপুরুষ বৌদ্ধ কবি ভুসুকু ‘বাঙালি’ শব্দের আবিষ্কারক ছিলেন।

চর্যাপদ পাঠ এবং গবেষণার সময় মনে হবে বাংলা কেবল একটি দেশ নয়, সে একটি সভ্যতা, একটি সংস্কৃতি, একটি অপাপবিদ্ধ জীবনাদর্শ বা জীবন দর্শনের প্রতীক, যার মর্মবাণী হল বিশ্ব মানবতাবাদ “আমার এই ঘর ভাঙিয়াছে যেবা / আমি বাঁধি তার ঘর। / আপন করিতে গুরিয়ে বেড়াই,/ যে মোরে করেছে পর। (কবি জসীম উদ্দীনের লেখা)! বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে সত্য এবং সঠিক ধারণা দেয়া, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের সঙ্গে পরিচয় করানোই আমাদের লক্ষ্য। অসা¤প্রদায়িক এক উজ্জ্বলতর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানো এবং নৈতিক শিষ্টাচার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও এই কার্যক্রম ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ১০ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার বিচার এখনো শুরু না করে কুমিল্লা দূর্গাপূজায় (২০২১) ধ্বংসযজ্ঞ কেন? কিন্তু এসব ঘটনার কোনোটারই এই নাগাদ বিচার সম্পন্ন হয়নি।

প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সরকার কর্তৃক সমর্থিত এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো সকল সংখ্যালঘু কে নিশ্চিহ্ন করে বাংলাদেশকে খাঁটি ইসলামী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলা! ফলে একের পর এক ঘটনা ঘটছে। ২০২১ সালে কুমিল্লায় দূর্গা পূজা পন্ড করার লক্ষ্যে কথিত কোরান অবমাননার গুজব ছড়িয়ে হিন্দুদের ওপর হামলা চাল্লাচ্ছে স্থানীয় মৌল বাদী মুসলিমরা! রামুর মুসলিম জঙ্গীরা ২৯শে সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ করল! রামুর মুসলিম জঙ্গীরা এই উগ্রতা প্রদর্শনের পরিবর্তে যদি অনুসন্ধান করা যেত যে সত্যিকার অর্থে কার ফেসবুক আইডি থেকে এই লেখাটি (কোরাণের উপর পদচিহ্ন) ছড়িয়ে দেয়া হয়, তাহলে প্রকৃতপক্ষে রামুর মুসলমান, ফন্দিবাজ ধরা পড়ত। এ ধরনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ্য করেছি যে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর আক্রমণের উদ্দেশ্য নিয়েই ভুয়া আইডি তৈরি করে অপপ্রচারগুলো করা হয়। সরকারি দপ্তরের কাগজপত্রের ক্ষতিসাধন করা হয়েছে।

বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে সেই মহাজ্ঞানী, মহাচার্য অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের জীবনী সরিয়ে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশে স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে ১ দুর্নীতি দমন কমিশন শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ নিয়ে ইসলামীকরণ ও মৌলবাদী গোষ্ঠী! জঙ্গিবাদ ছড়াতে জামায়াত ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করে- এমন তথ্য পাওয়া গেছে এবং ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের জীবনী সরিয়ে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশে ধর্মান্ধ স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে! ইহা ও উল্লেখযোগ্য যে, চীন সরকার ২০০৬ সালে বাঙালির গৌরব সন্তান অতীশ দীপংকরের জন্মভূমি বজ্রযোগিনী গ্রামে (মুন্সিগঞ্জ) স্মৃতি মন্দির স্থাপন করেছেন।

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে স¤প্রতি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকারী ভারতের রাজনীতিবিদ বিজেপির বহিস্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মার পক্ষে হিন্দু রাহুল দেব ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নড়াইলে (SAMAKAL ,18 June 2022) ব্যাপক সংঘর্ষ ও তিন হিন্দু শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছেন মুসলমান শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।

সাংবিধানিকভাবে ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ; এক মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ত্রিশ লাখ শহীদের পবিত্র রক্তে স্নাত সকল স¤প্রদায়ের রাষ্ট্র বাংলাদেশ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশে জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা, উগ্রপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীর নষ্টরা বলে, তবুও তিনি জাতীয় কবি নন, কেন? বাংলাদেশে ড. হুমায়ুন আজাদ বলেছেন, “বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ- যাঁকে বাতিলের চেষ্টা করে আসছে নষ্টরা পবিত্র পাকিস্তানের কাল থেকে; পেরে ওঠেনি। এমনই প্রতিভা ঐ কবির, তাঁকে বেতার থেকে বাদ দিলে তিনি জাতির হৃদয় জুড়ে বাজেন; তাঁকে পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দিলে তিনি জাতির হৃদয়ের কাব্যগ্রন্থে মুদ্রিত হয়ে যান, তাঁকে বঙ্গভবন থেকে বাদ দেওয়া হলে তিনি সমগ্র বঙ্গদেশ দখল করেন; তাঁর একটি সঙ্গীত নিষিদ্ধ হলে তিনি জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠেন।”

বাংলাদেশে আমি মানুষ: এ কথা কাহাকেও বলতে শুনি না কেন? ড. হুমায়ুন আজাদ বলেছেন, প্রতিক্রিয়াশীল উগ্রপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীর নষ্টরা অনেক লড়াই করেছে তাঁর (“বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ-) সাথে, পেরে ওঠে নি; তাঁকে মাটি থেকে বহিষ্কার করা হলে তিনি আকাশ হয়ে ওঠেন; জীবন থেকে তাঁকে নির্বাসিত করা হলে তিনি রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন জাতির স্বপ্নালোকে। নষ্টরা তাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে আপ্রাণ। যদিও তিনি জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা, তবুও তিনি জাতীয় কবি নন। তাঁর নামে ঢাকায় একটি রাস্তাও নেই; সংস্থা তো নেই। তাতে কিছু যায় আসে নি তাঁর; দশকে দশকে বহু একনায়ক মিশে যাবে মাটিতে। তিনি বেঁচে থাকবেন বাঙলায় ও বিশ্বে।” মানবাধিকারের অস্তিত্বের আলোকে পবিত্র কুরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত (১০৯ এবং ২২ : ৩৮) লঙ্ঘন করে মৌলবাদীরা পবিত্র ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে হিংসা উন্মত্ত মন মানসিকতায় রামুর চিটিংবাজ ধর্মান্ধ মুসলমান কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে কোরআন অবমাননা করলে বাংলাদেশে বিচার হয় না কেন?
ধর্মান্ধ জামায়াতের বাংলাদেশে হিন্দু ও বৌদ্ধদের মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিন! এবং জামাত হিন্দু বৌদ্ধদের মুসলমান বানষচ্ছে! হিন্দু ও বৌদ্ধগণকে মুসলমান বানষতে কোরান অবমাননার গুজব! সকল স¤প্রদায়ের নাগরিকগণ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পবিত্র আমানত, সে আমানতের সুরক্ষা দেয়া, নাগরিকবৃন্দের প্রাপ্য সেবা বুঝিয়ে দেয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। পরমতসহিষ্ণু মানবধর্মকে ধ্বংস করার নাম ধর্মান্ধ উগ্রবাদের ধর্ম! আইনের শাসনে কোরআন নিয়ে গুজব ছড়িয়ে মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই জামাতের মিসকিন, মুরতাদ, ও কাফের, প্রথায় হিংসায় উন্মত্ত সা¤প্রদায়িক রাজনীতি! মানুষের বাড়িঘর ভস্মীভূত করে ইসলাম ধর্মের কোনো লাভ হয়নি! এতে আসলে এই সকল মানুষরূপী অমানুষদের লজ্জা বলিয়া কিছু নাই।
বরং অন্য ধর্মাবলম্বীদের কছে এই ধর্ম সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছে দেবে।

হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে হিন্দু বৌদ্ধদের ভারত ভূমি ও দেশ দখল করার নাম মুসলিম ধর্ম! ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’! মধ্য এশিয়া, আরব এবং আফগানিস্তানের সকল মুসলিমেরা প্রাচীন কালে হিন্দু বৌদ্ধ ছিল। রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আইএস নাম দিয়ে বাংলাদেশকে অচল করার চেষ্টা হয়েছে। শোলাকিয়া ঈদগাহে হামলা করা হলো। ক্রমাগতভাবে হামলা হতে থাকলো। এর মধ্যেই হলি আর্টিজানে হামলা হলো। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষ বিশেষ করে আমেরিকা বলেছিল বাংলাদেশ শেষ হয়েছে গেছে। সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
ধর্মান্ধ রাজনীতি বাংলাদেশে অনেক বিহারী ও রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে ধর্মকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের হেনস্থা দেশত্যাগের হুমকি! জামাত ও যুদ্ধাপরাধীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী রাষ্ঠ্রদ্রোহী হয়ে ইসলামকে কলঙ্কিত করেছে। আজকের বুড়িগঙ্গার পানির মতো জামাত, মুজাহিদীন সন্ত্রাসী ও যুদ্ধাপরাধীদের ধর্ম পুরোপুরি বিষ এবং জামাতকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। ঘর পোষে চোর আর ও কহে জোর এ বড় কুটিনী ঘাগী। সময় এসেছে সা¤প্রদায়িক ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার।

বাংলাদেশ কোনোভাবে একটি বিশেষ স¤প্রদায় কিংবা ধর্মস¤প্রদায়ের দেশ নয়; ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রও নয়। কিন্তু রাষ্ট্রের পবিত্র সংবিধানে যখন বিশেষ কোন ধর্মের তিলক চিহ্ন জুড়ে দেয়া হয়, তখন রাষ্ট্রের দর্পণে অপরাপর ধর্মে, সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নাগরিকগণ নিজেদের কত টা নিরপেক্ষ অবয়বে দেখতে পান? আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআন মজীদে ঘোষনা করেছেন, “অন্য ধর্মের ধর্মস্থান ধ্বংস কর না (কোরআন, ২২ ঃ ৩৮)। অন্য ধর্মকে গালাগাল কর না (৬ : ১০৬)। জামাতের আক্রমণের শিকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা কেন? বঙ্গবন্ধু গোলাম আযমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছিলেন এবং জামাতের সা¤প্রদায়িক রাজনীতি করার অধিকার বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

পাল রাজত্বের চারশত বছরকে (৮ম শতাব্দী থেকে ১১ শতাব্দী) বাঙালি জাতির এনলাইটেনমেন্ট যুগ বলা হয় এবং সেই যুগে বুদ্ধাব্দই (গৌতমবুদ্ধের জয়ন্তি সাল) বঙ্গাব্দ ছিল। ‘আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী (ভুসুকু আজ আলোকপ্রাপ্ত সিদ্ধপুরুষ বা বাঙালি হলেন)” থেকে ঐতিহাসিক ‘বাঙালি’ শব্দের অভূতপূর্ব সংযোজন হয়েছিল এবং (দি বুক অব এনলাইটেনমেন্ট) ৪৯ নম্বর কবিতায় সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবি®কৃত হল। পূজনীয় ব্যক্তির প্রতি সন্মান প্রদর্শন বাংলাদেশে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী দের বাঞ্ছনীয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার, আলবদর চক্র যেখানে সেখানে পুরুষদের বস্ত্র উন্মোচন করে মুসলমানিত্ব পরীক্ষা করা হতো! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা ‘সওয়াব’ এর আশায় জোর করে মুসলমান করেছে হিন্দুদের, না হলে মৃত্যু। পিস কমিটির ইচ্ছানুযায়ী বিবাহযোগ্য নব মুসলিম কন্যাদের একটি অংশ পিস কমিটির অনুগত যুবকদের বাড়ীতে তুলে দেবার ব্যবস্থা করা হয় (মুনতাসীর মামুন, রাজাকারের মন, পৃষ্ঠা ৯১)।

আরবীয় সভ্যতা ও ইসলাম ধর্ম বাংলাদেশে আসার পূর্বে ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে ১২০২ সালে বিদেশী তুর্কী সন্ত্রাসী ধর্মান্ধ মুসলমান বখতিয়ার খিলজি বৌদ্ধহত্যা যজ্ঞ করে চারশত বছরের (৮ম শতাব্দী থেকে ১১ শতাব্দী) বৌদ্ধ রাজত্ব বাংলাদেশ দখল করেছিল! দুর্নীতি দমন কমিশন শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ নিয়েইসলামীকরণ ও মৌলবাদী গোষ্ঠী! জঙ্গিবাদ ছড়াতে জামায়াত ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করে- এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা ও দুর্নীতির তথ্য দুদকে জমা দেওয়া হয়েছে। শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা ১১৬ জনকে ওয়াজ ও ধর্ম ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের ডিসি, এসপি, ইউএনওসহ যারা এই গোষ্ঠীকে উস্কানি দিচ্ছেন শ্বেতপত্রে তাদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে (SAMAKAL, 21 JUNE 2022)।

অতীশ দীপংকরের বৌদ্ধ বাংলায় মুসলমান দুর্বৃত্তপনা কেন? ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে বর্তমান বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়া এক সময় বৌদ্ধপ্রধান দেশ ছিলো! ইসলামি রাজনীতি বৌদ্ধধর্ম এবং বৌদ্ধ প্রধান দেশকে অজগরের মতো গিলে ফেলেছে! বাংলাদেশ মুসলমান রাষ্ট্র হয়ে বিক্রমপূর মুন্সীগঞ্জ হয়েছে! বিক্রমপূরের বজ্রযোগীনির রাজপুত্র ছিলেন অতীশ দীপংকর। বাংলাদেশে মুসলমান রাজনীতি বিক্রমপূরকে ধর্মান্ধ মুসলমান বানিয়ে মুন্সীগঞ্জ করা হয়েছে! বাংলাদেশ রাষ্ট্র অমুসলমানগণকে যেভাবে নিপীড়ন চালাচ্ছে তা আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি! আজ বাংলাদেশে মুন্সীগঞ্জে অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থানে “অতীশ দীপংকর বিশ্ববিদ্যালয়” এবং আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ তীর্থস্থান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান পাল সাম্রজ্য আমলের প্রখ্যাত পণ্ডিত ছিলেন! ধর্মান্ধ মুসলমান রাজনীতির মাফিয়া চক্রে বিক্রমপূর মুন্সীগঞ্জ হলো! বৌদ্ধ পালরাজাগণ বাংলাদেশে চারশত বছর রাজত্ব করেছিলেন এবং ১০৪১ সালে অতীশ দীপংকর তিব্বতে যাবার পর বাংলাদেশে বৌদ্ধধর্ম রাতারাতি কোথায় হারিয়ে গেল?
আরবীয় সভ্যতা ও ইসলাম ধর্ম বাংলাদেশে আসার পূর্বে আমাদের ছেলে বিজয় সিংহ শ্রীলংকা জয় করে ‘সিংহল রাজ্য’ প্রতিষ্ঠা করার ইতিহাস উক্ত দেশের ‘মহাবংশও দ্বীপবংশ’ নামক ইতিহাসদ্বয়ে সগৌরবে বিরাজমান। আমরা কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের drama “বিজয় সিংহ” ও সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতায় শ্রীলঙ্কা বিজয়ী সর্বপ্রথম বঙ্গবীর বিজয় সিংহ সম্বন্ধে পড়েছি , যিনি ২৫৬৫ বছর পূর্বে শ্রীলংকা জয় করে “সিংহল” নামে রাজ্য শাসন করতেন! ২৫৬৫ বছর পূর্বে শ্রীলংকার মহাবংশ এবং দ্বীপবংশ শীর্ষক ঐতিহাসিক গ্রন্থদ্বয়ের মতে রাজা বিজয় সিংহ বাঙালি ছিলেন। আজ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ লেখা হয় হিজরি (১৪৪১) সালকে বিকৃত করে। আমরা আরব দেশে গিয়ে আজ ১৪২৮ হিজরি সাল বলতে পারি না । এমন ভয়ঙ্কর মিথ্যা দিয়ে বঙ্গাব্দের ইতিহাস রচিত হ’লো অথচ আমাদের জাতীয় বিবেকের জবাবদিহিতার শক্তি মরে ধর্ম নামক বিভিন্নভয় ভীতির কবলে।

ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে ১২০২ সালে বিদেশী তুর্কী সন্ত্রাসী মুসলমান বখতিয়ার খিলজি বৌদ্ধহত্যা যজ্ঞ করে গণহত্যায় চারশত বছরের (৮ম শতাব্দী থেকে ১১ শতাব্দী) বৌদ্ধ রাজত্ব বাংলাদেশ দখল করেছিল ! আমার বাংলাদেশ আমার ধর্ম! বাঙালি সংস্কৃতির মূল কথা হলো অসা¤প্রদায়িকতা ও স¤প্রীতি। বর্তমান বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে মুসলমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, চাকমা, সাঁওতালসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এক সঙ্গে স¤প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছে বলেই সব স্রোত এক ধারায় এসে মিলিত হয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে করেছে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর অভূতপূর্ব বিজয় অর্জনে এককভাবে যে উপাদানটি!
ধর্মান্ধ ইসলাম এমন এক অভিশাপ ধর্মান্ধ জটিল ধাঁধা, যা থেকে নিস্তার পাইনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা! ৭১-এর পরাজিত শক্তিই হিংস্র জীব-জানোয়ারের চেয়েও ভয়ঙ্কর মানুষরূপী কোন জীব। মুসলমান না হলে কি বাংলাদেশের আদর্শবান নাগরিক হওয়া যায় না? জয় মানবতার জয়। গৌতমবুদ্ধের মহাশান্তি মহাপ্রেম কে নিয়ে লেখা বাংলা ভাষার প্রথম বইয়ের নাম গৌরবোজ্জ্বল বৌদ্ধ চর্যাপদ ! একুশে ভাষা আন্দোলনের আলোকে বাংলা ভাষা এবং একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্যে ”কত প্রান হল বলিদান / লেখা আছে অশ্রুজলে।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!

Exit mobile version