অনলাইন ডেস্ক : ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি রবিবার বলেছেন, ইরান ফিলিস্তিনিদের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলকে ওই অঞ্চলের জন্য বিপদ বলে অভিযুক্ত করেছে দেশটি। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলার এক দিন পর ইরান এ মন্তব্য করল।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন রাইসিকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘ইরান ফিলিস্তিনি জাতির বৈধ প্রতিরক্ষাকে সমর্থন করে।

ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী (ইসরায়েল) ও তার সমর্থকরা এই অঞ্চলের দেশগুলোর নিরাপত্তা বিপন্ন করার জন্য দায়ী এবং তাদের অবশ্যই এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে।’
এর আগে রাইসি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসলামিক জিহাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, ইসলামিক জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আল-নাখালাহ এবং হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াহের সঙ্গে রাইসি আলাদা করে ফোনে ফিলিস্তিনের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে তারা আর কোনো বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি।

হামাস বলেছে, রাইসি হানিয়াহের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেছেন। হানিয়াহও রাইসিকে আশ্বস্ত করেছেন, সামরিক অভিযান গাজা থেকে অন্যান্য অঙ্গনে প্রসারিত হবে।

গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের যোদ্ধারা শনিবার ভোরবেলা একটি বিশাল রকেটের ঢেউয়ের আড়ালে ইসরায়েলে প্রবেশ করে। ইসরায়েলের সরকার বলেছে, কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ লড়াইয়ে ছয় শতাধিক ইসরায়েলি নিহত হয়েছে এবং হামাস ১০০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করেছে।

অন্যদিকে গাজার দিকে অন্তত ৩৭০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইরান ফিলিস্তিনি হামলাকে ‘গর্বিত অভিযান’ ও ‘মহান বিজয়’ বলে অভিহিত করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী আকবর ভেলায়তি বলেছেন, ‘এই বিজয়ী অভিযান, যা ইহুদিবাদী শাসনের পতনকে সহজতর ও ত্বরান্বিত করবে, ইহুদিবাদী শাসনের আসন্ন ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি দেয়। আমি এই মহান ও কৌশলগত বিজয়কে অভিনন্দন জানাচ্ছি, যা এই অঞ্চলের আপসকারীদের জন্য একটি গুরুতর সতর্কবাণী।’

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র জুন মাসে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আয়োজন করেছিল।

ইরানের প্রেসিডেন্সি অনুসারে, সে সময় রাইসি বলেছিলেন, ইসরায়েল আরো আরব ও মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, ‘তরুণ ফিলিস্তিনিদের অধিকৃত অঞ্চল মুক্ত করা থেকে নিরুৎসাহিত করতে’।
শনিবার তেহরানের প্যালেস্টাইন স্কয়ারসহ ইরানের প্রধান শহরগুলোতে শত শত লোক জড়ো হয়েছিল, ফিলিস্তিনি পতাকা ও নিহত জেনারেল কাসেম সোলেইমানির ছবি বহন করে, যিনি ২০২০ সালে বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

ইরান ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় না এবং ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ফিলিস্তিনের জন্য সমর্থনকে তার পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। দুই সরকার বছরের পর বছর ধরে ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিক নাশকতা হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এর আগে ইরানের বিরুদ্ধে উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী ও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলার জন্য ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে।

সূত্র : আল অ্যারাবিয়া