সোনা কান্তি বড়ুয়া : শতবর্ষের আলোকে জয় বাংলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দশ-দিন ব্যাপী রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিনের আয়োজনে উপস্থিত আছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও SOUTH ASIAN দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীগণ! জয় বাংলা ধ্বনিত হয় হৃদয় স্পন্দনে। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু অবদান মহাকাব্য! বাঙালি মানসের আবেগ, শতবর্ষের আলোকে যাহা জয় বাংলার অমরত্বের বরপুত্র শেখ মুজিবুর রহমান ব্যক্ত করেছেন “জয় বাংলা!” বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই সুকীর্তি এবং সুকর্ম মানুষকে অমরত্ব দান করে, যা মানবজাতিকে সব ধরনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির পথ দেখায়।

‘মুজিব চিরন্তন’ ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার চতুর্থ দিন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার চতুর্থ দিনের থিম “তারুণ্যের আলোক শিখা”। বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত ধরনীতল! সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে বন্ধু রাষ্ট্র জাপানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যের ওপর টাইটেল এ্যানিমেশন ভিডিও, সমসাময়িক শিল্পীদের পরিবেশনায় বঙ্গবন্ধুর পছন্দের গান, থিমেটিক কোরিওগ্রাফি এবং দুই প্রজন্মের শিল্পীদের মেলবন্ধনে মিশ্র মিউজিক পরিবেশনা।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ মুজিব রেসকোর্স ময়দানে দশ লক্ষ লোকের বিশাল জমায়েতে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দেন যা বাঙালি জাতির ইতিহাসে যুগ সন্ধিক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। মুজিব তাঁর ভাষণে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে ব্যর্থ সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ আনেন। বক্তৃতার শেষে মুজিব ঘোষণা করেন: ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে… মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ… এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে প্রথম সরকারের মাত্র সাড়ে তিন বছরের সংক্ষিপ্ত সময়টুকু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। শূণ্য থেকে শুরু করে তাঁর সরকারকে যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশের অগণিত সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ সকল ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এবং জাতিগঠন কার্যক্রম শুরু হয়। আইন শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন, যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃনির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীদের জনরোষ থেকে রক্ষা করা এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো লক্ষ লক্ষ ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করা এবং আরো অনেক সমস্যার সমাধান তাঁর সরকারের সামনে সুবিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

আমাদের স্বাধীনতার জাতীয় ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, একটি জাতির পরিচয় ও অস্তিত্বের অভিনব স্বাক্ষর। আমার দেশ, আমার জন্মভূমি আমার কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থভূমি। “অশোক যাহার কীর্তি গাইল. / হিমালয় থেকে জলধি শেষ।” ইতিহাস সত্যের জয় ও মিথ্যার পরাজয় ঘোষণা করে। বাঙালী মহাপ্রাণ নেতাগণ সহ বঙ্গবন্ধু বহু চড়াই-উত্রাইর মধ্যে দিয়ে এবং ষড়যন্ত্রের দুর্ভেদ্য প্রাচীর বিদীর্ণ করে সমাজে সত্য এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণ। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ‘এই সব মূঢ়¤ম্লান মুখে দিতে হবে ভাষা, / এই সব শ্রান্ত শুস্ক-ভগ্ন বুকে ধ্বনিয়া তুলিতে হবে আশা’ নিয়ে দেশ ও দশের মঙ্গল সাধন করার।

১৯৫৫ সালের ২৫ আগস্ট গণপরিষদে প্রদত্ত আরেক ভাষণে শেখ মুজিব পূর্ববঙ্গের নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখার প্রতিবাদে যে বক্তব্য রাখেন তাও সমভাবে প্রাসঙ্গিক: ‘স্যার, আপনি লক্ষ্য করে থাকবেন যে, তারা পূর্ববঙ্গের স্থলে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ বসাতে চায়। আমরা বহুবার দাবি জানিয়ে এসেছি যে, [পূর্ব] পাকিস্তানের পরিবর্তে আপনাদের পূর্ব [বঙ্গ] ব্যবহার করতে হবে। ‘বঙ্গ’ শব্দটির একটি ইতিহাস আছে, আছে নিজস্ব একটি ঐতিহ্য…’।

চট্টগ্রামের DAINIK AZADI REPORTED মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত আবৃত্তি, কবিতাপাঠ ও বৃন্দ পরিবেশনা নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আবৃত্তি’র আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সহযোগিতায় মুজিববর্ষ জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সাংস্কৃতিক উপ কমিটির ওয়ার্কিং কমিটি। গতকাল শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ির মুক্তমঞ্চে আবৃত্তির এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। মুজিব শতবর্ষে সকল জেলায় একযোগে জাতির পিতার প্রতি নিবেদন করে এই আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন কবির কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের বাচিক শিল্পীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আবৃত্তি শিল্পী তাসকিয়া-তুন নুর তানিয়ার সঞ্চালনায় ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহা-পরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী দেবাসীষ রুদ্র।”

“আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার।” আজ ২৩ জানুয়ারী ২০২১ মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০ : ৩০টায় ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে জমি ও গৃহ প্রদান অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ভোধন ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশের জাতির পিতাকে মোদের সাষ্ঠাঙ্গ প্রণতি। তিনি সব বাঙালির। আসুন, সবাই মিলে সেই শুভ দিনটি উদ্যাপন করি। সামনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতা ও আমাদের সবার, যারা আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী এবং স্বাধীনতার আদর্শ ও চেতনা লালন করি। আসুন, সবাই মিলেই এগিয়ে যাই।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়,
“আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতা খানি
কৌতূহল ভরে!”
বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষের আলোকে আমার ভাষায়,
আমি পড়ি বঙ্গবন্ধুর জয় বাংলা কবিতা খানি “কৌতূহল ভরে” সেই মহা গৌরবময় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালের পরে!
জয় বাংলার অমরত্বের বরপুত্র শেখ মুজিবুর রহমান!
বাংলার জনগণ মন অধিনায়ক বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা মহা ভাগ্যবান,
শতবর্ষের আলোকে বঙ্গবন্ধুর জয়! যিনি মহাকাল করেছেন জয়।
জয় বাংলার জয়, বঙ্গবন্ধুর জয়!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫) মানুষ হিসেবে এ নশ্বর পৃথিবীতে তাঁর “সেই স্বপ্নটি ছিল বাংলাদেশ সৃষ্টিকে ষোলোকলায় পূর্ণতা দিয়ে আজও তাই বঙ্গবন্ধু অমরত্বের বরপুত্র। বাংলাদেশ শত বছর পরেও তিনি তাঁর বাংলাদেশ অমরত্বে বেঁচে থাকবেন। জয় বাংলা ধ্বনিত হয় হৃদয় স্পন্দনে। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু অবদান মহাকাব্য! শতবর্ষের আলোকে বাঙালি মানসের আবেগ, যাহা জয় বাংলার অমরত্বের বরপুত্র শেখ মুজিবুর রহমান ব্যক্ত করেছেন “জয় বাংলা!”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই সুকীর্তি এবং সুকর্ম মানুষকে অমরত্ব দান করে, যা মানবজাতিকে সব ধরনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির পথ দেখায়।
জয় বাংলার জয় বঙ্গবন্ধুর জয়!
যিনি মহাকাল করেছেন জয়।
বাংলার জনগণ মন অধিনায়ক বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা মহা ভাগ্যবান,
জয় হে বাংলার মর্মভেদী দেবদূত শেখ মুজিবুর রহমান।

সেই মহা গৌরবময় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অমর স্বাধীনতা মহাকাব্যের মহাকবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ঢাকার রেসকোর্সের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মহাজনসমুদ্রে জনগণমনের মুক্তির মঞ্চে দাঁড়িয়ে জলদ গম্ভীর স্বরে ঘোষণা করেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এমন অকুতোভয় বঙ্গবন্ধুর মতো মহাবীরকে কবে দেখেছেন? পাল রাজত্বের পর আগামি দিনের ইতিহাসে “বঙ্গবন্ধু অবদান!”

বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভাষায়,
‘আজিকার বসন্তের আনন্দ-অভিবাদন
পাঠায়ে দিলাম তাঁর করে।
আমার বসন্তগান তোমার বসন্তদিনে
ধ্বনিত হউক ক্ষণতরে-
হৃদয়স্পন্দনে তব, ভ্রমর গুঞ্জনে নব,
পল্লবমর্মরে!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান! স্কুল জীবন থেকেই মুজিবের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশ ঘটে। তিনি যখন গোপালগঞ্জ মিশনারী স্কুলের ছাত্র সে সময় একবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক ঐ স্কুল পরিদর্শনে আসেন (১৯৩৯)। শোনা যায়, ঐ অঞ্চলের অনুন্নত অবস্থার প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তরুণ মুজিব বিক্ষোভ সংগঠিত করেন। ম্যাট্রিক পাশের পর মুজিব কলকাতায় গিয়ে ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি আই.এ ও বি.এ পাশ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একজন সক্রিয় কর্মী এবং ১৯৪৩ সাল থেকে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এইচ. এস সোহরাওয়ার্দীর একজন একনিষ্ঠ অনুসারী। ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগ শেখ মুজিবকে ফরিদপুর জেলায় দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্ব অপর্ণ করে।

জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু! বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে আমরা। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বুকে চেপে জয় বাংলায় বিজয় দিবস ! আবারো প্রমাণিত হলো বাঙালি বীরের জাতি, মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে স্বপ্ন বান্তবায়নের পথে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর নারী, দেশের ১৭ কোটি মানুষের আস্থা ও গৌরবের প্রতীক বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতু শেখ হাসিনা।

২৫ মার্চ পাকবাহিনীর হামলার পর থেকে যে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু হয় সে সময় বঙ্গবন্ধু যদিও পাকিস্তানিদের হাতে বন্দী ছিলেন তথাপি তাঁকে তাঁর অনুপস্থিতিতে মুজিবনগর সরকার নামে অভিহিত অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিরা ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠন করে। তাঁকে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কও করা হয়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের গোটা অধ্যায়ে শেখ মুজিবের অনন্য সাধারণ ভাবমূর্তি মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা এবং জাতীয় ঐক্য ও শক্তির উত্স হিসেবে কাজ করে।
এতসব সমস্যা সত্তে¡ও শেখ মুজিব একটি নূতন শাসনতন্ত্র প্রণয়নে কখনই দ্বিধাগ্রস্ত হননি এবং সে কাজটি তিনি দশ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করেন। স্বাধীনতার তিন মাসের মধ্যে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা হয়। পনেরো মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় (৭ মার্চ ১৯৭৩)। একশত চল্লিশটি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির পথনির্দেশনা নির্ধারণ করেন : ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়।’ বাস্তবিকপক্ষে মুজিব সরকার গুরুত্বপূর্ণ সকল ক্ষেত্রে মৌলিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সূচনা করেন। এতসব অর্জন সত্তে¡ও মূলত উগ্র বামপন্থীদের তরফ থেকে বিরোধিতা আসে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধকে একটি ‘অসম্পূর্ণ বিপ্লব’ বলে গণ্য করে অস্ত্র ধারণ করে। ফলে দেশে একটি চরম নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রæত অবনতি ঘটতে থাকে এবং জনগণের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। সর্বোপরি দেশে দুর্ভিক্ষ (১৯৭৪) দেখা দেয় এবং হাজার হাজার লোক মৃত্যুবরণ করে।

যখন জাতির মাথায় ভেঙ্গে পড়লো বাংলার আকাশ
নিশুতি রাত গুমরে কাঁদে দেশে বিশ্বাসঘাতকতার বাতাস!
৭৫সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর মুকুট তো পড়ে আছে,
জাতির পিতা সহ তাঁর পরিবার স্বজন শুধু নেই।
দেশের রক্তাক্ত আকাশের উপর সূর্য ওঠেছে ওই
জন্মভূমি বাংলা মা গো তোমার শহীদ ছেলেরা কই?
সুখী হও সুখী হও / এ মৈত্রী ভাবনা । / দিবা নিশি হিত সুখ করিনু প্রার্থনা।

আমাদের স্বাধীনতার জাতীয় ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, একটি জাতির পরিচয় ও অস্তিত্বের অভিনব স্বাক্ষর। আমার দেশ, আমার জন্মভূমি আমার কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থভূমি। “অশোক যাহার কীর্তি গাইল. / হিমালয় থেকে জলধি শেষ।” ইতিহাস সত্যের জয় ও মিথ্যার পরাজয় ঘোষণা করে। বাঙালী মহাপ্রাণ নেতাগণ সহ বঙ্গবন্ধু বহু চড়াই-উতুরাইর মধ্যে দিয়ে এবং ষড়যন্ত্রের দুর্ভেদ্য প্রাচীর বিদীর্ণ করে সমাজে সত্য এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণ। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ‘এই সব মূঢ়ম্লান মুখে দিতে হবে ভাষা, / এই সব শ্রান্ত শুস্ক-ভগ্ন বুকে ধ্বনিয়া তুলিতে হবে আশা’ নিয়ে দেশ ও দশের মঙ্গল সাধন করার!

লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), বিবিধ গ্রন্থ প্রণেতা , কলামিষ্ট এবং মানবাধিকার কর্মী। সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!