অনলাইন ডেস্ক : দেশে স্বর্ণের বাজারে আবারও বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। টানা দরপতনের পর গেল সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম আউন্স প্রতি ৫৯ ডলার বেড়েছে। এমতাবস্থায় দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববাজারে এমন দাম বাড়ায় দেশের বাজারে যে কোনো মুহূর্তে এ ধাতুর দাম বাড়ানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। দেশের বাজারে সোনার দাম যখন কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয় সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিলো ১ হাজার ৮১০ ডলার। এখন প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৮৫৫ দশমিক ২৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে আগামী (৬ মার্চ) বৈঠক করার কথা আছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে তার আগেও বৈঠক হতে পারে। মনে করলে এর আগেও বৈঠকটি হতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে দেশে স্বর্ণের দাম বাড়নো হতে পারে।
গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৮১০ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে ১ হাজার ৮৫৫ দশমিক ২৫ ডলারে উঠে এসেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে সোনার দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ বা ৪৫ দশমিক ২৫ ডলার। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেই দাম বেড়েছে ১৯ দশমিক ২৫ ডলার।
এবিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুসের) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, আমরা দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর পর এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্সের দাম ৫০ ডলারের মতো বেড়েছে। তবে আমরা সোনার দাম নির্ধারণ করি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। স্থানীয় বাজারে বিশ্ববাজারের প্রভাবটা এখনো সেভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তাই আগামী সোমবারের বাজারচিত্র দেখবো।
তিনি বলেন, যদি বিশ্ববাজারে সোনার দাম এমনই থাকে বা দাম আরও বাড়ে, তার ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো দাম কত বাড়ানো যায়। অথবা যদি বিশ্ববাজারে দাম কমে সেটাকেও আমরা বিবেচনায় নেবো দাম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে।
এর আগে বিশ্ববাজারে এক মাস ধরে টানা দরপতন হয় সোনার। এতে এক মাসের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১৩৫ ডলার কমে যায়। বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে সম্প্রতি দেশের বাজারে দুদফায় সোনার দাম কমানো হয়েছে। অবশ্য তার আগে টানা ছয় দফা দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। গত ১৫ জানুয়ারি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম উঠে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকায়। রেকর্ড দাম হওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে দু’দফা দাম কিছুটা কমানো হয়।
সর্বশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৯১ হাজার ৯৬ টাকা করা হয়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৮৭ হাজার ১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৯৮ টাকা কমিয়ে ৬২ হাজার ১৬৯ টাকা করা হয়।
স্বর্ণের দামের বিশ্ববাজারের চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের শুরুতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৮২৪ ডলার। নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দফায় দফায় স্বর্ণের দাম বাড়ে। এতে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৫০ ডলারে উঠে যায়। এরপর থেকেই দাম কমতে শুরু করে। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১০ ডলার। এদিকে শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণ ১ হাজার ৮৫৫ ডলার দামে বিক্রি হয়েছে।