অনলাইন ডেস্ক : সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের গভর্নর ও রাজপরিবারের অন্যতম জ্যেষ্ঠ প্রিন্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া রাজপরিবারের কয়েক ডজন সদস্যও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রাজপরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, রাজপরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শাখা পরিবারের সদস্য মিলে প্রায় ১৫০ জনের মতো অভিজাত আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে আশঙ্কায় শুধুমাত্র রাজপরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য প্রতিষ্ঠিত অভিজাত বাদশাহ ফয়সাল বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রায় ৫০০টি শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। হাসপাতালে ডাক্তারদের মাঝে জরুরী বার্তা বিলি করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, সৌদি আরবে প্রথম রোগীর সন্ধান পাওয়া যায় ছয় সপ্তাহ আগে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির রাজপরিবারে ভীতি সঞ্চার করেছে এই রোগ।
এতে আরও বলা হয়, ৮৪ বছর বয়সী বাদশাহ সালমান লোহিত সাগরবর্তী জেদ্দা শহরের নিকট এক দ্বীপের প্রাসাদে বসবাস করছেন। বাইরে থেকে কাউকেই সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
অপরদিকে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এক প্রত্যন্ত স্থাপনায় থাকছেন।
এই ভাইরাসের বিষয়ে সৌদি আরব শুরু থেকেই অত্যন্ত সক্রিয়। এর নেপথ্যে রাজপরিবারের সদস্যদের আক্রান্ত হওয়াও ভূমিকা রাখতে পারে। প্রথম কোনো রোগীর সন্ধান পাওয়ার আগেই সরকার দেশটিতে সফর বন্ধ করে দেয়। এমনকি পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় উমরাহ বন্ধ রাখা হয়। সৌদি আরবে প্রবেশ বা দেশটি থেকে বের হওয়ার সব ধরণের যোগাযোগ এই মুহূর্তে বন্ধ। এমনকি আন্তঃপ্রদেশ যোগাযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সকল বড় শহর ২৪-ঘণ্টা লকডাউনে রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র খুচরা দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা রাখা হয়েছে। সরকার থেকে এ-ও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, এবার বার্ষিক হজ্বও বাতিল হতে পারে।
সৌদি আরব বিশেষজ্ঞ ও রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান কোটস বলেন, “যদি রাজপরিবারের মধ্যেই রোগ প্রবেশ করে থাকে, তার মানে এটি এখন জরুরী ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।”
এখন পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশটিতে ২৭৯৫ জন রোগী পাওয়া গেছে। রোগ থেকে মারা গেছেন ৪১ জন। মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সৌদি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন যে, মহামারির প্রকোপ সবে শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেছেন যে, সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ মানুষ এই রোগে মৃত্যুবরণ করতে পারেন।
খবরে বলা হয়, রিয়াদের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন বন্দর বিন আবদুলআজিজ আল সৌদের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর দুই ডাক্তার নিশ্চিত করে জানিয়েছেন। এছাড়া রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তিও নিশ্চিত করে জানিয়েছেন। সত্তরোর্ধ্ব এই সাবেক সামরিক কর্মকর্তা বাদশাহ সালমানের ভাইয়ের ছেলে। অর্থাৎ সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতার নাতি। রাজধানী রিয়াদের গভর্নর পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাবেক বাদশাহ আবদুল্লাহর প্রিয় সন্তান ও তারও আগে খোদ বাদশাহ সালমান এই পদে ছিলেন।