অনলাইন ডেস্ক : গত ১৯শে মে, শুক্রবার ‘ন্যাশনাল এথনিক এন্ড মিডিয়া কাউন্সিল অব কানাডা’র আয়োজনে টরন্টো সিটি হল এ ‘প্রেস ফ্রিডম ডে’ উপলক্ষে এক আলোচনা এবং সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১৫ জন সাংবাদমাধ্যম কর্মীকে সম্মানীত করা হয়।

অনুষ্ঠানে কানাডার জাতীয় পার্লামেন্টের ‘হাউজ অব কমন্স’ এর বিরোধী দলীয় নেতা পিয়েরে পইলিভারের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হবার কথা থাকলেও তিনি ব্যক্তিগত কারণে উপস্থিত থাকতে পরেন নি। তবে অন্টারিও’র বেশ কয়েকজন এমপিপি এবং টরন্টো সিটি কাউন্সিলের বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত বক্তারা একটি সুন্দর দেশ ও জাতি গঠনে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের কোন বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ প্রতি বছরের মে মাসের ৩ তারিখ’কে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ বা ওয়ার্ল্ড প্রেস ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার প্রধানতম কারণ হচ্ছে, পৃথিবীর সব জায়গার সংবাদমাধ্যম কর্মীরা যেন স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারেন এবং যে কোন সংবাদ বস্তুনিষ্ঠভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরতে পারেন। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক ‘ইউনিভার্সাল ডিক্লেরেশন অব হিউম্যান রাইটস’ এর ১৯ ধারায় মুক্ত ও স্বাধীন সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি উল্লিখিত রয়েছে। ইউনেস্কো প্রতি বছর খুবই গুরুত্বের সাথে সংবাদমাধ্যমের সদস্য, সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণে এই দিনটি পালন করে থাকে। এই দিনটি পালনে ইউনেস্কোর এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘ভবিষ্যতের অধিকার নির্মাণ : মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানুষের সব অধিকারের চালিকা শক্তি’। মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রতি বছর ইউনেস্কো সারা পৃথিবী থেকে কয়েক জনকে সম্মানীত করে থাকে।

‘ন্যাশনাল এথনিক এন্ড মিডিয়া কাউন্সিল অব কানাডা’র প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থমাস এস সারাস তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, মুক্ত ও স্বাধীন সংবাদ পরিবেশন একটি সমাজ ও দেশকে সুন্দর অবস্থানে নিয়ে যায়। সেই সাথে একটি দেশের সংবাদ মাধ্যমের চিত্র থেকে অনুধাবন করা যায়, সেই দেশটি জনগণের প্রত্যাশা কিভাবে পূরণ করে। তিনি পৃথিবীর যে সব দেশে সংবাদমাধ্যম কর্মীরা স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখীন হন, এমনকি মৃত্যুবরণ করেন তাঁদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং এদেরকে নিপীড়নের হাত থেকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বের মানবিক শক্তিকে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান।

থমাস এস সারাস আরও উল্লেখ করেন, কানাডা একটি বহুজাতিক ও বহুসংস্কৃতির দেশ। এই দেশের ইংরেজী ও ফরাসী ভাষার বাইরে যে শতাধিক ভাষার সংবাদমাধ্যম রয়েছে, তাদের স্বার্থ রক্ষায় ‘ন্যাশনাল এথনিক এন্ড মিডিয়া কাউন্সিল অব কানাডা’ নিরবছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই সব সংবাদমাধ্যম সুষ্ঠুভাবে তাদের কমিউনিটির মানুষের কাছে তাদের বক্তব্য সুষ্ঠুভাবে এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরতে পারলে একদিকে যেমন নিজ নিজ কমিউনিটির মানুষেরা সুন্দর জীবন যাপনে এগিয়ে যেতে পারবেন, ঠিক তেমনি পৃথিবীর কাছে স¤প্রীতি ও সৌহার্দের দেশ হিসেবে কানাডার যে পরিচিতি আছে, সেটা আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি সরকারকে আহবান জানান ‘ন্যাশনাল এথনিক এন্ড মিডিয়া কাউন্সিল অব কানাডা’র পাশে থাকার জন্য এবং করোনা পরবর্তী সময়ে আর্থিক কারণে যে সব কমিউনিটি সংবাদমাধ্যম নাজুক অবস্থায় আছে, তাদের সহযোগিতা করার জন্য। থমাস এস সারাস বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য যে ১৫ জন সংবাদকর্মীকে সম্মানীত করা হয়, তাঁদের কাজের জন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে তাঁদের এই কাজের ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবার জন্য উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।