অনলাইন ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে না। এ বছরও যথা নিয়মে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য কমবে সিলেবাসের আকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্কুল খোলা সম্ভব হলে ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হবে পিইসি পরীক্ষা। তিনি বলেন, ‘যদি সেপ্টেম্বরে স্কুল খোলা সম্ভব না হয়, তা হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ উন্নীত করা হবে। তবে উভয় পরিকল্পনার জন্যই সংশোধিত সিলেবাস তৈরির কাজ করছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।’
গত সোমবার বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইরাব) আয়োজিত ‘করোনাকালে প্রাথমিক শিক্ষায় চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ও মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পিইসি পরীক্ষা বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের নেই। এ পরীক্ষা আরও যুগোপযোগী করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনের কাজ চলছে। যদি সেপ্টেম্বরে স্কুল খোলে তা হলে আমাদের এক ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আর এ সময়ে স্কুল খোলা সম্ভব না হলে ভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হবে। পরবর্তী ক্লাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঠ চিন্তা করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হচ্ছে। যেসব চ্যাপ্টারে বেশি গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কেজ রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সিলেবাস তৈরির নির্দেশনা আমরা দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিভিত্তিক মৌলিক সমতা অর্জনের বিষয় চিহ্নিত করে নতুন করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শিক্ষাবর্ষ শেষ করতে জোর দিচ্ছি।’
সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিকের ক্লাস রেডিওর মাধ্যমে প্রচার শুরু হবে। এই পাঠদান শুরু করতে পারলে আমরা ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যাব। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পাঁচ মিনিট ফোনে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে। আমরা এখন পরীক্ষা নিয়ে ভাবছি না, আমরা এখন শিক্ষার্থী পরের ক্লাসের জন্য প্রস্তুত কি না, তা মূল্যায়ন করব। এ জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হবে।’
মো. ফসিউল্লাহ জানান, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে রিকভারি প্ল্যান করছেন তারা। স্কুল খোলার পর কতটুকু সময় পাওয়া যাবে, তার আলোকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
তবে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘এই মহামারীর মধ্যে শিক্ষায় বৈষম্য বাড়ছে, টিভির ক্লাসের আকর্ষণ হারিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেটের ওপর করের বোঝা কেন আরোপ করা হলো? কোন অদৃশ্য কারণে এটা প্রত্যাহার করা হলো না? অবিলম্বে এটা প্রত্যাহারের দাবি করছি, নইলে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ রাখা সম্ভব না। অনলাইন ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ কীভাবে গড়ব?’
ইরাব সভাপতি মুসতাক আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন ইরাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাব্বির নেওয়াজ।