অনলাইন ডেস্ক : সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির নামে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এ বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো দাবিদার নেই। বাংলাদেশ ওই টাকার মালিকানা দাবি করে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তবে সিঙ্গাপুরের ব্যাংকে বাংলাদেশির নামে এত টাকা কোথা থেকে এলো তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান রহস্য। কোন সূত্র থেকে এত টাকা তার নামে ব্যাংকে জমা হলো তা নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। টাকার উৎস জানতে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাঠে নেমেছে।
সূত্র জানায়, দেশের কোনো উৎস থেকে এত বেশি সংখ্যক টাকা নিয়ে যাওয়া সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সবারই। আর যদি বিদেশি কোনো সৎ উৎসের অর্থ হয়ে থাকে তাহলে সেই অ্যাকাউন্টের নমিনি থাকবে না কেন? তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে- এত বিশাল অংকের অর্থ আসলে কেন ওই ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে বা কারা এ অর্থ দিয়েছে? এই অর্থ আসলে কী উদ্দেশ্যে ব্যয় করার জন্য দেওয়া হয়েছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা সত্যি বিভিন্ন সময়ে দেশের অভ্যন্তর থেকে হুন্ডি, ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। কিন্তু সেই টাকার পরিমাণ এত বিশাল সংখ্যক নয়। সেটা কয়েক শ কোটি টাকা হতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই সেটা ৮ হাজার কোটি টাকার মতো পরিমাণ নয়। কারণ সুইস ব্যাংকগুলোতে এক বছরে সব বাংলাদেশির জমানো টাকার পরিমাণও ২০১৯ সালে ছিল ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সেখানে একজনের নামে এক অ্যাকাউন্টে ৮ হাজার কোটি টাকা বিস্ময়কর ঠেকেছে সবার কাছেই। এর পেছনে কোনো রহস্য আছে সন্দেহ অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদেরও।
এর আগে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির নামে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি টাকায় এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আশ্চর্যজনকভাবে এ বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো দাবিদারও নেই। বাংলাদেশ ওই টাকার মালিকানা দাবি করেছে।
আলোচ্য ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী তা প্রকাশ করতে রাজি হননি। তবে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেছেন, টিটি চুক্তি অনুযায়ী এখনই নাম প্রকাশ করা যাবে না। তবে গুঞ্জন রয়েছে, এ অ্যাকাউন্টের মালিকের বিরুদ্ধে ‘কোনো একটি মামলায়’ মৃত্যুদন্ড হয়েছে। তার স্ত্রী-সন্তানও আছেন, কিন্তু তারাও এ টাকার মালিকানা দাবি করতে যাচ্ছেন না।
খুরশীদ আলম খানের এ বক্তব্যের পর তোলপাড় চলছে বিভিন্ন মহলে। কার এ অর্থ তা নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসি হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এ টাকার মালিক। অবশ্য এ ধারণার পক্ষে এখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সাধারণত কেউ মারা গেলে তার নমিনিরা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের মালিক হন। বাংলাদেশের মতো সিঙ্গাপুরের ব্যাংকগুলোরও একই নিয়ম। কিন্তু সিঙ্গাপুরের ওই অ্যাকাউন্টের কোনো নমিনি নেই। আবার এ টাকাগুলো তার স্ত্রী বা ছেলে কেউ নিজেদের বলে দাবিও করছেন না।