অনলাইন ডেস্ক : সরকারের ছত্রছায়ায় সারাদেশে নারী নির্যাতনের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এটা শুধু কোনো নারীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে না, পুরো বাংলাদেশকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এই অবৈধ সরকার দেশকে যে ভয়াবহ অবস্থায় নিয়ে গেছে তাতে দেশের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
তারা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছে। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যদি সরকার না যায় তাহলে এই দেশের জনগণ জেগে উঠবে, তাদেরকে চলে যেতে বাধ্য করবে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনাসহ সারাদেশে সংঘটিত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিচারের দাবিতে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এসব কথা বলেন। এ সময় নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে দলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সারাদেশে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
মানববন্ধনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছন, নোয়াখালীতে যে ভয়াবহ রোমহর্ষক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এটা শুধু জাতিকে নয়, পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। শুধু এই নোয়াখালীর ঘটনা নয়, গত কয়েক মাসে নারী নির্যাতনের একটা মহোৎসব শুরু হয়েছে। এই নারীর শ্নীলতাহানি, নারী ওপরে নির্যাতন-এটা এখন এই অবৈধ সরকারের ছত্রছায়ায় নিয়মিত ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই সরকার ক্ষমতায় থাকার সব বৈধতা হারিয়েছে। তাদের আর ক্ষমতায় থাকার কোনো রকমের কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, এই ধর্ষণের দায় তারা এড়াতে পারেন না। তাহলে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এই ধর্ষণ, লুন্ঠন, নির্যাতন-নিপীড়নের পেছনে তাদের সরকারেরই মদদ রয়েছে। আজকে যে ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে, সিলেটের মতো পবিত্র জায়গায় তাতে আজকে আর চুপ করে বসে থাকার কোনো উপায় নেই।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অনেক অপকর্ম-অন্যায় শুনেছি-দেখেছি-পড়েছি কিন্তু এমসি কলেজে স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিয়ে হোস্টেলে যে পৈশাচিত জঘন্যতম অপরাধ করা হয়েছে তা কল্পনাও করতে পারি না। আওয়ামী লীগের সোনার ছেলেরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে একজন নারীকে উলঙ্গ করে একই রকমের ঘটনা ঘটিয়েছে তারাও আওয়ামী লীগের লোক। এই ঘটনায় প্রতিবাদের কোনো ভাষা নেই। শুধু ঘৃণা, ছিঃ, ধিক্কার। ক্ষমতাসীনরা শুধু ধর্ষণ নয়, সমাজকে দূষিত করে ফেলেছে, রাষ্ট্র হিসেবে অকার্যকর করেছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে শিশুরা, কলেজের ছাত্ররা, স্কুলের ছাত্রীরা রাস্তায় নেমেছে। যদি ক্ষমতাসীনরা দেশ চালাতে না পারে, মা-বোনের ইজ্জতের সম্মান দিতে না পারে, তাদেরকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে সোজাসুজি পদত্যাগ করুন। গণতন্ত্র হরণকারী, ধর্ষণকারী, নারী নির্যাতনকারী আর অর্থ-লুটপাটকারী এই সরকার যতক্ষণ পদত্যাগ না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিলে সন্ত্রাসীদের দমন করা সম্ভব। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের পরিচালনায় মানববন্ধনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এছাড়া এতে ঢাকা-৫ আসনের বিএনপি প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শিরিন সুলতানা, ইশতিয়াক আজিজ উলফাতসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।