সোনা কান্তি বড়ুয়া : – ধর্ম কে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে যেন ব্যবহার করা না হয়, ইহাই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের মত ও ইচ্ছা!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (১৯৭২) ভাষায়, “ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে; মুসলমান তার ধর্ম পালন করবে; খ্রিস্টান, বৌদ্ধ – যে যার ধর্ম পালন করবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, বাংলার মানুষ ধর্মের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চায় না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্মকে বাংলার বুকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলার মানুষ যে তাকে প্রত্যাঘাত করবে, এ আমি বিশ্বাস করি।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের অন্তরে যুগে যুগে থাকবে তাঁর কর্মে। ২১ বছর ধরে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দেয় মৌলবাদ আর সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প। উত্থান ঘটে পাকিস্তানবাদের। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের করা হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসিত। ভূলুন্ঠিত করা হয় ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগকে। এমানকি কোথাও সেদিন মিছিল হয়নি মুজিব হত্যার বিচার চাই! বঙ্গবন্ধুকে প্রটেক্ট করার জন্য গড়ে তোলা রক্ষীবাহিনী সেদিন মেজর ফারুকের একটি TANK র সামনেই আত্মসমর্পন করে!

কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না,! “পুজিছে গ্রন্থ (কোরআন) ভন্ডের দল! মুর্খরা সব শোনো / মানুষ এনেছে গ্রন্থ, / গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।” “মানুষেরে ঘৃণা করি / ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল / চুম্বিছে মরি মরি! “সকল প্রাণী সুখী হউক! জগৎ জুড়ে মানব সমাজে মানবাধিকারের অহিংসায় সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হবে!

আলোয় (অহিংসার) আঁধারে (হিংসার) সম্প্রীতির বাংলাদেশ! বাংলাদেশে চিটিংবাজ রাজনীতি কোরআন নিয়ে রামুর বৌদ্ধ বিহার ও কুমিল্লা দূর্গাপূজায় ধ্বংসযজ্ঞ করেছে কেন? অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মতে “ধর্মহীন বিজ্ঞান খোঁড়া, বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ।”
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালি জাতিসত্তার যেমন সর্বশ্রেষ্ঠ রূপকার, তেমনি শ্রেণী বৈষম্য, নির্যাতিত, নিপীড়িত, মজলুমের আহাজারি, অসাম্য, দারিদ্র্যতার নির্মম কষাঘাত থেকেই মহাকবি বড়ু চণ্ডীদাস বিশ্বমানবতার বাণী সুধা ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই!” বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মাঝে গভীর ছিল। ’- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় লিখলেন –
“মানুষেরে ঘৃণা করি
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল
চুম্বিছে মরি মরি!
ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর
করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই
মানুষেরে মেরে।
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মুর্খরা সব শোনো
মানুষ এনেছে গ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ
কোনো।
আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর, বিশ্বের সম্পদ,
আমাদেরি এরা পিতা পিতামহ,
এই আমাদের মাঝে!”

প্রসঙ্গত: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা ‘সওয়াব’ এর আশায় জোর করে মুসলমান করেছে হিন্দুদের, না হলে মৃত্যু। “পিস কমিটির ইচ্ছানুযায়ী বিবাহযোগ্য নব মুসলিম কন্যাদের একটি অংশ পিস কমিটির অনুগত যুবকদের বাড়ীতে তুলে দেবার ব্যবস্থা করা হয় (মুনতাসীর মামুন, রাজাকারের মন, পৃষ্ঠা ৯১)।” ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের Text Book (Class Five / Pages 16 & 17) বলছে বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান অমুসলমান হয়ে জন্ম গ্রহন করা অপরাধ!

কোরআন নিয়ে মুসলমান রাজনীতি রামুর বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ করেছে ৯ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার বিচার এখনো শুরু হয়নি। তাই মুসলমান রাজনীতি বাংলাদেশে কুমিল্লায় দূর্গা পূজা পন্ড করার লক্ষ্যে হিন্দুদের ওপর সাম্প্রদায?িক হামলা চাল্লাচ্ছে! পৃথিবীর সকল মানুষ মুসলমান বা একটা ধর্মের মানুষ হলে কি সকল সমস্যার সমাধান হবে? বাংলাদেশে রাজনীতি কোরআন নিয়ে হিন্দুদের, ধর্মে হস্তক্ষেপ করেছে’ গত ১৩।১০।২০২১ ইং তারিখে! কুমিল্লায় কোরান অবমাননার রাজনীতি গুজব ছড়িয়ে হিন্দুদের উপর চলছে ভয়াবহ সাম্প্রতিক হামলা। কোরআন নিয়ে রামুর বৌদ্ধ বিহার ও কুমিল্লা দূর্গাপূজায় ধ্বংসযজ্ঞ এই বিষয়টার মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত!

কোরআন যেন মুসলমান রাজনীতির হাতিয়ার না হয়! বাংলাদেশে কোরান অবমাননার গুজব নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ নির্যাতন! কুমিল্লায় কোরান অবমাননার গুজব ছড়িয়ে হিন্দুদের উপর চলছে ভয়া বহ সাম্প্রতিক হামলা। এই পদ্ধতি বদলানোর কি উপায় নাই? বৌদ্ধ ও হিন্দুদের কান্না বাংলাদেশে এখনও থামেনি! বাহাত্তরের সংবিধান এবং রাষ্ঠ্রধর্মের ট্রাজেডি! রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বাংলাদেশের কিছু লোকের জানোয়ারের মতো হিংস্রতা রয়েছে! কোরান অবমাননার গুজব ছড়িয়ে ফেইসবুকে কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে রামুর বৌদ্ধ বিহার ভাঙার মহোৎসব কেন?

গত ১৩।১০।২০২১ ইং তারিখে কুমিল্লা সদর থানার দুর্গাপূজায় ইসলাম ধর্মের পবিত্র কোরআন শরীফকে অবমাননা বিষয়কে কেন্দ্র করিয়া উল্লেখিত অজ্ঞাত নামা ১০০ থেকে ২৫০ জন লোক তাহাদের সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের পাশে আসে তখন আসামিদের হাতে থাকা ধারা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অসৎ উদ্দেশে মিলিত হইয়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে দুর্গামূর্তি সহ আরো একটি মূর্তি ভাঙচুর করে। এক নম্বর সাক্ষী সনজু সবকর বাধা দিলে এক নম্বর সাক্ষীকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি-লাথি মারে। পরে দুই নম্বর সাক্ষী পলাশ আচার্য এগিয়ে আসলে আসামিরা তাহার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। দুরগা মন্দিরের ভিতরে থাকা প্রায় ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়, এক নম্বর সাক্ষীর পকেট হইতে ৫০০০০/- টাকা নিয়ে যায় দুর্গা প্রতিমার ব্যবহৃত তিন ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার মূল্য অনুমান এক লক্ষ আশি হাজার টাকা চুরি যাওয়া মালের মূল্য অনুমান ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। অন্যান্য জিনিসপত্র আনুমানিক ২ লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধন করে।

রাত অনুমান ৮টা ত্রিশ ঘটিকার সময় গত ১৩।১০।২০২১ ইং তারিখে মৌল্ভিবাজার জেলার – কমলগঞ্জ থানাধিন সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের ভিতরে কিছু দুষ্কৃতিকারী ১) আব্দুল করিম (৩৬) পিতা-মৃত লোকমান মিয়া, ২) শামীম মিয়া (২৪) পিতা মৃত মাসুক মিয়া, ৩) আলামিন (১৮) পিতা আবদুল্লা, ৪) রাশিদ মিয়া(২৩) পিতা রশিদ মিয়া ৫) আবু আহমেদ চৌধুরী পিতা আহমেদ চৌধুরী ৬) আলমগীর মিয়া (১৮) পিতা দুরুদ মিয়া, ৭) রকিব মিয়া (২৫), ৮) লিপন মিয়া (২০) পিতা আজাদ মিয়া, ৯) ওহিদ মিয়া, ১০) হেকিম মিয়া (২৫) পিতাঃ মৃত কনা মিয়া, ১১) আবুল হোসাইন (২৬) সহ আরো অজ্ঞাত নামা ২০০ থেকে ২৫০ জন আসামি দুর্গা মন্দিরে অনধিকার প্রবেশ করে হিন্দুদের উপাসনালয় অপবিত্র করে। পূজা কমিটির সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র কর বাদী হয়ে মামলা করে অভিযোগ করেন যে আসামিরা অত্যন্ত অত্যাচারী খারাপ প্রকৃতির লোক।

অভিযোগকারী গোবিন্দচন্দ্র বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচকে বলেন, “আমাদের এই দুর্দিনে পাশে কেউ সাহায্য করতে আসে নাই” কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসলে আসামিরা ছিন্নভিন্ন হয়ে চলে যায়, তিনি আরো বলেন “বার বার আমরা সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের শিকার হচ্ছি” কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইন চার্জ মোঃ এয়ারদৌস হাসান কে জিজ্ঞাশা করলে তিনি বলেন মামলা রেকড করা হয়েছে, মামলা নং ১১ তারিখ ঃ ১৫।১০।২০২১ ধারাঃ ১৪৩/ ৪৪৮/ ৪৪৭/ ৩২৩/ ২০৫/ ৩৭৯/ ৩৮০/ ৫০৬(৪) দণ্ডবিধি। বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ এহেন সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা করছেন। অনতি বিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এবং ক্ষতিপূরণের দাবী জানাচ্ছে।

দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ! EVERY MONTH AGAIN AND AGAIN POLITICAL ISLAM’s MENTAL DISEASE OF কোরান অবমাননার গুজব! বেঈমান মুসলমানগণ কোরআন নিয়ে রামুর বৌদ্ধ বিহারে ২০১২ সালে ২৯শে সেপ্টেম্বর ধ্বংসযজ্ঞ ট্রাজেডি কেন? ২০১২ সালে ২৯ শে সেপ্টেম্বর ভয়াল কালো রাতে জামাত ও মুসলমান মৌলবাদীরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে রামু মুসলমান ফেইসবুকে কোরাণের উপর পদচিহ্ন রচনা করল বৌদ্ধবিহার বুদ্ধমন্দির ও বৌদ্ধ বাড়ি ধ্বংস করতে এবং কক্সবাজারের রামুসহ সদর, উখিয়া ও টেকনাফের বৌদ্ধমন্দিরে সাম্প্রদায়িক হামলা বৌদ্ধ বাংলা কেঁপে উঠেছিল!

ধর্মান্ধ মুসলমানগণ বৌদ্ধ বিহার বুদ্ধমন্দির ও বৌদ্ধ বাড়ি ধ্বংস করতে ফেইসবুকে কোরাণের উপর পদচিহ্ন রচনা করল বৌদ্ধ নির্যাতন ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য! নাদিয়া সুলতানা পুরবী প্রসঙ্গ কথন! ইসলাম ধর্মে অমুসলিমরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব অথচ বিশ্বায়ণের একুশ শতকে গৌতম বুদ্ধের বানী আরও বেশি প্রাসঙ্গিক! লিখেছেন-নাদিয়া সুলতানা পুরবী! “বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি, ধম্মং শরনং গচ্ছামি, সংঘং শরণং গচ্ছামি। “গৌতম বুদ্ধ প্রার্থণা করেছেন— “সর্ব্বে সন্তা সুখিতা ভবন্তু, সর্ব্বে সন্তু নিরাময় (বিশ্বের সকল প্রাণী সুখী হোক, নিরাময়ে থাকুক)”। গৌতুম বুদ্ধের এ প্রাথর্ণায় শুধু বৌদ্ধদের সুখ কামনা করা হয়নি, সকল প্রাণী বলতে কীটপতঙ্গ থেকে ধর্ষক ও অসভ্য মানুষ জবাই করা মুমিন মুসলমানও রয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের বাণী:
১। আত্মনির্ভরশীল হও। আত্মপ্রত্যয়ী হও, আত্মশরণই শ্রেষ্ঠ শরণ।
২। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ কর। তারপর অন্যকে অনুশাসন কর। নিজে নিয়ন্ত্রিত হলে অন্যকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
৩। প্রাজ্ঞ ব্যক্তি কখনো নিন্দা বা প্রশংসায় প্রভাবিত হয় না।
৪। চিন্তার প্রতিফলন ঘটে স্বভাব বা প্রকৃতিতে। যদি কেউ মন্দ অভিপ্রায় নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে দুঃখ তাকে অনুগমন করে। আর যদি কেউ সুচিন্তা নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে সুখ তাকে ছায়ার মত অনুসরণ করে।
৫। কাউকে কটু কথা বলবে না। কারণ সেও কটু প্রতুত্তর দিতে পারে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় তোমার জন্য কষ্ট দায়ক হবে। দন্ডের প্রতিদন্ড তোমাকে স্পর্শ করবে।
৬। মুক্তির জন্য ইশ্বর বা পরনির্ভরশীল না হও এবং আত্মনির্ভরশীল হও।
বুদ্ধের এই বাণীগুলো পৃথিবীর যে কোনো জাতী, ধর্ম, সম্প্রাদায়ভুক্ত মানুষের জন্য কি প্রযোজ্য নয়? আমি বৌদ্ধ ধর্ম পালন করি না, সেজন্য গৌতম বুদ্ধের এই অমীয় বাণীগুলো গ্রহণ করতে সমস্যা থাকবে কেন? যে কোনো ধর্মের বাণী যদি মানুষের কল্যাণকর হয় তো সেটা গ্রহণ করুন এবং যা ক্ষতিকর তা বর্জন করুন। কিন্তু ধর্মের নীতি হল কল্যাণকর হোক অথবা কষতিকারক হোক তা নির্দ্বিধায় গ্রহণ করতে হবে এবং অন্য ধর্ম সে যতই ভাল বিষয় থাকুক তবুও তা ঘৃণা করতে হবে, এটাই কি ধর্মের নীতি হওয়া উচিৎ? ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে অমুসলিমরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব, তা-ই যদি হয় তবে গৌতম বুদ্ধ এই বাণীগুলো লিখলো কিভাবে এবং বিশ্বে মোট জনসংখ্যায় দ্বিতীয়তম (Second largest Religious Community in the World) ধর্মালম্বী হতে পারল কিভাবে?

“বাংলাদেশের অপাপবিদ্ধ শান্তিকামী বৌদ্ধদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করতে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বাংলাদেশে মুসলমান লেখকগণ গৌতমবুদ্ধকে ব্যঙ্গরুপদানে অত্যন্ত নোংরা ও কুরুচিপূর্ণতথ্য বিভ্রাট ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই লিখেছেন! এই বিষয়টার মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত! মূলের (TRIPATAKA & Buddhist Text) সাথে মিল না রেখে- মুসলমান লেখকগণ তাদের ইচ্ছে মতো – গ্রন্থটির অভ্যান্তরের বেশ কিছু চিত্র দেখা মাত্রই যেকোনো বৌদ্ধ ধর্মবিশ্বাসীর মনে বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মকে নিয়ে বিরূপ ও বিকৃত ধারণা উদিত হতে বাধ্য! এই যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরা! শিশু কিশোর বা অবৌদ্ধ পাঠকের কথা বাদই দিলাম! মুসলমান লেখকগণ যৌনতায় ভরপুর কুরুচি ও অমার্জিত ছবি/চিত্র সম্পাদনা করেÑ বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মকে কাম সূত্রের ছায়াপটে উপস্থাপন করেছেন! বাংলাদেশে আক্রমণের শিকার বৌদ্ধধর্ম কেন? যৌনতায় ভরপুর কুরুচি ও অমার্জিত ছবি/চিত্র সম্পাদনা করে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই বই লিখেছেন! রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ৮ বছর শেষে ৯ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার বিচার এখনো শুরু না করে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই লিখেছেন!

বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ মানে বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রতিবাদ জানাই অবিলম্বে বিচার দাবি জানাচ্ছি, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা বাংলা জমিনে যেন আর না ঘটে! ফুটনোট: সংসদ সচিবালয় কোয়ার্টার থেকে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক? খাগড়াছড়ির আদিবাসী নারী নিবেদিতা রোয়াজা ধর্মান্তরিত হয়ে মামুন মিল্লাত নামের একজনকে বিয়ে করেন? লাশ উদ্ধার করে গতকাল বিকালে ময়না এবং বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে সংকুচিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামাগুলো এমন হয় জানা ছিলো না? রীতিমতো বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্ট্যাম্পে ডকুমেন্টেশন করে একটা ধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে আরেকটি ধর্মকে মহিমান্বিত করা, এবং ভিন্নমতকে সাংঘাতিকভাবে রুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট কি জংগী শফীর থেকে দিক্ষা নিয়েছেন নাকি?

কেন ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন পাহাড়ীগণ ও বৌদ্ চাকমারা? এখনকার বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে হাজার হাজার চাকমা বৌদ্ধ পাহাড়ীদের ভারতে এসেছেন মূলত দুটো কারণে। এক, ১৯৬২তে কমিশন করা কাপ্তাই লেকের জন্য ভিটেছাড়া হয়ে আর দুই, ১৯৭২-য়ে শান্তিবাহিনী গঠিত হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচতে। গবেষকরা বলেন, কাপ্তাই লেকের কারণে ৬৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, যার মধ্যে ২২ হাজার হেক্টরই ছিল কৃষিজমি। বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন প্রায় ১ লক্ষ উপজাতীয়, যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ছিলেন চাকমা।
% (Percentage) of Total Population
Year Muslim Hindu Buddhist Christian Others Total
1941 70.3 28.3 – 0.1 1.3 100
1951 75.7 22.0 0.7 0.3 1.3 100
1961 80.4 18.5 0.7 0.3 0.1 100
1974 85.4 13.5 0.6 0.3 0.2 100
1981 86.7 12.1 0.6 0.3 0.3 100
1991 87.4 11.5 – 1.1 0.3 100
2001 90.0 08.0 0.6 1.1 0.3 100

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর আত্মশক্তি কবিতায় লিখলেন-
“এসো বিদ্রোহী মিথ্যা-সূদন আত্মশক্তি বুদ্ধ বীর!
আনো উলঙ্গ সত্যকৃপাণ, বিজলি-ঝলক ন্যায়-অসির।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!