অনলাইন ডেস্ক : ‘পেট্রোলিং পয়েন্টে (পিপি)ভারতীয় সেনার নজরদারিতে কোনো পরিবর্তন করা হবে না, কোনো শক্তি সেনার এই নজরদারি রুখতে পারবে না।’ ভারতীয় সংসদে এমটাই জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তবে, বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন।

মে মাসে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চীন উত্তেজনা দেখা দেয়। তারও এক মাস আগে থেকে প্যাংগংয়ের পিপি ৪-৮ পর্যন্ত এলাকায় ভারতীয় সেনার নজরদারি বন্ধ করে দেয় লাল ফৌজ।

শুধু প্যাংগংয়েই নয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখার কাছে দেপসাংয়ে অবস্থিত আরো পাঁচটি পেট্রোলিং পয়েন্টেও ভারতীয় সেনার নজরদারি রুখে দিয়েছে চীনা বাহিনী।

এই খবর নিশ্চিত করে চলতি সপ্তাহের প্রথমদিকে সানডে এক্সপ্রেসকে ভারত সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পিপি ১০,১১,১১(এ), ১২ ও ১৩-তে ভারতীয় বাহিনীর টহলদারি সম্পূর্ণ বন্ধ। চীনা সেনার ক্রমাগত বাঁধাতেই তা বন্ধ রয়েছে।

একদিকে সিয়াচেন গ্লেসিয়ার, অন্যদিকে চীনের নিয়ন্ত্রণে থাকা আকসাই চিন—এই দুইয়ের মাঝে রয়েছে দেপসাং ভ্যালি। ভারতের সাব সেক্টর নর্থ তথা এসএসএনের মধ্যে পড়ে দেপসাং। এই এলাকার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল একদিকে উচ্চতম সিয়াচেনের সীমান্তের নাগাল পাওয়া যাবে, অন্যদিকে আকসাই চীন লাগোয়া দৌলত বেগ ওল্ডি হয়ে ভারতে ঢোকার রাস্তা সহজ।

ভারতের কৌশলগত অঞ্চল দৌলত বেগ ওল্ডির পূর্বপ্রান্তে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছেই বটলনেকে এই পাঁচ পিপি অবস্থিত। এই অঞ্চল ওয়াই জংশন বলেও পরিচিত। ভারতীয় সেনাদের দেপসাংয়ের পাঁচ পিপি-তে টহলদারি বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ এ সীমানায় অবস্থিত এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে লাল ফৌজের হাতে।

উত্তরে রাকি নালা থেকে পেট্রলিং পয়েন্ট ১০ ও দক্ষিণপূর্বে জীবন নালা অর্থাৎ পেট্রলিং পয়েন্ট ১৩ অবধি রাস্তাতে নজরদারি চালাতে চায় চীনের বাহিনী। তাই এই অংশের দখল ভারতীয় সেনার কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এদিকে দেপসাং ভ্যালি নিয়ে ভারতীয় সেনার আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ ইতোমধ্যেই দেপসাং সংলগ্ন এলাকায় সেনার সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছে চীন। তাদের রাডার পজিশন ধরা পড়েছে, রাইফেল ডিভিশন তৈরি হচ্ছে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, পেট্রোলিং পয়েন্টগুলোতে চীনা বাহিনী অবস্থান না করলেও ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে দেখলেই তারা এসে বাধা দেয়। ভারতীয় বাহিনী ইচ্ছে করলেই এই অংশে টহল দিতে পারে, তবে সেই সময় যে দুই দেশের সেনার মধ্যে ফের সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

দেপসাংয়ের ওই এলাকায় কাজ করেছেন এমনই এক প্রাক্তন সেনা কমান্ডারের মতে, ওয়াই জংশনে লাল ফৌজের উপস্থিতি ছাড়া বটলনেকে ভারতীয় সেনাদের আটকানোর ক্ষমতা চীনা সেনাবাহিনীর নেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস