Home আন্তর্জাতিক শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ না পর্যন্ত বাসভবন ছাড়বেন না বিক্ষোকারীরা

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ না পর্যন্ত বাসভবন ছাড়বেন না বিক্ষোকারীরা

অনলাইন ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় গত কয়েকমাস ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শনিবার (৯ জুলাই) বিপজ্জনক মোড় নেয়। এদিন হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা জোর করে কলম্বোতে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনে ঢুকে পড়ে। এর আগে গোটাবায়াকে বাসভবন থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট এখন কোথায় অবস্থান করছেন তা স্পষ্ট নয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেও বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়ে।

বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট বাসভবনের ভেতর বিভিন্ন কক্ষে এবং করিডোরে শত শত মানুষ। বাইরের উদ্যানে এবং ভবনের ছাদেও বহু বিক্ষোভকারী অবস্থান করছে। তাদের অনেকের হাতে শ্রীলংকার পতাকা।

একটি ফুটেজে দেখা গেছে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী ভবনের চত্বরের সুইমিং পুলে নেমে সাঁতার কাটছে, ঝাপাঝাপি করছে। জানা গেছে, কিছুটা দূরে প্রেসিডেন্টের অফিস ভবনের মধ্যেও একদল বিক্ষোভকারী ঢুকে পড়ে।

এছাড়া গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর চালায় তার গাড়িতে। এদিকে সর্বশেষ বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা তাদের বাসভবন ছাড়বেন না।

যদিও গোটাবায়া আগামী ১৩ জুলাই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত গোটাবায়াকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি, তিনি কোনো বিবৃতিও দেননি। এছাড়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেও পদত্যাগ করতে রাজি হয়েছেন।

পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানালেও প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে এখন কোথায় আছেন তা পরিষ্কার নয়। কলম্বো থেকে বিবিসির একজন সংবাদদাতা শনিবার জানান, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে এখন কোথায় আছেন তা নিয়ে কেউই কিছু জানেনা।

সংবাদদাতা বলেন, গুজব শোনা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট এখন কলম্বোর বিমানবন্দরে এবং তিনি যত দ্রুত সম্ভব দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে দেশটির সামরিক বাহিনী জনগণকে শান্তি বজায় রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য আবেদন জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারী, ফিওনা সিরমানা, যিনি রাষ্ট্রপতির বাড়িতে বিক্ষোভ করছিলেন, তিনি বলেছেন , “এবার প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীকে হটিয়ে শ্রীলঙ্কায় একটি নতুন যুগের সূচনার” সময় এসেছে।

তিনি রয়টার্সকে বলেন, আমার খুব, খুব দুঃখ হচ্ছে যে তারা আগে পিছু হটেনি। তারা আগে সরে গেলে এতো ধ্বংসযজ্ঞ হতো না।

শনিবারের বিক্ষোভে বহু লোক আহত হয়েছেন এবং কলম্বোর প্রধান হাসপাতালের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন যে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কা ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতিতে জর্জরিত এবং ৭০ বছরের ইতিহাসে দেশটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। যার কারণে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধ আমদানি করতে লড়াই করতে হচ্ছে তাদের।

দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা শেষ হয়ে গেছে এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের জন্য পেট্রোল এবং ডিজেল বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হয়েছে, যার ফলে জ্বালানির জন্য দিনব্যাপী দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

Exit mobile version