অনলাইন ডেস্ক : ঈদ ছুটি শেষ। তাই কর্মস্থল রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। রোববার সকাল থেকে ঢাকামুখীয় যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে শিবচরে বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে। যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকায় ঘাটের প্রতিটি সংযোগ সড়কে আটকা পড়েছে বেশ কিছু ছোট-বড় যানবাহন।
বিআইডব্লিউটিসি ঘাট সূত্র জানায়, ঈদের দুদিন আগে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে দুটি ফেরিতে যাত্রীদের প্রচন্ড চাপ, গরম ও হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে ৫ জন মারা যায়। এরপরেই ফেরিতে যাত্রীসেবায় গতি আনা হয়। এই নৌপথে বর্তমানে ১৮টি মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী ১৩ থেকে ১৫টি চালু রাখা হয়। রোববার ভোর থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকায় যানবাহনের তুলনায় যাত্রীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। ঘাট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যরা।
জানতে চাইলে রোববার বেলা সাড়ে ১০টায় বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বহরে ১৮টি ফেরি আছে। সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় এখন পর্যন্ত ১৩টি চলাচল করছে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরও বাড়লে প্রয়োজনে সব কয়টি ফেরি চালানো হবে।’
রোববার সকালে সরেজমিনে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মাহিন্দ্র, সিএনজি, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলে করে বাংলাবাজার ঘাটে আসছে যাত্রীরা। ঘাটের প্রতিটি পন্টুন ঘাটের চারিপাশে যাত্রীদের ভিড়। চারটি ঘাটের সংযোগ সড়কগুলোয় ছোট গাড়িতে ভরা। শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পারাপার হচ্ছে যাত্রীরা। বেশির ভাগ যাত্রীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। অনেকের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই।
খুলনা থেকে আসা যাত্রী ইতি আক্তার বলেন, আমি চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করি। খুলনা থেকে চট্টগ্রামের বাস চলে না। পরিবহন না চলাচল করায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ভেঙ্গে ভেঙ্গে মাহিন্দ্র আর মাইক্রোতে বেশি ভাড়া দিয়ে আসতে হইছে। তবে ফেরিঘাটে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নাই। এখানে এসে সাথে সাথেই এনায়েতপুরী ফেরিতে উঠতে পেরেছি। তবে ফেরিতে অনেক ভিড়।’
গোপালগঞ্জ থেকে আসা ঢাকামুখী যাত্রী কবির হোসেন বলেন, ‘কাল (সোমবার) থেকে কারাখানা খোলা। ঢাকায় আকজের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে এখন আবার কামে ফিরতাছি।’
বরিশাল থেকে আসা ইমন বলেন, ‘দূরপারপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঘাটে আসতে আমাদের চারবার গাড়ি পাল্টাইতে হইছে। একে তো দুর্ভোগ। পরে আছে বেকাতেড়া ভাড়া। এসব করোনা প্রতিরোধ নয়, সাধারণ যাত্রীগো ভোগান্তি।’
জানতে চাইলে বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিবর্দশক (টিআই) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদ ছুটি শেষে যাত্রীরা কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকামুখী হচ্ছে। সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। ফেরিতে যানবাহনের তুলনায় যাত্রীই বেশি। ঘাট যানবাহন ও যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে উপজেলার প্রশাসন, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ঘাটের সংযোগ সড়কে যে ছোটগাড়িগুলো আছে এগুলো বেশির ভাগই ব্যক্তিগত। ফেরি ঘাটে আসা মাত্রই গাড়িগুলো আমরা ফেরিতে তুলে দিচ্ছি।’