হাসান আমিন : কানাডার পার্লামেন্টের একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সে ভিডিওতে দেখা গেছে, অধিবেশনে কোন গুরুগম্ভীর আলোচনা চলছিল না। চলছিল না তর্ক-বিতর্ক। বরং দেশটির পুরুষ আইনপ্রণেতারা গোলাপি রঙের হাইহিল জুতা হাঁটছিলেন, হেলেদুলে নাচছিলেন। খবর: হিন্দুস্তান টাইমস ও এনডিটিভির।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির প্রশংসা করেছেন অনেকেই। অনেকে আবার সমালোচনাও করেছেন। কিন্তু সব ছাপিয়ে একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। তা হলো, কেন কানাডার পুরুষ আইনপ্রণেতারা গোলাপি রঙের হাইহিল পরলেন? তাও আবার পার্লামেন্টের ভেতরে!

হঠাৎ কি এমন হল যে একাধারে সবাই গোলাপি হাইহিল জুতা পরে সংসদে হাজিরা দিতে শুরু করলেন? বেশি দিন চাপা থাকেনি আসল কারণটি। কানাডার গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, একটি বিশেষ কারণেই এমন জুতো পরতে আগ্রহী হয়েছেন সবাই। তাই ঘটনাটি আকস্মিক, তা বলা যায় না।
খবরে বলা হয়েছে, মজা করার জন্য আইনপ্রণেতারা এ কাজ করেননি। বরং গোলাপি রঙের হাইহিল পরে তারা সমাজকে একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর সেই বার্তা হলো, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করুন। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে তাদের এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ।

ব্যতিক্রম এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘হোপ ইন হাইহিলস’। এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক অন্টারিও শহরে অবস্থিত নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র হালটন ওমেনস প্লেস। চার বছর ধরে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি লৈঙ্গিক সহিংসতার প্রতিরোধের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হয় এর মাধ্যমে।

এ বিষয়ে কানাডার পরিবহনমন্ত্রী ওমর আলঘাবরা টুইটে বলেন, আমাদের সমাজে এখনো নারীর প্রতি সহিংসতা চলছে। ‘হোপ ইন হাইহিলস’ এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর একটি উদ্যোগ। এতে পুরুষদের মধ্যে সহিংসতাবিরোধী সচেতনতা বাড়বে। এ জন্যই আমরা পার্লামেন্টে গোলাপি হাইহিল পরেছিলাম।

হ্যামিলটন ওমেনস প্লেসের তরফেও জানানো হয়, সে কথা। বলা হয়, লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তুলতে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে শুধু এটুকুই নয়,ছেলে ও পুুরুষদেরও এই আন্দোলনের অংশ হতে হবে। এমনটাই মনে করে হ্যামিলটন ওমেনস প্লেস। তাই পুরুষ সাংসদদের গোলাপি হাইহিল জুতা পরানোর এই নতুন উদ্যোগ।