অনলাইন ডেস্ক : তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মক্কার কাবা শরিফে উপস্থিত লাখ লাখ হজযাত্রীদের অনেকেই ছাতার আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আবার এসেছেন ছাতা ছাড়াও।
তাদের সবার গন্তব্য মক্কা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের শহর মিনা। সবার মুখে ধ্বনিত হচ্ছে একটি বাক্য— লাব্বাইক আলা হুমা লাব্বাইক।
আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে এই মিনার ময়দানেই নিজের শেষ খুৎবা দিয়েছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী (সা.)। হজের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতাও শুরু হয় মিনা থেকেই।
বিদেশি হজযাত্রীদের জন্য করোনা মহামারির ২ বছর পর সীমান্ত খুলে দেওয়া সৌদি সরকার অবশ্য বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় এবার হাজিদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সৌদি দৈনিক আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছর হজযাত্রীদের জন্য ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদিনায় ২৩টি হাসাপাতাল ও ১৪৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তাছাড়া মিনা শহরেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪টি হাসপাতাল ও ২৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ১ হাজারেরও বেশি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে, আর এসব শয্যার মধ্যে ২০০টিরও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের জন্য।
মক্কা, মদিনা ও মিনায় হজযাত্রীদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে নিয়োগ করা হয়েছে হাজার হাজার ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী। কেবল মিনাতেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে।
সরকারের হজ বিষয়ক ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট হজযাত্রীরাও। মিশর থেকে হজ করতে আসা ৬৫ বছর বয়সী নারী ফাতেন আবদেল মোনেইম সৌদির দৈনিক আরব নিউজকে বলেন, ‘এখানে সবকিছু মোটামুটি ভালোভাবেই চলছে। আমি এর মধ্যেই আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখেছি— হজযাত্রীরা সব নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনে চলছেন।’
মিশর থেকে আসা অপর হজযাত্রী নাইমা মোহসেন (৪২) জানিয়েছেন, হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবের বর্তমান আবহাওয়া একটি বড় সমস্যা। আরব নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে এ পর্যন্ত যত ভালো ঘটনা ঘটেছে সেসবের মধ্যে সবচেয়ে সেরাটি হলো—হজ করতে এখানে আসতে পার। বিশ্রাম নিয়ে সময় নষ্ট করতে আমার ইচ্ছে করছে না।’
‘এখন পর্যন্ত আমার একমাত্র সমস্যা হলো সৌদি আরবের আবহাওয়া। এখানে খুব গরম।’
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি প্রধান স্তম্ভের মধ্যে হজ অন্যতম। করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলিম সৌদি আরবে যেতেন হজ পালন করতে। মহামারির আগের বছর দেশটিতে হজ পালন করতে গিয়েছিলেন ২৫ লাখ হজযাত্রী।
মহামারির ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কারণে ২০২০ সালে বিদেশি হজযাত্রীদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে সৌদি সরকার, দেশের নাগরিকদেরও হজ করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। বিশেষ অনুমতিতে ওই বছর মাত্র কয়েক হাজার মানুষ হজ করেছিলেন।