Home অর্থনীতি লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

অনলাইন ডেস্ক : ভয়াবহ বন্যা ও মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে লাগামহীন রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার। বেড়েছে চালের দাম। সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার ওপরে। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বাড়ছে ডিমের দাম।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এদিকে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দাম বৃদ্ধির প্রভাবও পড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। এমন পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী প্রশাসনের দায়সারা তদারকির কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব।

গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর হাতিরপুল, কমলাপুর, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি বাজার, ফকিরাপুল, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য মিলেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় দুই মাস ধরেই প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে বিভিন্ন প্রকার সবজির। এগুলো কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ধনিয়াপাতার দাম। কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে। শাকের বাজারেও রয়েছে বাড়তি দাম। শাকভেদে প্রতি মোড়ায় দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত আছে চাল, ডাল, তেল ও মসলার বাজার। এসব বাজারে কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি কেজি শসা (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর (আমদানি) ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, উস্তা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, মানভেদে ঝিঙা-ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন আকারভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ১১০ থেকে ১২০ টাকা। তবে কচুর ছড়া, কচুর লতি, কলা, কাঁচামরিচের দাম অপরিবর্তিত আছে। বর্তমানে কচুর ছড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, কটুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। প্রতিহালি কাঁচাকলা ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া আমদানিকৃত কাঁচামরিচ ১৮০ টাকা, দেশি কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ধনিয়াপাতা কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। দাম বেড়েছে শাকের বাজারে। এসব বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) লাল শাকের দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ টাকা, মুলা ও কলমি শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়াশাক ৪০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও ডাঁটাশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়, মিনিকেট চাল পুরনো ৫৫ টাকায়, বাসমতি চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, আতপ চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পোলাওর চাল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, গুঁটি চাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, পাইজাম চাল ৪৫ টাকা, আটাশ চাল ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজি দরে। রাজধানীতে আবারও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম। কিছুটা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি দামও। তবে কিছুটা নিম্নমুখী মাছের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মাছের দাম। অন্যদিকে অপরিবর্তিত আছে গরু, মহিষ, খাসি ও বকরির মাংসের দাম। এসব বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ১৫০ টাকায়, সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে। রোস্টের ছোট আকারের মুরগি প্রতি চার পিস ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে এসব বাজারে প্রতি কেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা, মলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, নদীর টেংরা (বড়) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি শিং ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কৈ মাছ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

দায়সারা তদারকিতে বাজারে অস্থিরতা : করোনাকালে রাজধানীসহ দেশব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না বলে মনে করছে ক্যাব, চট্টগ্রাম। সংগঠনটির অভিযোগ হলো- প্রশাসনের দায়সারা তদারকির কারণেই নিত্যপণ্যের বাজারে এই অস্থিরতা। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনটি এ কথা বলেছে।

Exit mobile version