তসলিমা হাসান : নতুন বাড়িতে ঢুকে রাজেশ্বরীর চোখে পড়ে এক্সক্লুসিভ ইনটিরিয়র, বড় বেডরুমের ভেতরেও রয়েছে ইউনিক ক্রিয়েটিভিটির ছোঁয়া। রুমের ভেতরে ওয়ালে ব্রাইট গ্রিন আর লাইট ব্লু, আর একদিকে হোয়াইট। চৌদ্দশ পঞ্চাশ স্কয়ার ফুটের থ্রি বেড রুমের সাথে তিনটা ওয়াসরুম। একটা ওয়াসরুম মাস্টার বেডরুমের সঙ্গে আ্যটাস্ট। মূলত শহুরে ডিজাইনের নগরজীবনই ছিল বাড়ির ক্যানভাসের মুখ্য বিষয়বস্তু।
রাজেশ্বরী হঠাৎ অরণ্যকে জিজ্ঞেস করলো, “এই বাড়ি তুমি কার জন্য বানালে?” অরণ্য চকিতে রাজেশ্বরীর দিকে মুগ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে লক্ষ্য করলো ওকে লাগছে যেন কিংবদন্তি শিল্পীর রঙিন ক্যানভাসে আঁকা রঙে, রেখায় বিন্যাসে এক অপূর্ব সুন্দরী নারী। অন্ধন শৈলিতে আধুনিকতার গন্ধ মোছেনি আজও অরণ্যের তুলি থেকে, তারা ভরা আকাশের নিচে মৃদু আলোয় যেন ছন্দময় ফিগার, উদ্দীপ্ত হাসি মুখ, ছড়াচ্ছে প্রভাতি আলোয় উদ্ভাসিত মৃদু অঙ্গের মোলায়েম আভা। চোখে এক স্বপ্নময় ইমেজ, অনুভুতি, গাঢ়ভাবে অবলোকন করা দিঘির পাড়ের ঝিম ধরে বসে থাকা এক শ্বেত শুভ্র সারসীর মতো, উত্তপ্ত করে মনের অলিগলি। সব বয়সেরই একটা সাজ আছে। ২৮ বছর বয়সের চেহারায় এমন জৌলুস থাকে, সেটাতো আকর্ষণেরই বিষয়। যা পড়ে তাই-ই মানায়। শ্যামলা, মেয়েলি হলুদ রঙে বেশি আকর্ষণ না থাকলেও আজ কিন্তু ও তাই পড়েছে, মিন্ট গ্রীন কালার অরণ্যের পছন্দ। রাজেশ্বরী ফ্যাশনের নীতি নিয়ম মেনে চলে। তবুও আজকে এই রংয়ে ভালই লাগছে।
উত্তরে অরণ্য বলে, “রাজেশ্বরী কুঞ্জ” আমিতো তোমার জন্যই বানিয়েছি। রাজেশ্বরী সব জেনেও না জানার ভান করে চুপ করে থাকে।
বিচিত্র দ্রব্যাদি সংগ্রহ করেছে বাড়ির জন্য অরণ্য। সবকিছু অবলোকন করে রাজেশ্বরী, দেয়াল জুড়ে নানা রংয়ের পেইনটিং, জানালাগুলো ফ্লোর থেকে ছাদ অবধি বিস্তৃত। দেয়ালে অনেকগুলো চিত্র একসঙ্গে ঝোলানো। বিস্তর স্পেস, হালকা মিনি চেয়ার, সংগীতের ডিস্ক এক পাশে। দৃষ্টি আটকে যায় ক্লফের কারুকাজ করা কেসে।
রাজেশ্বরী আলোয় ঝলমলে সবুজাভ এক উপবন। হৃদয় নিড়ানো শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে মেঘের মত ভাসে মনে, আবেগ দিয়ে কখনও বর্ণনা করার অবকাশ নেই। স্মৃতিতে প্রবল হয়ে আছে পেছনে ফেলে আসা দিনগুলো। জীবন এক অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে। চার পাশে ছড়ানো বর্ণে যেন মিশে আছে স্মৃতি, সংকট ও প্রত্যাশা। কখনো কখনো মাঝরাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে যায়। রাজন সেই চার মাস পূর্বে কোথায় চলে গিয়েছে ও জানে না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রাজনের হদিস মেলেনি। এসব নিয়েও এখনও ওর মনে কত প্রশ্ন। কিভাবে ও চলে যেতে পারলো, নাকি ওর মৃত্যু হয়েছে কিছুই জানে না রাজেশ্বরী।
অরণ্যের নতুন বাড়িতে ঢুকে চুপ করে দাঁড়িয়েছিল রাজেশ্বরী। অরণ্য প্রশ্ন করে ওকে, “তোমার বাড়ি পছন্দ হয়েছে, এ বাড়ি তোমার, আমি নাম দিয়েছি রাজেশ্বরী কুঞ্জ”। এ রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে রাজেশ্বরী জবাব দেয় না। ভেবে পায় না কি বলবে, কি করা উচিত। জীবনটাকে সহজ করে এখন আর ভাবতে পারে না। বিমূঢ় ভাব কাটিয়ে উঠতে পারে না। পুরানো ফ্ল্যাট ছেড়ে অরণ্য এ বাড়িতে উঠেছে, মনের মত করে সাজিয়েছে রাজেশ্বরীর জন্য। শীতের দুপুরে ঘামতে থাকে রাজেশ্বরী। দ্বিধাদ্বন্দ্বে ওর অন্তর ক্ষত-বিক্ষত হয়, কোনদিকে যাবে ও জানে না। অরণ্যর সংগে শলা-পরামর্শ করা যায় না, ও বন্ধু প্রিয়জন হলেও। রাজেশ্বরী আজও অপেক্ষা করছে রাজনের জন্য, যদি কোনদিন ফিরে আসে। এ সব ভাবতে ভাবতে সোফায় বসে দু’হাতে মুখ ঢাকে, ওহ মাই গড। সেদিন সেই ডিসেম্বরের ৪ তারিখ রাতে, অফিস থেকে না ফিরে রাজেশ্বরীকে না বলে কোথায় চলে গিয়েছিল রাজেশ্বরী আজও জানে না, বুঝতে পারে না। তারপর এই ৪ মাস হলো ফিরে আসেনি। ও ভাবে কেমন ধারার পুরুষ মানুষ, নিজের ভালোবাসার স্ত্রীকে ফেলে কেমন করে এ কাজ করতে পারলো। রাজেশ্বরী কি এতটাই তুচ্ছ। বিশ্বাস টলোমলো হয়ে যায় ভাবনায়। রাজনতো ওকেই ভালোবাসতো। অরণ্যওতো ওকেই ভালোবাসে, ও আজও বিয়েটা পর্যন্ত করেনি। কারণে অকারণে রাজেশ্বরীকে এই ৪ মাসে কতটা দেখাশুনা করে রেখেছে, যেন ভালোবাসার চাদর জড়িয়ে রেখেছে মনের গহীনে। তবুও রাজেশ্বরী ওকে কি ভালোবাসাতে পেরেছে। দিনরাত শুধু ভাবে রাজনকে, আত্মমর্যাদা যে ওর ভালোবাসার শক্তি।
অরণ্য জোর করে আঁকড়ে ধরে আছে রাজেশ্বরীকে ওর ভালোবাসা পাবার জন্য, চেষ্টার ত্রæটি নেই। রাজেশ্বরী একা। এখন ওর মানসিক, সামাজিক, নৈতিক এই সব ব্যাপার অসহায়তা সূ² আতঙ্ক সব নিয়ে ভাবে অরণ্য। টেনশন, ইমোশন দুঃখ কষ্টের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার শক্তি অনেক কমেছে রাজেশ্বরীর। ওর স্বামীকে ভুলতে পারে না রাজেশ্বরী। মানুষটা দায়িত্ব জ্ঞানহীন। নিজের মনে যন্ত্রণা অনুভব করে, নিজের বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে পারে না।
অরণ্যের বয়স তখন ২৫, রাজেশ্বরী রাজনকে বিয়ে করার পরে প্যারিস পাড়ি দেয় উচ্চ ডিগ্রির জন্য। ও শিল্পী, ওর বিমূর্ত চিত্ররচনা, চিত্রবুদ্ধি বিদেশের কলম হলে পরিচিতি পেয়েছিল। বিষয় বন্ধনে আবদ্ধ অর্থাৎ বিমূর্ত কলা নয়, মূলত শহুরে নগর জীবনই ওর ক্যানভাসে মূখ্য বিষয়বস্তু। অঙ্কন শৈলীতে আধুনিকতার বিদেশী গন্ধ ছিল এই শিল্পীর; তখনও মোছেনি ওর তুলি থেকে, কারণ বিদেশী শৈলীর শিক্ষা পেয়েছিল স্বয়ং ফার্ণন্দো লেনারের কাছে থেকে। অবশ্য ওর আর এক শিক্ষক ছিল আন্দ্রে লোতে।
অরণ্যের সাথে রাজনের কোনদিনই বন্ধুত্ব ছিল না, শুধু চেনা জানা হয়েছিল। রাজেশ্বরী হঠাৎ বিয়ে করে ফেলেছ। এসব মনে করে ধারালো করাত যেন অরণ্যের বুকের ভেতর থেকে কেটে রক্ত বেরিয়ে আসে। কিন্তু রাজন হারিয়ে যাবার পরে রাজেশ্বরীর জীবন ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায়। স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নইতো মানুষের জীবনের বাঁচার রসদ। স্বপ্নই মানুষকে জীবনের পথে এগিয়ে নেবার সাহস জোগায়। যাকে বলে স্বপ্নে বাঁচা।
অরণ্যের কাছে রাজেশ্বরীকে এক শ্বেত হংসীর লীলায়িত, রূপসী নারীর মতো মনে হয়। প্রবল আকর্ষণ ওর রাজেশ্বরীর প্রতি। ওর শরীর যেন ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠত্ব। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে ওর চোখে যেন মনে হয় আলাদা একটা বিশেষত্ব আছে। ভালোবাসার জন্য মানুষ তৃষ্ণার্ত থাকে। রাজেশ্বরীকে অরণ্য ভালোবাসে তীব্র মধুরভাবে। ভালোবাসা হচ্ছে আগুনের মতো, যাতে কোন পাপ স্পর্শ করে না। অরণ্যের বুকের ভেতরটা উদাস উদাস হয়ে থাকে। হতভাগ্য অরণ্য, নিষ্পাপ ওর ভালোবাসা, ওর গলার কাছে কান্না ঠেলে ঠেলে আসে। অরণ্যের নিঃশ্বাস দীর্ঘশ্বাস হয়ে যায়।
এদিকে রাজেশ্বরীর মনে রাজনের জন্য আসে ভয়ঙ্কর ভাবনা। ও কি বেঁচে আছে। নাকি মৃত্যু ওকে গ্রাস করেছে, ভাবতে পারে না আর ও, চোখের দৃষ্টির মধ্যে হতাশ ভাব।
তখন শেষ বিকেলের কাঁচা সোনা রোদ ঘোলাটে হতে শুরু করেছে, একটা মিঠে মিঠে শীত শীত হাওয়া দিচ্ছে। হাওয়াটা বেশ উপভোগ্য। জোর করে অরণ্য রাজেশ্বরীকে নদীর ধারে নিয়ে গেল। অরণ্য ওকে বোঝাতে চাইলো, জীবনটা কত মূল্যবান। রাজনতো ফিরে আসবে বলে মনে হয় না। কিন্তু রাজেশ্বরীর মনে হলো উচুঁ পাহাড় থেকে ওর মনটা ঝপাং করে নিচের নদীর জলে ঝাঁপ দেবে।
রাত হলো নদীর ধার থেকে ফিরতে ফিরতে। গাড়ি থামলো রাজেশ্বরীর ফ্লাটের সামনে। অরণ্য ওকে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। ঘরে ঢুকতেই একখানা চিঠি দেখতে পেল। লেখা আছে, “রাজন নামে এক ভদ্রলোক গাড়ি একসিডেন্টে মারা গিয়েছে, সাথে আর একজন মহিলাও। মহিলা ওর কলিগ।” হঠাৎ রাজেশ্বরীর মনে হলো রিমি নামে একজন কলিগ এর কথা। রাজন ওর সাথে অনেক গল্প করতো এই রিমিকে নিয়ে, কিন্তু কোনদিন রাজেশ্বরী সন্দেহ করেনি। ওর ভালোবাসার কাছে সন্দেহ পরাজিত ছিল। কিন্তু রাজন কি তাহলে, রিমিকে ভালোবাসতো? সন্দেহ দানা বেধে ওঠে ওর মনে। এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করলো রাজন ওর সাথে। চিৎকার করে দু’হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। অপ্রত্যাশিত এক দুর্ঘটনা, যাকে ঘিরে পৃথিবীর সব স্বপ্ন গাঁথছিল, এক মূহুর্তে উল্কার গতিতে মিশে গেল দূর-দুরান্তের এক বেদনার জগতে। সুখের পাখিরা খাঁচার দ্বারে এসে ঢুকি ঢুকি করেও মুখ ঘুরিয়ে উড়ে যায় কোন এক মেঘের দেশে। ওর মনে হলো ক্ষণিকের এই ঠুনকো জীবনের বোধহয় সমাপ্তি ঘনিয়ে এলো। মরুবৃত্তের নিস্তেজ সূর্যটা হেলে গিয়ে একেবারে সরাসরিভাবে মাটিতে দুর্বিসহ কিরন বর্ষাতে শুরু করলো। সমস্ত বিবাহিত জীবনের স্মৃতি গ্রাস করে আগুনের লেলিহান শিখায় মূহ্যমান হয়ে পড়লো। কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ভোর হলো জানে না।
সকাল বেলা অরণ্য এসে সব কিছু জেনে নিঃশব্দে রাজেশ্বরীর মুখের দিকে বোবা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। রাজেশ্বরী পাথরের মতো শক্ত হয়ে বসেছিল। রাত শেষে ভোর হচ্ছিল না।
সপ্তাহখানেক পরে অরণ্য ওকে নির্জন সেই নদীর ধারে নিয়ে এলো। সবুজ অরণ্য। রাজেশ্বরীর পায়ের নীচে বালি। দিগন্ত অবধি বিস্তত ঘোলা জল। নদীর জল গিয়ে থমকেছে পাহাড়ের পাড়ে। ধূসর রংহীন পাহাড়গুলো আক্রোশে ভেঙ্গে পড়া স্তূপাকৃতি ছাই যেন পড়েছে জলের ধারে। আকাশের মৃত ভস্ম যেন আকাশ পোড়া ছাই।
রাজেশ্বরী ভাবছিল নির্জন নদীর ধারে দাঁড়িয়ে, মন দিয়ে দেখছিল চারপাশ ছড়িয়ে থাকা পাথর আর বিক্ষিপ্ত গাছগুলো কেমন যেন ছবির কম্পোজিসন। শান্ত জায়গাটা যেন ওর মনের ভেতরটার মতো শান্ত। পাহাড়ের গায়ে জলের কাছে গাছের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে, ভেবে পাচ্ছিলো না কি করবে? অরণ্যকে অদ্ভত শীতল লাগছিল ওর কাছে। হঠাৎ অরণ্য রাজেশ্বরীর হাত ধরে বললো, “চলো তোমার রাজেশ্বরী কুঞ্জে”। রাজেশ্বরী চমকে কেঁপে কেঁপে উঠলো। হাতে হাত রেখে অরণ্য ওকে চেপে রাখলো বুকের ভেতরে। রাজেশ্বরী ভেতরে কান্না চেপে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। তাকিয়ে দেখলো ওর বুকের পাঁজর থেকে বেড়িয়ে আসা ভালোবাসার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে ওর সারা দেহে। অবিরাম চুপসাচ্ছে যেন ওই ঘোলা জলের অসংখ্য ছোট ছোট ঢেউ অথচ সাবলীল সে ঢেউ। শুরু হলো নিন্মাঙ্গের একটু উপরে কোমরের অনেক তলায় আর শেষ হয়েছে গিয়ে গাঁটের হাটুর নীচে। মনে হলো যেন আর একটু জোরে হাওয়া দিলে নগ্ন হয়ে যাবে রাজেশ্বরী। যেন প্রকাশিত হয়ে পড়বে তার অর্ধনগ্ন শরীরের লজ্জাটুকুও। অরণ্যের বড় লোভ হচ্ছিল, কিন্তু নিজেকে সামলে নেয়।
রাজেশ্বরী হ্যাঁ বা না কিছুই বলে না। নিঃশব্দটাই বুঝিয়ে দিচ্ছিল তার মনোভাব। নিঃশব্দ ব্যবহারের সংক্ষিপ্ততাতেও বুঝাতে পেরেছে অরণ্যকে।
অরণ্য এক সময় আলিঙ্গন করে বুকের ভেতরে টেনে নিল রাজেশ্বরীকে। দু’জনে মিলে হাঁটতে থাকে ধীর কদমে, গাছের আড়ালে তারপর এক সময় মিশে যায় সবুজে অনেক সবুজে।
এক সময় অরণ্য উদাস গলায় ডাকে রাজেশ্বরীকে। কাঙাল হয় ওর মনটা, গাছের চারিদিকে জলে পড়া আলো ছায়া অপূর্ব কম্বিনেসন জীবনের। চুপ করে সন্ধ্যা নামে, ভিজে যায় বুক, গলা, চোখ, যেমন ভেজে বন্ধ্যা পাথর নদীর নরম জলে। অরণ্য আর রাজেশ্বরীর আগামী দিনগুলোর সোনালী স্বপ্ন পূরণের বাস্তবতা মনের মাঝখানে রংঙে রংঙে মিশে থাকে।
অরণ্য এক জীবনের ভালোবাসা রাজেশ্বরীকে আগেই দিয়ে দিয়েছে। ওরা দু’জনে রাজেশ্বরী কুঞ্জে প্রবেশ করে। সে রাত দু’জনের বিনিদ্র কাটে। আলিঙ্গন, চুম্বন দিয়ে ভরিয়ে দেয় অরণ্য। রাজেশ্বরী, অরণ্য দু’জনেই এক জোড়া স্বর্ণের হংস, হংসী, সর্বনাশা ভালোবাসা অরণ্যের রাজেশ্বরীর প্রতি। রাজেশ্বরীর কি রুপের দ্যুতি। নিদ্রায় জাগরণে কাটে সময়। অরণ্যের কাছে রাজেশ্বরীর রুপ পূর্ণচন্দ্রের মতো অমলিন জোৎস্না।
ভালোবাসায় পাথরের বুক ভেদ করে বেরিয়ে আসে যন্ত্রণা। ভালোবাসা ছাড়া যেমন জীবন হয় না, তেমন দুঃখ ছাড়া ভালোবাসা হয় না। এক জীবন শত সহস্র দুঃখের কথা জেনেও সব বিষাদ তুচ্ছ করে আবার ভালোবেসেছে রাজেশ্বরী অরণ্যকে।