অনলাইন ডেস্ক : থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের সমালোচনা করায় ৩০ বছর বয়সী এক গণতন্ত্রপন্থী কর্মীকে বৃহস্পতিবার ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর চিয়াং রাইয়ের আদালত এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মংকোল থিরাকোট নামে এই ব্যক্তি একজন অনলাইন পোশাক বিক্রেতা। খবর-বিবিসি
ফেসবুকে রাজতন্ত্রের সমালোচনা করে পোস্ট দেওয়ায় বিচারিক আদালত প্রথমে তাকে ২৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তিনি আরও ১১টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে আপিল আদালত তাকে ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেন। রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে ২০২১ সালে তাকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
দেশটির কঠোর ‘লেস-ম্যাজেস্ট’ আইনে কোনো ব্যক্তিকে দেওয়া সবচেয়ে দীর্ঘ কারাদণ্ড এটি। রাজতন্ত্র সম্পর্কে যেকোনো নেতিবাচক মন্তব্যকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে লেস ম্যাজেস্ট আইন। এর আগে ২০২১ সালে এই আইনে ৪৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এক নারীকে।
গত ডিসেম্বর মাসে থাইল্যান্ডের একজন নারী সংসদ সদস্যকে ৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও তিনি দোষী নন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ করা পোস্টে রাজাকে অপমান করা হয়েছে বলে রুকচানোক আইসকে বুধবার দোষী সাব্যস্ত করেছে ব্যাংককের একটি আদালত। তিনি দুটি পোস্ট করেছিলেন। প্রথম পোস্টে তিনি দেশটিতে মহামারি মোকাবিলায় সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। দ্বিতীয়টি একটি টুইটের পুনঃপোস্ট ছিল যা রাজতন্ত্রের সমালোচনা হিসেবে সাজা দেওয়া হয়। যদিও দুটি পোস্টই তিনি করেছিলেন মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিতে যোগ দেওয়ার আগে।
মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি চলতি বছরের নির্বাচনে জয়ী হয়। দলটি ‘লেস-ম্যাজেস্ট’ আইন সংস্কারেরও আহ্বান জানিয়েছিল। ‘লেস-ম্যাজেস্ট’ আইনের বিরোধিতা ছিল এমন একটি ঘটনা যা ২০২০ সালে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয়। বিক্ষোভ বেশ কয়েক মাস স্থায়ী ছিল। থাই লইয়ার্স ফর হিউম্যান রাইটসের মতে, ২০২০ সাল থেকে লেস-ম্যাজেস্ট আইনের অধীনে প্রায় ২৬০টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিক্ষোভে জড়িত থাকার জন্য প্রায় ২ হাজার জনকে বিভিন্ন আইনের অধীনে বিচার করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ২৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে একটি রাজকীয় মোটর বহরের পাশে চিৎকার করার জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
মে মাসের সাধারণ নির্বাচনে তরুণ মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির তরুণ প্রার্থীরা নাটকীয় বিজয় অর্জন করেন। রুকচানোক আইস ব্যাংককের কাছের এলাকা ব্যাং বন থেকে জিতেছিলেন। এ আসনটি কয়েক দশক ধরে থাইল্যান্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলগুলোর দখলে ছিল। একজন রাজনৈতিক হেভিওয়েট নেতাকে পরাজিত করে আসনটিতে বিজয়ী হওয়ার জন্য থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম তাকে ‘জায়ান্ট-কিলার’ নাম দিয়েছিল।