বিনোদন ডেস্ক : প্রিয় পরিচালক মণিরত্নমের নতুন ছবি ‘পোন্নিইন সেলভান’র মাধ্যমেই সেলুলয়েডে কামব্যাক করছেন বচ্চন পরিবারের বধূ ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। রুপালি পর্দায় তার রাজকীয় প্রত্যাবর্তন ইতোমধ্যে দারুণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছে সবার মনে। বিপুল-সংখ্যক দর্শক অধীরভাবে অপেক্ষা করছেন প্রিয় তারকা অভিনেত্রীর নতুন ছবিটির জন্য। প্যান ইনডিয়ান সিনেমার জোয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করতে আসছে এ ছবি। ৩০ সেপ্টেম্বর সিনেমা হলে মুক্তি পাবে ‘পোন্নিয়ান সেলভান’র প্রথম পার্ট।
পরিচালক মণিরত্নমের বহু-প্রত্যাশিত এই ছবির প্রধান চরিত্র নন্দিনী। ৫০০ কোটি টাকা বাজেটের এই ছবিতে নন্দিনী এবং তার মা মন্দাকিনী দেবী, দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঐশ্বরিয়া। ‘পোন্নিইন সেলভান’ দিয়ে প্রায় বছর চারেক বাদে বড় পর্দায় কামব্যাক করছেন তিনি। এই পিরিয়ডিক ড্রামায় ঐশ্বরিয়ার ফার্স্ট লুকে নীল নয়না সুন্দরীর ‘নন্দিনী’র বেশে লেখা রয়েছে, ‘প্রতিহিংসার সুন্দর মুখ! দেখা করুন নন্দিনীর সঙ্গে, পাজুভোর-এর রানি।’
ছবিটিতে তারকা সমাবেশ নজর কেড়েছে দর্শকদের। ‘পোন্নিইন সেলভান’ ছবির গল্প দশম শতাব্দীতে চোল সাম্রাজ্যের একটি উত্তাল সময়ের প্রেক্ষাপটে তৈরি। যখন শাসক পরিবারের কলহের ফলে সম্রাটের সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের মধ্যে হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই ঐতিহাসিক ছবিতে ফুটে ওঠবে চোল সাম্রাজ্যের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।
মণিরত্নম বরাবরই ঐশ্বরিয়ার প্রিয় পরিচালক। পরিচালকের বহু ছবিতেই তাকে দেখা গেছে, সেই ইরুভার থেকে শুরু করে গুরু, রাবণ, আর এবার পোন্নিইন সেলভান। এই ছবি ২০২২ সালের জনপ্রিয় ও আলোচিত ছবি হতে পারে এমনটাও মনে করছেন অনেকে। ছবির সাফল্য নিয়ে আশাবাদী বচ্চন-বধূ। মণিরত্নম-ঐশ্বরিয়া জুটি পর্দায় আবার ম্যাজিক করবে এমনটাই মনে করছে বলিউড। এর আগে মণিরত্নমের ‘ইরুভির’, ‘গুরু’, ‘রাবণ’র মতো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন ঐশ্বরিয়া। ১৯৯৭ সালে দক্ষিণী পরিচালক মণিরত্নমের হাত ধরেই ‘ইরুভির’ ছবির মাধ্যমে বিগ স্ক্রিনে ব্রেক পেয়েছিলেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। দক্ষিণী ছবির অভিনেত্রী হিসাবে দর্শকের দরবারে এলেও বলিউডের একাধিক হিট ছবিতে কাজের সুযোগ পেয়েছেন বচ্চন-বধূ।
২০১৮ সালে ‘ফ্যানি খান’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাই সুন্দরী। তবে বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি ছবিটি। তারপর আর কোনো ছবিতে দেখা যায়নি। ২০১৯ সালে ‘পোন্নিইন সেলভান’ এর শুটিং শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে থমকে গিয়েছিল ছবির কাজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই ফের শুরু হয় কাজ। নতুন ছবি ‘পোন্নিইন সেলভান’র গ্র্যান্ড ট্রেলার লঞ্চে অংশ নিতে দক্ষিণে যাওয়ার পর ট্রলের শিকার হয়েছেন ঐশ্বরিয়া। সেখানে তার ছবি সামনে আসতেই তার চেহারা নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। এই প্রথম নয়, ঐশ্বরিয়া প্রায়ই তার চেহারা নিয়ে ট্রলের মুখোমুখি হন।
বিনোদন জগতের মানুষ হলেই তাদের চেহারায় চাকচিক্য থাকতে হবে, এমনই একটা ধারণা কিছু মানুষের। তাদের যেন বয়স বাড়তে নেই! এরই প্রত্যক্ষ উদাহরণ ঐশ্বরিয়া। প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী তিনি। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চেহারায় তার একটা ছাপ পড়েই। আর সেখানেই শুনতে হয় নানা কথা। তাকে দেখতে খারাপ লাগছ এই বলেই ক্ষ্যান্ত নন কিছু মানুষ। তাকে নানা রকম বিশ্লেষণে ভূষিত করছেন তারা। শাকচুন্নি বা ড্রাকুলা বলতেও দ্বিধা করেননি তারা ঐশ্বরিয়াকে। এমনকি বোটক্সের ফল তার এই রূপ, সেটাও বলেছেন কেউ কেউ।
সোশ্যাল মিডিয়া এই ট্রলগুলি অবশ্যই কদর্য, ব্যক্তিগত হওয়ার সমস্ত লাইন অতিক্রম করেছে এবং তাদের সৌন্দর্যের মানের সঙ্গে মেলে না বলে নায়িকাকে খারাপভাবে লজ্জা দিচ্ছেন। অন্যদিকে এই সমালোচনা পেয়ে তিনি কী করেছেন। নিশ্চিত কিছুই না। ঐশ্বরিয়ার অনুগত ভক্তরা অবশ্য তার পোশাক পরা থেকে তাকে কতটা সুন্দর দেখাচ্ছে, সেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অভিনেত্রীর ভক্তরা তার সিনেমার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। কারণ, তিনি মহামারির কারণে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে কোনো কাজ করেননি। কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তার ব্যক্তিগত পছন্দ, বিশেষ করে মেয়ে আরাধ্যার জন্য। ঐশ্বরিয়া অবশ্য আগেই জানিয়েছেন— তিনি কখনই ইঁদুর দৌড়ের অংশ নন এবং কে কোথায় যাচ্ছেন তা নিয়ে ভাবেন না।