অনলাইন ডেস্ক : ‘হাতে আরেকটু সময় রেখে স্কুল খোলার ঘোষণা দিলে ভালো হতো। শেষ সময়ে এসে তাড়াহুড়ো করে বাচ্চাদের স্কুলের জন্য অনেক কিছু কিনতে হচ্ছে। আর স্কুল ড্রেসের দামও বেশি। আগে যে সেটা কিনেছিলাম এক হাজার টাকায়- সেটা এখন সেটা প্রায় দেড় হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে,’- এভাবেই সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলছিলেন অভিভাবক শহীদুল্লাহ ইসলাম। তিনি পেশায় শিক্ষক। তিনি দুই ছেলের জন্য স্কুলের পোশাক কিনতে এসেছেন রাজধানীর একটি বিপণিবিতানে।
দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আগামীকাল রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) খুলছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার কয়েকটি রেডিমেড স্কুলড্রেস বিক্রির দোকান ও জুতার শোরুম ঘুরে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর স্কুলের পোশাক ছোট হয়ে গেছে বা না পরতে পরতে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের জুতাও কেনা লাগছে। এসব কিনতে তারা ভিড় জমিয়েছেন বিপণিবিতানে। কেউ কেউ ব্যাগও কিনছেন। হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় বিক্রেতারা পোশাকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। তবে জুতার দাম বাড়েনি। এদিকে পোশাক বিক্রেতারা বলছেন, দাম স্বাভাবিকই আছে।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দর্জির দোকানের চেয়ে রেডিমেড পোশাকের দোকানে ভিড় বেশি। দর্জিরা বলছেন, এক সেট স্কুল ড্রেস বানাতে ক্ষেত্রবিশেষে চার থেকে সাতদিন সময় লাগে। কিন্তু এবার অভিভাবকরা চাইছেন চটজলদি ডেলিভারি। তাই গত কয়েকদিনে বিপুলসংখ্যক ক্রেতাকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে।
ঢাকা কলেজ এলাকার একটি জুতার দোকানের বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ সজীব বলেন, মূলত গত বুধবার থেকে ক্রেতার চাপ বেড়েছে। এদের বেশিরভাগই স্কুলের জন্য জুতা কিনছেন। শুক্রবার থেকে ক্রেতার চাপ আরও বেড়েছে। ক্রেতার চাপ সামলাতে আমাদের দুজন কর্মীকে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকটি জুতার চেইনশপের বিক্রয়কর্মী জানান, আমাদের সব ব্রাঞ্চেই বিক্রি বেড়েছে। বিশেষ করে স্কুলের জুতার ক্রেতা এখন বেশি। দামও স্বাভাবিকই আছে।
সন্তানের জন্য স্কুলড্রেস কিনতে আসা চাকরিজীবী আবদুল মোতালেব অভিযোগ করেন, দাম কিছুটা বেশি। রেডিমেড না কিনে দর্জি দিয়ে বানালে এর চেয়ে কম খরচ পড়ত। কিন্তু সময় না থাকায় রেডিমেড কিনতে এসেছি।
ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, শেষ সময়ে দাম ও ভিড় একটু বেশি হতে পারে। আর দাম অতটাও বেশি না, যথেষ্ট রিজনেবল।
একটি টেইলার্সের কর্মী শামিম আহমেদ বলেন, অনেক মানুষ স্কুলড্রেস বানাতে এসেছিলেন। কিন্তু সবাই দ্রুত ডেলিভারি চায়। এতো তাড়াতাড়ি বানিয়ে দেওয়া সম্ভব না বিধায় ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের রেডিমেড স্কুলড্রেস বিক্রেতা হাফিজুর রহমান ক্রেতাদের উপর দায় চাপিয়েছেন। তিনি জানান, দাম মোটেও বেশি রাখা হচ্ছে না। অনেক সময় কম লাভে বিক্রি করছি। কারণ লকডাউনের সময় অনেকদিন দোকান বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ক্রেতারা অনেকদিন পর পোশাক কিনতে আসায় তাদের কাছে দাম বেশি মনে হচ্ছে।