রবার্ট ইগার : (দা ওয়াল্ট ডিজনী কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসাবে রবার্ট ইগারের পনের বছরে অর্জিত শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সালে রবার্ট ইগার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন যখন কোম্পানি এ যাবৎ কালে সর্বাধিক সঙ্কটময় পরিস্থিতি অতিবাহিত করছে। তিনটি মূলনীতির উপর ভর করে তিনি এগুলেন এক. গুণগত মানের শ্রেষ্ঠতা বজায় রাখা, দুই. নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতা না করে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিৎ করা এবং তিন. গন্ডির বাইরে বিশ্বব্যাপী নিজেদের চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটানো। চৌদ্দ বছরে তিনি ডিজনিকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মর্যাদাসম্পন্ন মিডিয়া কোম্পানিতে রূপান্তর করলেন। এখন পিক্সার, মার্ভেল, লুকাসফিল্ম, টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরি ফক্স প্রভৃতি স্বনামধন্য কোম্পানির মালিক দা ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি। রবার্ট ইগারের লেখা “দা রাইড অফ এ লাইফ টাইম” সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’এ ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করছেন উন্নয়ন সংগঠক ও অনুবাদক কোরবান আলী)

আঠাশ.

সপ্তম অধ্যায়
ভবিষ্যতের কথা
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) সারা প্রক্রিয়া ব্যাপী জর্জ আমার সাথে যে ভাবে আচরণ করে এসেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তিনি আমার সাথে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ না করলে বোর্ডের বাকী সদস্যরা আমাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সমান সুযোগ দিতেন না।

সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ আমি উইলোর কাছে। আমার প্রতি তাঁর দৃঢ় আস্থা, বিজ্ঞ বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা, আর সমর্থন ছাড়া এ যুদ্ধে জয়ী হওয়া আমার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব হতো না। সে পুরো সময়ব্যাপী আমাকে আগলে রেখেছিল, আর মাঝে মাঝে বলতো এটি আমার বা আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। আমি নিজেও জানতাম সে ঠিক বলছে তথাপিও তার মুখ থেকে যখন কথাগুলো শুনতাম তখন আমার বিষয়গুলো হৃদয়াঙ্গম করা অনেক সহজ হত। সে এভাবে আমাকে নিরন্তর সহযোগিতা করে গেছে। ফোনে কথা বলা শেষ হলে আমরা দুজনে খানিকক্ষণ শান্ত হয়ে বসে থাকলাম। সবকিছু হৃদয়াঙ্গম করলাম, সংশ্লিষ্ট সকলের প্রশংসা করলাম। আমার স্মৃতিতে কিছু মানুষের মুখাবয়ব ভেসে বেড়াচ্ছে যাদেরকে আমি এখনই ফোন করে বিজয় উল্লাস প্রকাশ করতে চাই। কিন্তু কি যেন বাধ সাধছে মনে হচ্ছে একটু স্থির হয়ে বসি, একটু শান্ত হই। জয়ের উত্তেজনা আর স্বস্তি দুটোই পেতে চাচ্ছি।

অনেক সময় অতিবাহিত হবার পর প্রথমে আমি আমার মা-বাবাকে লংআইল্যান্ডে ফোন করলাম। যদিও তাঁদের বিশ্বাস হচ্ছিল না তাঁদের সন্তান ওয়াল্ট ডিজনির প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি পরিচালনা করতে যাচ্ছেন। তাঁরা অনেক খুশি হলেন। গর্ব বোধ করলেন। তারপর নিউইয়োর্কে আমার দুই কন্যার সাথে কথা বললাম। আমার আগের প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল সিটির দুইজন প্রাক্তন বস ড্যান বার্ক আর টম মর্ফিকে ফোন করে সংবাদটা দিলাম। এরপর ফোনে কথা বললাম স্টিভ জবসের সাথে। এটি একটি অস্বাভাবিক ফোন কল ছিল। কিন্তু আমার কাছে তাঁর সাথে ফোনে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল। চিন্তা করেছিলাম যদি এখনও পিক্সারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ার কোন সুযোগ থাকে।

সত্যি কথা বলতে তখন পর্যন্ত আমি স্টিভকে খুব ভালোভাবে চিন্তাম না। তবুও আমি তাঁকে বললাম আগামী কাল ঘোষণা করা হবে আমিই ডিজনির প্রধান নির্বাহী। প্রতিত্তোরে তিনি বললেন, ‘সব ঠিক আছে, ভালো, এটি আপনার জন্য একটা সুখের সংবাদ।’ আমি তাঁকে বললাম আপনি অনুমতি দিলে আমি আপনার সাথে দেখা করতে যেতে চাই। আমি চেষ্টা করবো আপনাকে বোঝানোর জন্য যে আমরা আবার একসাথে কাজ করলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারে। স্টিভ স্বাতন্ত্র ব্যক্তিত্বের মানুষ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ আপনি মাইকেলের হয়ে কতদিন কাজ করেছেন?’
‘দশ বছর।’
তিনি বললেন, ‘হু, আমি দেখতে পাই না কিভাবে জিনিস গুলো ভিন্ন হয়ে যাবে। কিন্তু হ্যা, অবশ্যই, ধুলো থিতিয়ে গেলে যোগাযোগ করেন।’

অষ্টম অধ্যায়
শ্রদ্ধাই শক্তি
আমার নিয়োগ আর মাইকেলের ডিজনি থেকে প্রস্থানের মধ্যে ফারাক ছিল ছয় মাসের। দৈনন্দিন কোম্পানির কাজকর্ম পরিচালনায় মনোযোগ দেয়ার জন্য অনেকগুলো বিষয় ছিল। কিন্তু এর মাঝে আমার একটু বিশ্রমের দরকার ছিল। দীর্ঘ উত্তরাধিকার প্রক্রিয়া শেষ হবার পর আমি কিছু সময় ব্যায় করেছিলাম আমার চিন্তা-ভাবনাগুলো গোছগাছ করে নেবার জন্য। চিন্তা করলাম মাইকেল যে দিন প্রস্থান করবেন ঠিক সেদিন থেকে আমার কোম্পানি পরিচালনার ১০০ দিন গণনা শুরু হবে। ততোদিন আমি লোকচক্ষুর আড়ালে একটু জিরিয়ে নিতে পারবো। শান্তভাবে আমার পরিকল্পনাগুলো ঝালিয়ে নিতে পারবো।

আমি আর কোন ভুল করতে চাই না। ঘোষণা হওয়ার ঠিক পরেই সংশ্লিষ্ট সকলে আমাকে কতগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি করেন। সংবাদকর্মীবৃন্দ, বিনিয়োগকারী স¤প্রদায়, এই কর্মকান্ডে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ, ডিজনির কর্মীবৃন্দ সকলে সমভাবে একই সুরে আমাকে প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে থাকেন। কোম্পানিকে সুসংগঠিত করার জন্য আপনার পরিকল্পনা কি? কতদিনের মধ্যে আপনি আপনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন? ডিজনির ইতিহাসের কারনেই এই প্রশ্ন। মাইকেল অত্যন্ত নাটকীয়ভাবে অল্প সময়ের মধ্যে ডিজনির পুণর্গঠন করেছিলেন। তাছাড়াও ডিজনি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিরীক্ষণ করা কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে একটি। গত কয়েক বছর যাবৎ আমরা যে জনযুদ্ধ মোকাবেলা করেছি তা শুধু আমি কে? আর আমি কিইবা করতে চাই? এই নিয়ে চক্রন্তের জাল বিস্তৃত হয়েছে। অনেক সংশয়বাদী এখনও আমাকে অস্থায়ী প্রধান নির্বাহী হিসেবে দেখেন। তাঁরা মনে করেন যতদিন না বোর্ড বাইরে থেকে একজন স্টার খুঁজে পাচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত আমি এই কোম্পানির অস্থায়ী কর্ণধার। আমার প্রতি মানুষের কৌতুহল বেশি ছিল কিন্তু প্রত্যাশা কম ছিল। দ্রæতই বুঝতে পারলাম আমাকে কোম্পানির গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করতে হবে এবং প্রধান নির্বাহী হিসেবে আমার কর্মদিবস আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবার আগেই কিছু মৌলিক বিষয়ের উপর কাজ করা দরকার।

অপেক্ষমান থাকার প্রথম সপ্তাহেই আমি আমার ঘণিষ্ঠ উপদেষ্টা, বর্তমানে প্রধান ফাইনানসিয়াল অফিসার টম স্ট্যাগস, আমাদের সাধারণ পরামর্শক অ্যালান ব্রাভারম্যান আর আমাদের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা জেনিয়া মুচাকে আমার অফিস কক্ষে ডেকেছিলাম পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য কতকগুলো অতিব জরুরী করণীয় কাজ তালিকাভূক্ত করার জন্য। আমি বললাম, ‘প্রথমেই আমাদের সাথে রয় ডিজনির যে দা-কুড়াল সম্পর্ক সেটাকে কবর দিতে হবে।’ এটি প্রমানিত সত্য যে রয় ডিজনি মাইকেলকে চলে যেতে বাধ্য করেছেন। তিনি বোর্ডের উপর রাগান্বিত ছিলেন যে বোর্ড এটি দ্রæততার সাথে করেনি। তিনি আমাকে প্রধান নির্বাহী করারও সমালোচনা করেছেন। কারণ আমি প্রকাশ্যে মাইকেলের প্রতিরক্ষায় কথা বলেছি। এই মুহূর্তে রয় আমাকে দুর্বল করার জন্য উঠেপড়ে লাগবে আমি তা বিশ্বাস করি না। কিন্তু একটা ডিজনি পরিবারের সাথে কোম্পানির তিক্ত সম্পর্ক জারি রাখা, কোম্পানির ইমেজের জন্য ক্ষতিকর।

দ্বিতীয়ত, আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে পিক্সার আর স্টিভ জবসের সাথে আমাদের সম্পর্ক পুণরুদ্ধার করা। পিক্সারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা মানে ডিজনির জন্য বিশাল আঘাত। আর্থিকভাবে এবং জনসংযোগ উভয় দিক দিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো। স্টিভ সারা বিশ্বে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। তিনি ইতিমধ্যে প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সারা বিশ্বে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। ডিজনির তাঁকে প্রত্যাখান এবং তাঁর বিধ্বিংষী সমালোচনা জনগণের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এটির যে কোন সংশোধন ডিজনির জন্য বিশাল বিজয় হিসাবে বিবেচিত হবে। এছাড়াও পিক্সার মান সম্পন্ন অ্যানিমেশন সৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই একটা খ্যাতি অর্জন করেছে। ডিজনি অ্যানিমেশনে কতটুকু ভঙ্গুর সেটা তখনও আমার অজানা। আমি জানতাম অ্যানিমেশনে যে কোন অংশিদারিত্ব আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। আমি এও জানতাম স্টিভের মতো একগুঁয়ে স্বভাবের মানুষ সমাধানে আসার জন্য সহজে রাজি হবেন না। তবুও চেষ্টা করে দেখতে আপত্তি কোথায়।

সর্বশেষ, আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। অর্থাত কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের পুনর্গঠন করতে হবে। এর আকার এবং প্রভাব কেমন হবে তা ভেবে দেখতে হবে। এই বিভাগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি হবে তা পণর্বিবেচনা করতে হবে। প্রথম দুটি অগ্রাধিকার মূলত জনসাধারণ আমাদেরকে কীভাবে উপলব্ধি করছে সে সম্পর্কিত ছিল। আর এটি হচ্ছে কোম্পানির ভেতরে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির রূপান্তর ঘটানোর প্রক্রিয়া। এটি একটু সময়সাপেক্ষ বিষয়। কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগ অবশ্যই এমন নতুন ধারণার প্রতিরোধ করতে চাইবে। তাঁরা অবশ্যই ক্ষোভ প্রকাশ করবে এবং প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবে। তবে আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগকে পুনর্গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের দায?িত্ব হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের স¤প্রসারণ। আমি মনেপ্রানে বিশ্বাস করি, যদি আমরা আমাদের সমস্ত বিভাগের উপর কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের দখল কমাতে পারি তবে আমরা ধীরে ধীরে কোম্পানির মনোবল পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবো।

প্রথমেই আমি রয় ও ডিজনির মধ্যে একটা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছি। আমি তাঁর কাছে যাবো, আমাদের সম্পর্কের জটিলতাগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবো তার আগেই শান্তি স্থাপনের সমস্ত পথ রুদ্ধ করা হলো। আমার পদোন্নতি ঘোষণার কয়েকদিনের মধ্যেই রয় এবং স্ট্যানলি গোল্ড বোর্ডের বিরুদ্ধে একটা মামলা ঠুকে দিল। তারা এটিকে “প্রতারণামূলক উত্তরাধিকার প্রক্রিয়া” বলে অভিহিত করল। অযৌক্তিক অভিযোগ বিধায় আদালত আমার পক্ষেই রায় দিলেন। এটি একটি বড় বিপর্যয়ও বলতে পারেন। আমি এখনও নতুন পদে চাকরি শুরু করিনি আর এর মধ্যেই আমার পদোন্নতিকে চ্যালেঞ্জ করা হলো। তাঁরা আমার সাথে এরকম একটা কুৎসিত আচরণ করল। প্রধান নির্বাহী হিসাবে আমার পদায়নকে প্রশ্ন বিদ্ধ করল। আদালতে মামলা করল।

আমি নিজে থেকে স্ট্যানলিকে ফোন করার সিদ্ধান্ত নিলাম, কোন আইনজীবীর মাধ্যমে নয়, তিনি আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক কিনা তা জানার জন্য। ২০০৩ সালের শরৎকালে তিনি এবং রায় পদত্যাগ করেন, তখন পর্যন্ত স্ট্যানলি এবং আমি ডিজনি বোর্ডে একসঙ্গে কাজ করেছি। এই কয়েক বছর ধরে এটা আমার কাছে স্পষ্ট ছিল যে স্ট্যানলি আমাকে সম্মান করেননা, কিন্তু আমি ভেবেছিলাম সে অন্তত আমার কথা শুনতে রাজি হবে। তিনি রয়ের চেয়ে কম আবেগপ্রবণ এবং বেশি বাস্তব জ্ঞান সম্পন্ন ছিলেন। আমি হয়তো তাকে বোঝাতে সক্ষম হতে পারি যে ডিজনির সাথে দীর্ঘ আইনি লড়াই আমাদের কারও স্বার্থ সংরক্ষণ করবে না। তিনি আমার সাথে কথা বলতে রাজি হয়েছিলেন। ডিজনি পার্কিংলটের খুব কাছের কাউন্টি ক্লাবে তার সাথে মিলিত হলাম।

দীর্ঘ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়ে আমি স্ট্যানলির সাথে আলোচনা শুরু করলাম। সকল সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতা তাকে বললাম, বাইরের অনুসন্ধান সংস্থার কথা বললাম, বোর্ড যে অসংখ্য প্রার্থীকে বিবেচনা করেছিল সে বিষয়ে আলোচনা হল, ছয় মাসব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া উন্মুক্তভাবে চালু ছিল তা উল্লেখ করলাম। শেষে বললাম ‘এটি একটি পূর্ণাঙ্গ এবং স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিল। বোর্ড সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অনেক সময় নিয়েছে।’ আমি স্ট্যানলিকে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করাতে চেয়েছিলাম যে তাদের মামলার কোন ভিত্তি নেই এবং সফল হওয়ার সম্ভাবনা শূন্য।

তিনিও এক এক করে সমস্ত ফিরিস্তি তুলে ধরলেন। মাইকেলের সমালোচনার পুরানো কাসুন্দি, তাঁর এবং রয়ের মতামতের ফিরিস্তি তুলে ধরলেন এবং গত কয়েক বছর ধরে সংস্থাটি যেভাবে পরিচালিত হচ্ছিল তা আবারও নতুন করে বললেন। আমি তার সাথে বিতর্কে যায়নি, শুধু তার কথা শুনেছি। আমি তার অভিযোগগুলো স্বীকার করে নিয়েছি বেলছি হ্যা এগুলো সত্য এবং বোর্ডের কর্মকান্ডগুলোও বৈধ ছিল। শেষের দিকে স্ট্যানলি খুব বেশি বিতর্কে জড়ায়নি। তার মতে রয়ের আঘাত পাওয়াই এই মতোবিরোধের প্রধান কারণ। প্রতিবাদের মূখে পদত্যাগ করা সত্বেও মাইকেল রয়কে বোর্ড থেকে বের করে দেবার জন্য আমাদের বাধ্যতামূলক অবসরের বয়স তলব করেছিল। যা ছিল ভীষণ অসম্মানজনক পদক্ষেপ। রয় মনে করছিলেন তাকে তার নিজের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। রয় বোর্ডের উপর অসন্তষ্ট কারণ বোর্ড তার কথা শোনেনি। প্রথম যখন মাইকেলকে অপসারণের প্রচারণা শুরু করেন সেই সময় বোর্ড তাকে অপসারণ করেনি। অবশেষে তাকে অপসারণ করা হলো। কিন্তু রয় অনুভব করেন যে এই সমস্ত কিছুর জন্য তাকেও একটা অন্যায্য মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে। (চলবে) – টরন্টো, কানাডা