রবার্ট ইগার : (দা ওয়াল্ট ডিজনী কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসাবে রবার্ট ইগারের পনের বছরে অর্জিত শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সালে রবার্ট ইগার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন যখন কোম্পানি এ যাবৎ কালে সর্বাধিক সঙ্কটময় পরিস্থিতি অতিবাহিত করছে। তিনটি মূলনীতির উপর ভর করে তিনি এগুলেন এক. গুণগত মানের শ্রেষ্ঠতা বজায় রাখা, দুই. নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতা না করে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিৎ করা এবং তিন. গন্ডির বাইরে বিশ্বব্যাপী নিজেদের চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটানো। চৌদ্দ বছরে তিনি ডিজনিকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মর্যাদাসম্পন্ন মিডিয়া কোম্পানিতে রূপান্তর করলেন। এখন পিক্সার, মার্ভেল, লুকাসফিল্ম, টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরি ফক্স প্রভৃতি স্বনামধন্য কোম্পানির মালিক দা ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি। রবার্ট ইগারের লেখা “দা রাইড অফ এ লাইফ টাইম” সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’এ ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করছেন উন্নয়ন সংগঠক ও অনুবাদক কোরবান আলী)
ষোড়শ.
পঞ্চম অধ্যায়
ডিজনিতে দ্বিতীয় অবস্থান
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) ডিজনিতে হঠাৎ করেই পুরনো নিয়মতান্ত্রিকতা ফিরে আসল। সারা পৃথিবী জুড়ে আমাদের অফিস ছিল। ল্যাটিন আমেরিকা থেকে ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া থেকে জাপান। কিন্তু আমাদের কোন সুসংহত আন্তর্দেশীয় সাংগঠনিক কৌশল ছিল না। ছিলনা কোন সাংগঠনিক কাঠামো যাতে করে সবগুলো অফিসকে একটি নির্দষ্ট নিয়মে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা যায়। জাপানের টোকিও শহরের কোন এক জায়গায় একটা স্টুডিও অফিস আছে, আর এক জায়গায় একটা ভোগ্যসামগ্রীর ব্যাবসা রয়েছে, টিভি ব্যাবসা ছিল অন্য এক জায়গায়। এ সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোন সমন্বয় ছিল না। কেউ কারও সাথে কখনও কথাও বলতো না। এমনকি অফিসের পেছনের কার্যক্রমসমূহ যেমন হিসাবরক্ষণ বা আইটি সম্পর্কিত কার্যক্রম সমূহের মধ্যেও কোন সমন্বয় ছিল না। একই ধরনের প্রাচুর্যের ছড়াছড়ি সর্বত্র বিরাজমান ছিল। এর চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে আমাদের ব্যবসার কোন অঞ্চলে এমন কোন কর্মী ছিলেন না যিনি আমাদের ব্র্যান্ড ব্যবস্থাপনার কাজগুলো করবেন বা ব্যবসা স¤প্রসারণের জন্য অন্যান্য সুযোগগুলো খতিয়ে দেখবেন। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত প্রানহীন অবস্থায় পরিচালনা করা হতো এবং প্রত্যেকটিই বারবাক (যে শহরে ডিজনির কেন্দ্রিয় অফিস অবস্থিত) কেন্দ্রিক ছিল।
এ ধরনের অব্যবস্থাপনা মাইকেলের চোখে পড়েছিল এবং তিনি ব্যবসাগুলো সুশৃঙ্খল পদ্ধতির মধ্যে আনতে চান। তাঁর অনুভূতির মধ্যে আর একটি বিষয় কাজ করছিলো সেটা হচ্ছে আমাদের আন্তর্জাতিকভাবে গড়ে উঠতে হবে। এক বছর আগে তিনি চীনে একটা থিম-পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। ডিজনির পরিচালন কর্মকর্তা ফ্রাঙ্ক ওয়েলস ’৯০ দশকের গোড়ার দিকে চীনা কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা পেশ করেন। কিন্তু এটি প্রস্তাবনা পর্যায়েই থেকে যায় এর অতিরিক্ত এক পাও তিনি এগোননি। সেই থেকে চীনা লোকজন জানতেন আমরা চীনে একটা থিম-পার্ক নির্মাণে আগ্রহী। এ বছর তাঁরা সবুজ সংকেত পাঠিয়েছেন যে তাঁরাও চান নির্মাণ কাজ শুরু হোক।
অল্প কিছু সংখ্যক ডিজনি কর্মকর্তা যাদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে আমি তাঁদের একজন। এবিসি স্পোর্টস আর ওয়াইড ওয়ার্ল্ড অফ স্পোর্টস পরিচালনা করার সময় আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যপক অভিজ্ঞতা অর্জন করি। এবং আমিই একমাত্র ব্যক্তি যার চীন সম্পর্কে অন্য যে কারও চেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। ডিজনিতে যোগ দেবার ঠিক আগে আমি এবিসির কচি-কাঁচাদের আসর স¤প্রচারের জন্য চীনে প্রগ্রাম করেছিলাম। এ সমস্ত বিবেচনায় মাইকেল আমাকে ওয়াল্ট ডিজনি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট করলেন। তিনি শুধুমাত্র একটা আন্তর্জাতিক কৌশলপত্র নির্মাণের দ্বায়িত্বই দিলেন না বরং চীনে একটা থিম-পার্ক নির্মাণেরও দ্বায়িত্ব দিলেন।
চীনের ঠিক কোন জায়গায় আমরা থিম-পার্ক নির্মাণ করবো সেটা নিয়ে একটা প্রাথমিক পর্যালোচনা সভা হল। সভায় জনসংখ্যা, আবহাওয়া, জমির প্রাপ্যতা বিবেচনায় আমরা সিদ্ধান্তে আসলাম সাংহাই হবে থিম-পার্ক নির্মাণের একমাত্র উপযোগী স্থান। ১৯৯৮ এর অক্টোবর উইলো যখন আমাদের প্রথম সন্তানের গর্ভধারণে নয় মাসে পদার্পণ করল, সে সময়ে আমি ডিজনির হয়ে প্রথম সাংহাই গেলাম। চীনা কর্মকর্তাবৃন্দ আমাদের তিনটি জমি দেখালেন এবং বললেন, ‘আপনারা এই তিনটির যে কোন একটি নিতে পারেন কিন্তু আপনাদের কাছ থেকে আমরা খুব দ্রæত সিদ্ধান্ত চাই।’
সাংহাই মূল শহরের বাইরে পুডং এলাকার স্থানটি আমরা পছন্দ করলাম। দ্রæতবর্ধনশীল সাংহাই শহরের এই অংশে তখনও ছোট ছোট খামার বেষ্টিত গ্রাম ছিল। এটি কল্পনা করাও বেশ কঠিন ছিল যে এখানে একটা ডিজনি প্রাসাদসহ একটা পরিপূর্ণ ডিজনি পার্ক গড়ে উঠবে। গ্রামের মাঝখান দিয়ে অসংখ্য খাল বয়ে গেছে। খালের ধারে ছোট বাচ্চাদের সাথে নেড়ি কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। জীর্ণ নড়বড়ে বাড়িগুলো ঘিরে সব্জী ক্ষেত, মাঝে মাঝে মুদি দোকান দেখা যাচ্ছে। সাইকেলই প্রধান বাহণ কদাচিৎ মোটরগাড়ি দেখা যায়। আমাদের বিবেচ্য আধুনিকতার ছাপ কোথাও দৃষ্টিগোচর হয় না। শীঘ্রই সাংহাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর খোলা হবে। অচিরেই সাংহাই পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এবং স্পন্দিত শহরগুলির একটিতে পরিণত হবে। এভাবেই শুরু হয়েছিল আমাদের সাংহাইয়ের যাত্রা। আঠার বছর ব্যাপি আমি সাংহাইয়ে যাতায়াত করছি, মোট চল্লিশবার এখানকার আলো-বাতাস মানুষের সাথে মিশেছি।
এরই মধ্যে এবিসি নি¤œমূখী পতন শুরু হয়েছে। আমি যখন এবিসির মূখ্য সময় পরিচালনা করছিলাম তখন আমরা যে সমস্ত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলাম সেগুলো পুরোনো হয়ে গেছে। আমদের আত্মতুষ্টি পেয়ে বসেছিল। ক্রমে আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় কল্পনাশক্তিহীন হয়ে পড়েছি। এনওয়াইপিডি বøæ এখনও বিশটি শ্রেষ্ঠ সিরিয়ালের মধ্যে একটি। এর পরে আমরা আরও এক জোড়া সিরিয়াল পেয়েছিলাম যেগুলো ভালো করেছিল- হোম ইমপ্রুভমেন্ট আর দ্যা ড্রিউ ক্যারি শো। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল মানডে নাইট ফুটবল , যা যুগ যুগ ধরে একই জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। বাকী যে সকল সিরিয়াল আমরা নির্মাণ করেছি সেগুলো কারও মনে সাড়া জাগায় না।
আমরা অল্প সময়ের জন্য রক্ষা পেয়েছিলাম ১৯৯৯ সালে, যখন আমরা হু ওয়ান্টস টু বি এ মিলিনিয়র শোটি শুরু করলাম। প্রথমে আমরা না বলেছিলাম, পরে যখন অনুষ্ঠাটির নির্মাতা রেজিস ফিলবিনকে হোস্ট করে নিয়ে পুণরায় আমাদের কাছে আসলেন তখন আমরা অনুষ্ঠান স¤প্রচারের সিদ্ধান্ত নিলাম। শুরুতে এ অনুষ্ঠানটি খোদা প্রদত্ত বাঁচার অবলম্বন হিসাবে আমাদের কাছে বিবেচিত হল। পরে অনুষ্ঠানটি দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচার জন্য হাতের লাঠি হিসাবে ব্যাবহার করলাম। যখন এটি প্রথম টভিতে স¤প্রচার করা হলো তার দর্শক সংখ্যা দেখে আমরা হতবাক হয়ে গেলাম। একটা গেম-শো হিসাবে নয় বরং যে কোন শো এর দর্শক সংখ্যাকে অতিক্রম করেছিল। প্রতি রাত্রে দর্শক-শ্রোতার সংখ্যা ছিল তিন কোটি। সপ্তাহে তিনটি শো স¤প্রচার করা হোত। টিভি নেটওয়ার্কে সেই সময়ে এত দর্শক কল্পনার বাইরে ছিল। ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এটি এক নম্বর টিভি অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানটি টিভি নেটওয়ার্কটির ত্রাণকর্তার ভুমিকা পালন করেছিল। কিন্তু এটি টিভি নেটওয়ার্কের ভেতরের ক্ষতগুলো মুছে ফেলতে পারেনি।
সে বছরে আর একটি টিভি শো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। আসন্ন সহস্রাব্দে আমাদের অনুষ্ঠানমালা কি হবে সে বিষয়ে আমি আন্তরিকভাবে চিন্তা করতে শুরু করে ছিলাম। আমি শক্তভাবে অনুভব করতে লাগলাম সারা পৃথিবীর মানুষ সহস্রাব্দের মুহূর্তটির প্রতি আকৃষ্ট হবে। আর সে কারণেই এবিসি নিউজের নেতৃত্বে কোম্পানির সমস্ত সম্পদ ও মনোযোগ নিয়ে এই বিশেষ মুহূর্তটি আরও সুন্দর করে উপস্থাপন করতে হবে। আঠার মাস আগে আমি একটা সভার আয়োজন করলাম যেখানে নিউজ, বিনোদন আর খেলাধুলা বিভাগের সকল ঊর্ধ্বতন নির্বাহীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এখন পর্যন্ত আমি যা কিছু চিন্তা করেছি বা কল্পনা করেছি তাঁদের সাথে আলোচনা করলাম। আমরা চব্বিশ ঘন্টা নতুন সহস্রাব্দের অনুষ্ঠানমালা স¤প্রচার করবো। পৃথিবীব্যাপী মধ্যরাত্রি যেখানে থেকে শুরু হবে এবং যেখানে শেষ হবে সময় জোন ভেদে পৃথিবীর সকল মানুষ আমাদের আয়োজন দেখতে পাবে। আমি অনেক উৎসাহের সাথে বলছিলাম, ‘আমরা যেন আমাদের অনুষ্ঠানকে নিজেদের অনুষ্ঠান মনে করি’। পরক্ষণেই দেখলাম রুন নির্লিপ্তভাবে বসে আছেন। তাঁর চোখেমুখে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। অর্থাত তিনি এই ধারণাকে পছন্দ করছেন না। মিটিং শেষে আমি তাঁকে একদিকে টেনে নিয়ে গেলাম এবং একান্তে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি ভাবছেন আমি একটা আস্ত পাগল, তাই না?’
তিনি বললেন, ’কিভাবে আমরা একটা দিনপঞ্জির পরিবর্তনকে প্রদর্শন করবো? তাও আবার চব্বিশ ঘন্টা ব্যাপী।’
আমি তাঁকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলাম (এটা একটা আকর্শনীয় চ্যালেঞ্জ ছিল)। কিন্তু রুনের কথা আর অঙ্গভঙ্গিতে আমি যা বুঝলাম টিভি শোটি নির্মাণ করা তাঁর কাছে কোন বিষয় না। সমস্যাটি হচ্ছে এত বড় একটা ধারণা বাস্তবায়নের জন্য বলা হচ্ছে সেটা তাঁর নিজের মাথা থেকে আসেনি। এটি তার মাথা থেকে এসেছে যে প্রায়ই রুনকে জিজ্ঞেস করতো, ‘আর কত উপরে উঠবো?’ রুন উত্তরে বলতেন, ‘আর উপরে উঠতে না পারলে ওখান থেকে লাফিয়ে পড়।’
আমি ১৯৯৩ থেকে রুনের বস, যখন থেকে টম ও ড্যান আমাকে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়েছেন। ঐ বছরগুলিতে আমরা একসাথে ভালোভাবেই কাজ করেছি। তিনি গর্ববোধ করতেন যে আমি কোম্পানির চূড়ায় উঠতে পেরেছি। কিন্তু তিনি এখনও চিন্তা করেন আমি তাঁর চরিত্রে অভিনয় করে চলেছি। তাঁর কাছে আমার হাতে খড়ি হয়েছে। আমি তাঁর সহযোগী। আমি যে কোন কর্পোরেট হস্তক্ষেপ থেকে তাঁকে রক্ষা করবো। তাঁর খেয়াল খুশি মতো তিনি যাকিছু করবেন আমি তার অনুমোদন দিবো। আমি রুনের উপর অতো মাত্রায় অন্ধভক্ত ছিলাম না, যতোটা তিনি ভাবতেন। তিনি ভাবতেই পারেন, এতে আমার কোন ক্ষতি নেই। আর এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে তাঁকে মুক্ত করারও যথেষ্ট কোন কারণ নেই। তাঁর অহংকার যতক্ষণ না হুমকির সম্মূখিন হচ্ছে ততক্ষণ রুন তাঁর শ্রেষ্টটা দিয়ে যাবেন।
আমার দরকার রুনকে দিয়ে কাজটি সুসম্পন্ন করা। মানুষকে আপনার পক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করানো একটা কৌশলপূর্ণ চাতুর্যের বিষয়। কোন কোন সময় তাদের আপত্তিগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা করা এবং শতর্কতার সাথে তাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া একটা কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার কোন কোন সময় এটি বোঝাতে সক্ষম হোতে হয় যে আমি তার বস আর আমি চাই সে আন্তরিকতার সাথে কাজটি সুসম্পন্ন করবে। এখানে এমন নয় যে এ পদ্ধতিটি ভালো অপরটি খারাপ। শেষের কৌশলটি বেশি নির্দেশনামূলক যা আলোচনা বা পরিবর্তন করার জন্য উন্মুক্ত নয়। একটা বিশেষ মুহূর্তে কোনটি বেশি কার্যকর বলে আপনি বিশ্বাস করেন সেটিই উৎকৃষ্ট পন্থা। কখনও কখনও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মানুষের নৈতিকতাকে কাজে লাগিয়ে উৎকৃষ্ট ফলাফল বের করে আনা সম্ভব। আবার কখনও কখনও আপনার নিজের প্রতি অগাধ বিশ্বাস থাকলে প্রবল মতভেদ থাকা সত্বেও আপনি এককভাবে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেন।
এক্ষেত্রে আমি নিরঙ্কুশভাবে বিশ্বাস করি আমি ঠিক ছিলাম। আমি চাই না কেউ আমাকে বিভ্রান্ত করুক। এমনকি দাম্ভিক রুন আরলেজের নির্লিপ্ত থাকাও আমি মেনে নেব না। অবশ্যই রুন নাশকতার আশ্রয় নিতে পারেন, যথাযথ উদ্যোগ, আন্তরিকতা ও সঠিক যোগাযোগের অভাবে কর্মসূচিটি ব্যার্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। এ ধরনের অনেক মানুষের সাথে আমি কাজ করেছি, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছি। রুন কোন সন্তোষজনক উত্তর দিলেন না যদিও তিনি নিজেকে অনেক বড় মানুষ ভাবেন। তাঁকে যথাযথো সম্মান প্রদর্শন পূর্বক হালকা স্বৈরাচারের ভুমিকা নিলাম। বুঝিয়ে দিলাম যা কিছুই ঘটুক না কেন সহস্রাব্দের শো নির্মাণ হবে এবং যথাযথভাবে স¤প্রচার করা হবে।
আমি বললাম, ‘রুন, আমি চাই আপনার লোকজন জানবে যে এই ধারণাটা আপনার কাছ থেকে এসেছে। এটি আমাদের একটা বিশাল এবং সাহসী পদক্ষেপ। এটি কার্যকর করা অসম্ভব হতে পারে, কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করা থেকে আপনি কখন বিরত ছিলেন?’
তিনি সহস্রাব্দের ধারনাটি পছন্দ করেননি, আএ বিষয়ে নিশ্চিৎ ছিলাম না বা সে সময়ে তিনি অনুভব করছিলেন তাঁর এখন আর আগের মত যথেষ্ট মত্রায় সেই তেজদীপ্ত শক্তি নায় যে এত বড় একটা সৃজনশীল কাজ তিনি করতে পারবেন। কিন্তু আমি জানতাম তিনি কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি না হয়ে ফিরে আসার মানুষ না। কাজেই আমি তাঁর অহংকারের জায়গায় টোকা দিয়েছিলাম, যাতে তাঁর নেতৃত্বেই কাজটি সম্পন্ন হয়। তিনি কিছু বলেননি কিন্তু তিনি মৃদু হেসে সম্মতি সূচক মাথা নাড়িয়ে ছিলেন। মনে হল তিনি বললেন ঠিক আছে, বুঝেছি। (চলবে)