অনলাইন ডেস্ক : শরীর সুস্থ রাখতে সবজি ও ফলমূলের জুড়ি নেই। প্রতিদিন অনেকেই খাদ্য তালিকায় কম-বেশি বিভিন্ন সবজি ও ফল রাখেন। বেশিরভাগ সবজি রান্না করে খাওয়া হয়। তবে এমন কিছু সবজি ও ফল আছে, যা কাঁচা খেলে এর পুষ্টিগুণ অক্ষত থাকে। এসব ফল ও সবজি যখন রান্না করে খাওয়া হয়, তখন এর গুণগত মান কমে যায়। চলুন এক নজরে দেখে নেই কোন কোন ফল ও সবজি কাঁচা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
১. পেঁয়াজ
রান্নায় পেঁয়াজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয় না, এমন কোন রান্না খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে, রান্না করা পেঁয়াজের চেয়ে কাঁচা পেঁজায়ের গুণগত মান ও পুষ্টি অনেক বেশি। পেঁয়াজ যদি অন্যান্য সবজির সঙ্গে সালাদ হিসেবে খাওয়া হয় তবে এর কার্যকারিতা বেড়ে যায় বহুগুণ। পেঁয়াজে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা লিভারের জন্য খুবই উপকারি। এ ছাড়াও পেঁয়াজ হৃদরোগের অসুখ থেকে দূরে রাখে, হাড় মজবুত করে। সেইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমিয়ে শরীর রাখে সতেজ।
২. বিটরুট
কাঁচা খাওয়া যায় এমন আরেকটি সবজি বিটরুট। গাঢ় লাল রংয়ের এই সবজিটি খাওয়া যায় জুস বানিয়ে বা সালাদ হিসেবে। এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রতিদিনের ওয়ার্ক আউটের আগে বা দিনের শুরুতে এক গ্লাস বিটরুটের জুস শরীর চাঙ্গা করার জন্য যথেষ্ট।
৩. বিন স্প্রাউট
বিন স্প্রাউট আমাদের দেশে খুব একটা জনপ্রিয় না হলেও ধীরে ধীরে এর চাহিদা বাড়ছে। স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই আজকাল বিন স্প্রাউটের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন। বিন স্প্রাউট রান্না করে বা কাঁচা দুভাবেই খাওয়া যায়। কিন্তু কাঁচা বা কোনো সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে যদি খাওয়া হয়, তবে এর পুষ্টিগুণ একদম ঠিক থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি আর ভিটামিন বি। ভিটামিন সি যুক্ত যেকোনো খাবার রান্না করলে এর পুষ্টিগুণ বেশ কমে যায়, তাই এইসব খাবার কাঁচা খাওইয়াটাই স্বাস্থের জন্য সব থেকে ভালো।
৪. টমেটো
টমেটো প্রধানত শীতকালীন সবজি হলেও এখন প্রায় সারা বছরই টমেটো কিনতে পাওয়া যায়। উপমহাদেশীয় রান্নায় বেশ বড় একটি স্থান দখল করে আছে টমেটো। তবে রান্না করে খাওয়ার চেয়ে টমেটো কাঁচা খাওয়া ভালো। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আগুনের তাপে নষ্ট হয়ে যায়। তাই পুষ্টিবিদদের মতে, টমেতো সালাদ হিসেবে বা জুস করে খাওয়াই উত্তম।
৫. রসুন
রসুন কাঁচা খেতে হবে, এটা শুনে হয়তো অনেকের কাছেই অদ্ভুত লাগতে পারে। তবে কাঁচা রসুনের রয়েছে অনেক গুণ। সকাল বেলায় খালি পেটে রসুনের একটি কোয়া কুচি করে কেটে একটু মধুর সঙ্গে যদি প্রতিদিন খাওয়া যায়, তবে তা দূরে রাখবে ফুসফুসের ক্যানসার থেকে। রসুন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
৬. বাদাম
ভাজা বাদাম খেতে পছন্দ করে অনেকেই। তবে তা লবন দিয়ে হালকা না ভেজে একদম কাঁচাই খাওয়া হয় তা শরীরের জন্য বেশি সুফল বয়ে আনে। বাদাম ভাজার সময় লবণ বা চিনির ব্যবহার, এতে থাকা ক্যালরির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। সেইসঙ্গে আগুনের তাপ বাদামে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই আমন্ড, কাজু বা পেস্তা, বাদাম যেটাই হোক না কেন, সেটা কাঁচা খাওয়াটাই ভালো।
৭. ব্রোকলি
সবজির মধ্যে ব্রোকলি খুবই জনপ্রিয়। যারা স্বাস্থ্য সচেতন, তাদের প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে ব্রোকলির থাকেই। এতে রয়েছে আন্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং প্রোটিন। এই গাড় সবুজ রঙের সবজিতে আরও কিছু উপাদান রয়েছে যা ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়তা করে। তাই প্রতিদিনের খাবারে ব্রোকলি রাখা খুবই জরুরি।
র্এটি এক বা দুই মিনিট আগুনের হালকা আঁচে রান্না করা যায়, তবে ব্রোকলিকে কখনোই অতিরিক্ত সিদ্ধ করা যাবে না। কাঁচা খেতে হলেও ভালো করে লবণ পানিতে ধুতে হবে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া