স্পোর্টস ডেস্ক : ‘বিদায়’ শব্দটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরহের। আর মেসি তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। ২১ বছরের বন্ধন ছিন্ন করা চাট্টিখানি কথা নয়। আর্জেন্টাইন খুদেরাজের সেই বিরহ প্রকাশ হলো চোখের জল দিয়ে। রোববার সংবাদসম্মেলনে বিদায়ী বক্তব্য দিতে এসে অনেকটা সময় শুধু কাঁদলেন আর কাঁদলেন। এ সময় উপস্থিত বার্সার কর্মকর্তরাসহ ক্রীড়া সাংবাদিকদের চোখও ছলছল করে উঠে।

তারা মেসির জন্য আবেগ প্রকাশ করতে দাঁড়িয়ে যান সবাই। অনবরত হাততালি দিতে থাকেন। সে এক আবেগঘন পরিবেশের অবতারণা। অবশেষে মেসি নিজেকে সামলে নেন। স্ত্রীর কাছ থেকে টিস্যু নিয়ে চোখ-নাক মুছেন। এরপর জানালেন, কেন এতো কাঁদছেন। কেন এই বিচ্ছেদ বেশি পোড়াচ্ছে তাকে! কেন নিজেকে সামলে নিতে পারছেন না!

মেসি সত্যিটাই বললেন। তিনি বললেন, ‘এই জায়গা, এই ক্লাব যেখানে আমার জীবন পুরোপুরি বদলে গেছে সেটা ছেড়ে যাওয়ার অর্থ আজও আমি বুঝতে পারছি না। প্রথম স্কোয়াডে ছিলাম ১৬ বছর। এখন আবার আমাকে নতুন করে শুরু করতে হবে। কিন্তু আমার ব্যথা, অনেক বেশি ব্যথা। কারণ, আমি আমার ভালোবাসার ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছি। এমনটা প্রত্যাশা করিনি। আমি সব সময়ই সত্যিটা বলেছি। গত বছর আমি ছাড়তে চেয়েছিলাম, এই বছর নয়। ব্যথাটা এ কারণেই। গত বছর বুরোফ্যাক্স নিয়ে নাটকের সময় (ক্লাব ছাড়তে হলে) আমি কী বলব, সেটা ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু এ বছর সবকিছু অনেক ভিন্ন। এটা আমার ঘর, আমাদের ঘর। আমি এখানে থাকতে চেয়েছিলাম। সেটাই পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আজ সবকিছু ছেড়ে যেতে হচ্ছে।’

কষ্ট বেশি পাবার আরো একটি কারণ জানালেন মেসি। বললেন, ‘দেড় বছর ধরে মাঠে আমাদের সমর্থকদের দেখতে পাইনি। তাদের না দেখে বিদায় নিতে হচ্ছে, এই ব্যাপারটাই বেশি কষ্ট দিচ্ছে। তবে আমি এখানে আবার ফিরব, এটা আমার ঘর। আমার সন্তানদেরও আমি কথা দিয়েছি, আমি আবার এখানে ফিরে আসব।’

মেসি যখন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন, ক্যাম্প ন্যুর বাইরে সমর্থকদের ভিড়। আর ভেতরের কক্ষে প্রথম সারিতে তিনটি চেয়ারে বসে মেসির তিন ছেলে। তাদের পাশে মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো। অন্যপাশে মেসির বার্সেলোনা সতীর্থরা সবাই একসঙ্গে। এছাড়াও ছিলেন সাবেক সতীর্থ জাভি হার্নান্দেজ–কার্লোস পুয়োলরাও। বার্সা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তাসহ ক্লাবের অন্য কর্মকর্তারাও ছিলেন সেখানে। আর স্প্যানিশ গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও ছিলেন।

মেসি এমন সব বার্তায় সবাই আবেগী হয়ে উঠেন।