অনলাইন ডেস্ক : জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯১৯ কোটি ডলার বা প্রায় ২৮ শতাংশ। এ সময়ে দেশটি বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেছে দুই হাজার ৯৯২ কোটি ডলারের পোশাক পণ্য। এর আগের বছরের একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় তিন হাজার ৩১২ কোটি ডলারের। এই বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থা তুলনামূলক কম খারাপ। আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ও টেক্সটাইল আমদানি-রপ্তানির তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওটেক্সা এই হিসাব করেছে।

পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩১ কোটি ডলার বা প্রায় দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন থেকে পোশাক পণ্য আমদানি কমেছে ৪৯ শতাংশেরও বেশি। দেশটিতে পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের রপ্তানি কমেছে ৯.৩৭ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ার কমেছে ১৫ শতাংশ, ভারতের ২৭ শতাংশ, মেক্সিকোর সাড়ে ৩৭ শতাংশ, হন্ডুরাসের প্রায় ৪৩ শতাংশ, পাকিস্তানের প্রায় ১৬ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ২৭ শতাংশ। একমাত্র কম্বোডিয়ার বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ।

চীনে জানুয়ারিতে করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় আমদানি-রপ্তানিতে গতি কমতে শুরু করে। ফেব্রুয়ারিতে তা ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ ও আমেরিকায়। মার্চে শুরু হয় বাংলাদেশেও। এই সময়ে যোগাযোগ সংকুচিত হয়ে আসে বিশ্বব্যাপী। ফলে খাদ্যপণ্য ও ওষুধ বাদে বিশ্বব্যাপী অন্যান্য পণ্যের মতো পোশাকের চাহিদাও তলানিতে নামে। লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়ে যায় খুচরা দোকান। ফলে সব দেশ থেকেই রপ্তানিও ব্যাপকভাবে কমে যায়। অবশ্য মে মাস থেকে বাংলাদেশে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার পর ফের রপ্তানি বাড়তে থাকে। জুনে এসে রপ্তানিতে বেশ ভালোভাবেই ফিরে আসার তথ্য পাওয়া গেছে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জুলাইয়েও রপ্তানিতে ভালো গতি রয়েছে।

অন্যতম বড় রপ্তানিকারক স্টারলিং গ্রুপের প্রধান ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, আগামী দুই-তিন মাস পর যেসব পোশাক তৈরি হবে, তার আলোচনা এখন থেকেই হওয়ার কথা। কিন্তু সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রপ্তানির সবচেয়ে বাজে সময় পার করে এসেছে বাংলাদেশ। আগামী দিনগুলোতে পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। হয়তো তা অতীতের একই সময়ের মতো হবে না। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

বলেন, এরই মধ্যে গত জুন থেকে পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিনকে কেন্দ্র করেও রপ্তানি আদেশ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।