Home আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান উল্টে দিয়ে ট্রাম্পের মুখে রাশিয়ার প্রতিধ্বনি

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান উল্টে দিয়ে ট্রাম্পের মুখে রাশিয়ার প্রতিধ্বনি

অনলাইন ডেস্ক : ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে যদি কারও কোনো ধরনের সন্দেহ থাকে, তা বুধবার দূর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এদিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ তকমা দেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। অথচ তিন বছরের কম সময় আগে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে অভিনন্দিত ও হর্ষধ্বনি পেয়েছিলেন জেলেনস্কি।

জেলেনস্কি বিদেশি সহায়তার ‘রসালো ট্রেন’ চালু রাখতে চান বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। এই মন্তব্যের এক দিন আগে যুদ্ধ শুরু করার জন্য রাশিয়ার বদলে ইউক্রেনকে দায়ী করেন তিনি।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘জেলেনস্কির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, না হলে তাঁর কোনো দেশ থাকবে না।’

ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক দীর্ঘ ফোনালাপের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে এসব কিছু ঘটেছে। ট্রাম্প এখন যুদ্ধ ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে রাশিয়ার বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করছেন।

যুক্তরাজ্যে নিয়োজিত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন যে পদ্ধতিতে এগোচ্ছে, সেটার প্রশংসা করেছেন।

আন্দ্রেই কেলিন বিবিসি নিউজনাইটকে বলেছেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা খেয়াল করলাম, তাঁরা (যুক্তরাষ্ট্র) এমনটি বলছে না যে এটা রাশিয়ার অপপ্রচার ও অপতথ্য। আমরা যা বলছি, তা তাঁরা মনোযোগ দিয়েছেন শুনেছেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে এই আকস্মিক পরিবর্তন বস্তুত নাটকীয়। তবে এটা বিস্ময়কর নয়। ট্রাম্প কয়েক বছর ধরেই এমন মনোভাব প্রকাশ করে আসছিলেন।
তাঁর সর্বশেষ মন্তব্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এমন এক প্রেসিডেন্টকে তুলে ধরছে, যাঁর নিজের পার্টি ও সরকারের সব ক্ষমতার ওপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব রয়েছে। এসব শক্তি কাজে লাগিয়ে তিনি ‘সবার আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ’—এই দেওয়া-নেওয়ার পররাষ্ট্রনীতিকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবেন।

জেলেনস্কির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই শব্দবাণ এমন সময়ে এল, যখন ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের মালিকানা এবং সেখান থেকে লভ্যাংশ লাভ–সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব প্রকাশ্যে নাকচ করেছেন তিনি।

জেলেনস্কি বলেছিলেন, ‘এটা জরুরি কোনো আলোচনা নয়। আমি আমদের দেশকে বিক্রি করে দিতে পারি না।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে অবশ্য ইউরোপে সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি কমানোর বিষয়ে আগ্রহী বলেই বলে মনে হচ্ছে।

গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক ব্যবধানে জয় লাভের আগে থেকেই ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সামরিক সহায়তা পাঠানোর সমালোচনা করতেন ট্রাম্প। তখন তিনি জেলেনস্কিকে ‘সর্বকালের সেরা বিক্রয়কর্মী’ আখ্যায়িত করতেন।

ট্রাম্পকে যেসব ভোটার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, তাঁরা তখন ইউক্রেন যুদ্ধ বা পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে তেমন একটা চিন্তাভাবনা না–ও করে থাকতে পারেন। ভোটারেরা এটা না করলেও ট্রাম্পের বর্তমান অবস্থান তাঁর নির্বাচনী কোনো দায় বা প্রতিশ্রুতি ছিল না। তবে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে বিরোধীরা তাঁকে এ বিষয়ে তাঁর অবস্থান নিয়ে নাস্তানাবুদ করেছিলেন।
বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

Exit mobile version