অনলাইন ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএর প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। শুক্রবার এনডিএর বৈঠকে জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা তাঁকে জোটপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এতে তিনিই হতে যাচ্ছেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। তবে জোটপ্রধান হওয়ার পর তাঁর দীর্ঘ ভাষণে ছিল হতাশার প্রতিধ্বনি। জোটের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন এবং সরকার গঠনে তাঁর জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার তথ্য দেন।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এনডিএর বৈঠকে ১ ঘণ্টা ১২ মিনিট বক্তব্য দেন মোদি। নির্বাচনী প্রচারে তিনি কথায় কথায় যেভাবে ‘মোদি সরকার’, ‘মোদির গ্যারান্টি’র বাণী শোনাতেন, এই বৈঠকে তা শোনা গেল না। একবারও মুখে আনলেন না নিজের নাম। এর পরিবর্তে ৩৯ বার বলেছেন জোটের নাম ‘এনডিএ’।
এক মাস আগেও তিনি লোকসভা ভোটের প্রচারে বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে ‘মোদির গ্যারান্টি’র বিজ্ঞাপন করেছিলেন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে মোদি নিজের নামোচ্চারণ করেছেন ৪২১ বার। প্রতিটি সভার পোস্টারে-প্ল্যাকার্ডে-ফেস্টুনে চোখে পড়ার মতো বড় হরফে লেখা থাকত মোদি সরকারের কথা।
দ্য হিন্দু জানায়, বৈঠকে বিরোধীদের আক্রমণ করে মোদি বলেন, ১০ বছরে কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনে ১০০ আসনের ঘরও ছুঁতে পারেনি। এবার আমরা যত আসনে জিতেছি, তিনবারের ভোটে কংগ্রেসের মোট আসন তারও চেয়েও কম।’ মোদি যখন এমন কথা বলছিলেন, তখন সর্বশেষ নির্বাচনে কংগ্রেস ১০০ আসনে পৌঁছেছে। মহারাষ্ট্রে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী ভিশাল পাতিল আনুষ্ঠানিতভাবে আবার কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি টিকিট না পেয়ে ভোটে স্বতন্ত্র লড়েন। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এক্স হ্যান্ডলে তাঁর যোগদানের ছবি প্রকাশ করেছেন। এর মাধ্যমে কংগ্রেস এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো আসন সংখ্যায় তিন অঙ্ক ছুঁইলো। নির্বাচনের আগে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, কংগ্রেস ১০০ আসনও পাবে না। এ নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে ট্রোল চলছে।
তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মোদি: টানা দুই মেয়াদ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার পরিচালনার পর প্রথমবারের মতো মোদি আঞ্চলিক দলগুলোর সহায়তা নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। আগের দুই দফায় বেশ ভালো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল তাঁর দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। কিন্তু এবার বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২৪০টি আসন। ৫৪৩ আসনের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২টি। শরিকদের নিয়ে তারা পেয়েছে ২৯৩ আসন।