অনলাইন ডেস্ক : করোনাকালে মানুষের জীবনযাত্রার চিরচেনা রূপ বদলে গেছে, কিন্তু সবকিছুর মতো বিয়ে তো ভার্চুয়ালি সম্ভব নয় বলে সবাই জেনে এসেছে এতদিন। এবার সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন ভারতের এক যুগল।
মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুকের প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ‘মেটা’ রাখার পর মেটাভার্স সবার কাছে কম-বেশি পরিচিত। এবার সেই মেটাভার্সেই নিজেদের বিয়ে সারলেন তামিলনাড়ুর এক যুগল দীনেশ শিবকুমার পদ্মাবতী এবং জনগানন্দিনী রামস্বামী। গত রবিবার তামিলনাড়ুর একটি গ্রামে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
হ্যারি পটার ভক্ত হওয়ায় এই দম্পতি বিয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন তাদের পছন্দের থিম ‘হগওয়ার্ট’। এ সময় অতিথিরা নিজেদের মোবাইল, ল্যাপটপ আর ট্যাব ব্যবহার করে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন যার যার বাসস্থান থেকে। সর্বমোট ৬ হাজার আমন্ত্রিত অতিথি এতে যোগ দিয়েছিলেন।
মেটাভার্স প্রযুক্তিতে পুরো বিয়ের ডিজাইন ও হোস্টিং করতে ১ লাখ ৫০ হাজার রুপি খরচ হয়েছে। অতিথিরা সবাই এই হগওয়ার্ট থিমের ভেন্যু ঘোরাঘুরির সময় নিজেদের ইচ্ছামত ভার্চুয়াল অবতার ও পোশাক ধারণ করতে পেরেছিলেন।
মেটাভার্স বিয়ে নিয়ে সবচেয়ে অভিনব যে সুবিধাটি বের করেছেন দীনেশ, সেটা শুনলে যে কেউ চমকে যাবেন আবার একই সাথে আবেগাপ্লুত হবেন। ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা জনগানন্দিনীর মৃত বাবাকেও দেখতে পেয়েছেন!
দীনেশ ক্রিপ্টো ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে বহু বছর কাজ করছেন। এই ব্লকচেইন হলো মেটাভার্সের প্রাথমিক অংশ। তাই বিয়ে ঠিকঠাক হওয়ার পরই তিনি ঠিক করেন, এই প্রযুক্তিকে তার বিয়েতে কাজে লাগাবেন। হবু স্ত্রীকে জানাতেই রাজি হন তিনি। এরপরই এভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন নয়া এই যুগল।
নিজেদের বিয়েকে ভারতের প্রথম মেটাভার্স বিয়ে বলছেন দীনেশ। মজার ব্যাপার হলো, এই যুগলের পরিচয়টাও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে। সেখান থেকে প্রণয় পর্বেও যে অনলাইনের বড় অবদান ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া বিয়ে পরবর্তী অনুষ্ঠান মেটাভার্সে হওয়ায় এই যুগলকে পুরোপুরি ভার্চুয়াল যুগল বলা যেতেই পারে। এদিকে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অতিথিরা বাস্তবে ভার্চুয়াল খাবার খেতে না পারলেও ভার্চুয়ালি উপহার ঠিকই দিতে পেরেছেন। সেজন্য গুগল পে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবস্থা আগে থেকেই করা ছিল।
প্রসঙ্গত, মেটাভার্স হলো এমন একটি ভার্চুয়াল থ্রিডি পরিবেশ যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা একত্রিত হতে পারে এবং সবাই যার যার সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে পারে।