১. ‘একটি মাত্র ভাত’

বৃক্ষ তুমি কালের সাক্ষী, স্বাধীনতার সাক্ষী,
মানুষের প্রেম-বিচ্ছেরেও।
কারো কারো অসমাপ্ত কথা তোমার বুকে আছে জমা।
চাঁদের আলো-আর আঁধারের খেলা দেখো,
ক্ষুদার্থ মানুষের পেট চিঁড়ে খায় বাকল।
কষ্ট সহ্য করো, বলো না কিছুই।
এক সময় নেতিয়ে পড়ে তোমার গোড়ায়
ভোরের আলো জাগলে, ওরাও জাগে
আবার ভাতের সন্ধানে যায়।
‘জীবনব্যাপী একটি মাত্র ভাত’
এই ভাত কখনও জোটে কখনও নয়।

২. দুঃখমোচন করো না কেন?

ললাটে কি হবে তা আগে জানা গেলে ভালই হতো
দু:খ-কষ্ট যখন ঘিরে ধরে
সবাই বলে ললাটে যা লেখা ছিল তাই হয়েছে।
চমত্কার সান্তনা, ললাট আমরা লিখিনি;
লিখেছেন, সৃষ্টিকর্তা, ‘তাঁর’ লেখনী আমরা গ্রহণ করি।
কারো ললাট এত বেশি ভাল, সুখ- ঐশ্বর্যে ভরপুর।
আবার কেউ পেট ভরে দু’মুঠো খেতে পায় না।
খাওয়ার জন্য এ দ্বারে ও দ্বারে ঘুরে বেড়ায়।
বিত্ত-বৈভবে থাকেন যাঁরা বলেন, কি করবে? ললাটে নেই?
বিধি আমাদের উপর এত চটা কেন?
আমরা নিরীহ-গোবেচারা।
কারো ক্ষতি করি না,
আমাদের ললাটে এমন লেখা কেন?
বরং যারা দাপটে চলে তাদের ললাট সব কিছুতে ভরপুর।
এই লীলা-খেলা আমাদের সাথে কেন কর সৃষ্টিকর্তা?
তোমাকে কাছে পাওয়া যায় না।
নিরাকারে আকার ধর বুঝতে পারি না।
দূর থেকে তোমার কাছে ললাটের দুঃখমোচনের প্রার্থনা করি।
শুনতে পাও কি? যদি পাও তাহলে দুঃখমোচন করো না কেন?

৩. প্রেমহীন বুকে

প্রেমহীন বুকে এখন জমেছে একরাশ কফ।
বুকের গভীরে মনে হয় ক্ষত
চোখের মনি ঝাপসা হচ্ছে ক্রমশ
রাজপথ শুধু প্রেমিকের নয়; সবার।
সবাই যায় আসে আমিও যাই এক প্রেমিক।
ঝাপসা চোখে মনে হয় তোমাকে দেখি।
ভুল ভাঙ্গে, কফ উগরে আসে বাইরে।
আবার দৃষ্টি মেলে ধরি; কোথায় তুমি?
বুকের গভীরের ক্ষতে পান্ডুলিপিতে মর্চে পড়েছে।
যে কোন মুহূর্তে খসে পড়ার অপেক্ষায়।
নগরের বাতাসে ধুলো-বালি, মনোকার্বন আর নতুন করে যুক্ত করোনা ভাইরাস
সব মিলিয়ে মহামারি।
বিশুদ্ধ বাতাস টেনে নিতে বৃক্ষের কাছে গিয়ে বসি।
মৃতবত মানুষের ফুসফুস
বৃক্ষের কাছ থেকে বিশুদ্ধ বাতাস টেনে নিতে পারে না।
নিতে গেলেই আবার কফ উগরে আসে।
পাতার দিকে তাকাই ঝাপসা চোখে বিবর্ণ মনে হয় পাতার রঙ।
অপেক্ষা করছি, জমানো কাব্যের পান্ডুলিপি খসে পড়ার জন্যে।
আমি তো চলে যাচ্ছি… প্রজন্মের জন্যে প্রার্থনা বিশুদ্ধতায় বাঁচুক তারা।
ফ্লোরিডা, ইউএসএ প্রবাসী