পার্থ সারথী দেব, মিশিগান : আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রাইমারি নির্বাচন। ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে বাংলাদেশি-আমেরিকানরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় তাঁরা বিজয়ী হতে পারেননি। এ নিয়ে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় চলছে আলোচনা–সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, নির্বাচনে বাংলাদেশি প্রার্থীদের হারার মূল কারণ হচ্ছে যোগ্যতা, নিজেদের মধ্যে দলাদলি, ভোটারদের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততার অভাব ও এখানে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে দূরত্ব। এ ছাড়া মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশিরা এখনো তেমন সম্পৃক্ত হতে বা প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। এ কারণে তাঁরা অন্য কমিউনিটির ভোট তেমন পাননি।
মিশিগানে বাংলাদেশিদের শতাধিক সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। কিন্তু ভোটের ব্যাপারে সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারেননি বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্ম যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন।
মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ পদে ডিস্ট্রিক্ট-৪ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সাহাব আহমেদ। তাঁর সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আইয়াস আব্রাহাম নামে যিনি জয়ী হয়েছেন, তাঁর প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে ৫ হাজার ৩৫২ এবং সাহাব আহমেদ পেয়েছেন ৮৩৫ ভোট। ভোটের হিসাবে তিনি ষষ্ঠ স্থান পেয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান অনেক। বিজয়ী প্রার্থী পেয়েছেন ৩৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ ভোট এবং আহমেদ পেয়েছেন ৬ দশমিক ২ শতাংশ ভোট। তবে তিনি বলেছেন, পরাজয় মানে হেরে যাওয়া নয়, এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
ওয়েন কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট-৩ থেকে কমিশনার পদে প্রার্থী হয়েছিলেন মোহাম্মদ হাসান। এ পদে দুজন প্রার্থী ছিলেন। তাই এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সরাসরি। এখানে ১০ হাজার ৮২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মার্থা স্কাট, হাসান পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৯১ ভোট।
নির্বাচনের এ ফলাফলে বিভিন্নজন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। রব্বানী তালুকদার নামের একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘বাঙালি প্রার্থীরা আমাদের দিয়ে আইডেনটিটির পলিটিকস করতে চায়। তারা বাঙালি—শুধু এই কারণে তাদের ভোট দিতে বলে, যেটা ফান্ডামেন্টাল ভুল বলে আমি মনে করি। ভোটাররা যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছেন বলে আমি মনে করি।’
এম এন এম তানভীর নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমরা এঁদের (প্রার্থীদের) কমিউনিটির পাশে দেখিনি। এমনকি করোনার মহামারির সময় তাঁদের দেখা যায়নি। আমার খুব জানতে ইচ্ছা হয়, কোন যুক্তিতে নির্বাচন করেন আমাদের এ ভাইয়েরা।’