অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে একের পর এক নাটকীয়তা। তার ধারাবাহিকতায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শনিবার শপথ নিয়েছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের ডেপুটি বা উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব (৬১)। এর মধ্য দিয়ে তিনি হলেন-দেশটির ৯ম প্রধানমন্ত্রী। মালয়েশিয়ার দ্য স্টার অনলাইন বলছে, এত দ্রুত ভাগ্য পাল্টে যাবে তা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। মাত্র ৪৬ দিন আগে ৭ই জুলাই তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। আর এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে সবচেয়ে কম সময় ক্ষমতায় থেকে পদত্যাগ করা মুহিদ্দিন ইয়াসিনের সরকার যখন ধসে পড়ে, তখন তিনিও দেশটিতে সবচেয়ে কম সময় ক্ষমতায় থাকা উপ-প্রধানমন্ত্রীর ইতিহাস গড়েন।
গত ১৬ই আগস্ট রাজা সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমেদ শাহের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন।
এরপর তাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে রেখে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেন রাজা। তিনি তাদের মতামত শোনার পর বেছে নেন ৬১ বছর বয়সী ইসমাইল সাবরিকে। পার্লামেন্টের ১১৪ জন সদস্য তাকে অনুমোদন করার পর রাজা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শনিবার বিকেলে তিনি জাতীয় প্রাসাদে শপথ গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনকে (উমনো) ক্ষমতায় আনছেন তিনি। তিনি এই দলের নেতা। ১৯৫৭ সালে বৃটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এ পর্যন্ত মালয়েশিয়া শাসন করছে এই দলটি। কিন্তু মাঝে ছন্দপতন ঘটে ২০১৮ সালে। ওই নির্বাচনে ড. মাহাথির মোহাম্মদ ও আনোয়ার ইব্রাহিমের জোটের কাছে পরাস্ত হয় তারা। আবার তারা হারানো মসনদ ফিরে পাচ্ছেন।
সুলতান আবদুল্লাহ এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেছেন, ইসমাইল সাবরিকে নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক টালমাতাল অবস্থার ইতি ঘটবে। এতে তিনি আইনপ্রণেতা বা পার্লামেন্ট সদস্যদেরকে তাদের রাজনৈতিক মতবিরোধ সরিয়ে রেখে করোনা মহামারির ভয়াবহতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব তাসমানিয়ার এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জেমস চিন বলেন, ইসমাইল সাবরিকে নিয়োগ দেয়া অপ্রত্যাশিত ছিল না। এর মধ্য দিয়ে আবার চালকের আসনে বসলো উমনো। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় সরকার গঠন করতে হলে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ১১১ জন পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন পেতে হয়। সেখানে ইসমাইল সাবরি পেয়েছেন ১১৪ জনের সমর্থন।