অনলাইন ডেস্ক : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ফের হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় বহিরাগতসহ ছাত্রলীগের প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে এ হামলা হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা শুরু করলেও এ সময় উপাচার্য ভবন আশ্রয় নেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলাকারীদের প্রায় সবার মাথায়ই হেলমেট ও হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। হামলার মাঝে হঠাৎ করেই তাদের দুটি পেট্রলবোমাও ছুড়তে দেখা গেছে। পরে শিক্ষার্থীরা হামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উপাচার্যের বাসভবনে আশ্রয় নেন। তবে তাতেও রক্ষা হয়নি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী বের হলে হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চলে যান। কিন্তু এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে। ফলে তিনজন সাংবাদিকসহ ছয় শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য উপস্থিত থাকা অবস্থাতেই তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে গুলি ছোড়ে পুলিশ।
এদিকে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যখন পরিস্থিতির অবনতি মনে হয়েছে, তখনই পুলিশ অ্যাকশনে গিয়েছে। এখানে কোনো শ্রেণিকে আমরা আলাদা সুবিধা করে দেইনি।
এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আওলাদ হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন। এমনকি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার আহত হয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে সেবা নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. অমিতাভ জানান, আমি ৮ টার সময়ে এসে অন্তত ২০-৩০ জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পেয়েছি৷ রাত সাড়ে ৮টায় মেডিক্যাল সেন্টারে সর্বশেষ তথ্যমতে, অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে, গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তত ২০-২৫ জনকে সাভারের এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু হল এলাকায় আসলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আগে থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে প্রস্তুত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আগে থেকে জানা সত্ত্বেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে৷