অনলাইন ডেস্ক : মদ্যপানে বছরে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) মঙ্গলবার (২৫ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মৃত্যুর হার কিছুটা কমেছে। তবুও এই মৃত্যুর হার কাম্য নয়।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ২০ জন মদ্যপায়ীর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। মদ্যপানে গাড়ি চালানো, মদসংক্রান্ত সহিংসতাসহ নানা রোগ-ব্যাধির কারণে তাদের মৃত্যু হয়ে থাকে। ২০১৯ সালে মদ্যপানের কারণে ২৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যা ওই বছরে মোট মৃত্যুর ৪.৭ শতাংশ।
এই মৃতদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই পুরুষ। ডাব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস বলেছেন, মদ্যপানে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। শুধু তা-ই না, দীর্ঘস্থায়ী রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ায়। খুবই দুঃখজনক, এ কারণে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে মদ্যপানে মৃত্যুর হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
ডাব্লিউএইচও বলেছে, ২০১৯ সালে মদ্যপানে ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী ১৩ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মদ্যপানে লিভারের সিরোসিস এবং ক্যান্সারসহ বেশ কয়েকটি রোগ হয়ে থাকে। ২০১৯ সালে মদ্যপানে মোট মৃত্যুর মধ্যে ১৬ লাখ মানুষ এ ধরনের রোগে মারা গেছে।
এদের মধ্যে চার লাখ ৭৪ হাজার কার্ডিওভাসকুলার রোগ, চার লাখ এক হাজার ক্যান্সার এবং সাত লাখ ২৪ হাজার সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্নভাবে মারা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মদ্যপানে যক্ষ্মা, এইচআইভি ও নিউমোনিয়ার মতো সংক্রামক রোগগুলো মারাত্মক হয়ে ওঠে। ২০১৯ সালে আনুমানিক দুই কোটি ৯০ লাখ মানুষ মদ্যপানের সঙ্গে জড়িত ছিল। যা বিশ্ব জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী মাথাপিছু মদ্যপান সামান্য কমে ৫.৫ লিটার হয়েছে। যা নয় বছর আগে ৫.৭ লিটার ছিল। বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ১৫ বছর বয়সী পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে মধ্যপানে বিরত থাকে।
ইউরোপীয়রা মাথাপিছু ৯.২ লিটার মদ্যপান করে থাকে। আর মার্কিনরা ৭.৫ লিটার। এদিকে উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে সবচেয়ে কম মদ্যপান করা হয়।
২০১৯ সালে যারা মদ্যপান করেছে তারা প্রতিদিন গড়ে ২৭ গ্রাম ইথানল গ্রহণ করেছে। যা দুই গ্লাস ওয়াইন বা দুটি ছোট বোতল বিয়ারের সমতুল্য।
বিশ্বব্যাপী ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৩.৫ শতাংশকে বর্তমান মদ্যপায়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই বয়সী মদ্যপায়ী ইউরোপে ৪৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
সূত্র : এএফপি