সোনা কান্তি বড়ুয়া : বাংলাভাষা বৌদ্ধ ত্রিপিটকের পালিভাষার বিবর্তিত রূপ এবং বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে হিন্দু রাজনীতির ভারত সরকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা ভাষার সার্বভৌমত্বকে স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে গণ্য না করে আমাদের বাংলা ভাষাকে দেবনাগড়ির অনুসারী করে রেখেছে। ভারতের স্বাধীনতা কি শুধু ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ধর্মের দেবনাগড়ি বর্ণমালার জন্য? ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলা ভাষার ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম নিয়ে হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকারের ভয় কেন? সম্রাট অশোকের শিলালিপিতে পালি ভাষার পালি(ব্রাহ্মী) বর্ণমালা (অক্ষর) থেকে দেবনাগড়ি বর্ণমালার উৎপত্তি। ইউনিকোড যদি বাংলাকে বাংলার মতো দেখে এই সমস্যাগুলো ভারত সরকার সমাধান করে ফেলত, তাহলে এ সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতো না। এই ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম আমাদের বাংলা ভাষায় জটিল অবস্থার সৃষ্টি করে রেখেছে এবং এটি একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে গণ্য না করে ভারত সরকার আমাদের বাংলা ভাষাকে দেবনাগড়ির অনুসারী করে রেখেছে। এতে আমাদের বাংলা ভাষা বিপুল ক্ষতি হয়েছে এবং ভারত সরকার বাঙালিদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। এ জন্যই এখনো আমাদের নোক্তা নিয়ে যুদ্ধ করে বে ড়াতে হয়। অথচ বাংলা বর্ণে কোনো নোক্তা নেই।
ভারত সরকার বাংলা ভাষাকে একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে গণ্য না করে ভারত সরকার আমাদের বাংলা ভাষাকে দেবনাগড়ির অনুসারী করে রেখেছে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বই জয় বাংলা! অভিশপ্ত বাংলা ভাষাকে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ভারত সরকার গ্রাসকরে ফেলেছে হিন্দুরাজনীতি ইসলামিক হিজরি সালকে (১৪৪৫) বিকৃত করে ১৪৩০ বঙ্গাব্দ করেছে!
ভারতে ধর্মের নামে হিন্দু সর্বস্ব রাজনীতি কেন? ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলালিপি ব্যবহারের সংকট ও সমাধান নিয়ে অংশীজনের উপস্থিতিতে বিভিন্ন সংলাপ ও নীতি সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলোচনায় বেরিয়ে আসছে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাযৌক্তিক সমস্যাটার পেছনে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের ভ‚মিকা রয়েছে। বাংলা ভাষায় ডিজিটাল দুনিয়ার ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান! বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাযৌক্তিক সমস্যাটার পেছনে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের ভ‚মিকা রয়েছে। বাংলা ভাষার প্রথম বই চর্যাপদের বঙ্গাব্দ ও ভারতের জাতীয় পতাকায় বৌদ্ধ ধর্মের বিশ্বমানবতা, ভারতীয় স্বাধীনতার সংবিধানের কাছে পরাজিত হিন্দু রাজনীতির দেবনাগড়ি বর্ণমালার রাজনীতি এবং হিন্দু জাতিভেদ প্রথার ধর্মান্ধ রাজনীতি! বাংলা! বাংলা ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে ভারত সরকারের দেবনাগড়ির চ্যালেঞ্জ! বাংলাভাষা পালিভাষার বিবর্তিত রূপ এবং গৌতমবুদ্ধ বাংলাভাষা সহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা ব্রাহ্মণদের হাত থেকে রক্ষা করেন (দেশ, কোলকাতা ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৯২)! বৌদ্ধদের বুদ্ধগয়া কেড়ে নিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রতারণার রাজনীতিতে বৌদ্ধদের ভারত ভ‚মি ও দেশ দখল করার নাম হিন্দু ধর্ম! অহিংসা মানুষের ধর্ম এবং জাতিভেদ প্রথায় হিংসার নাম হিন্দুধর্ম!
প্রসঙ্গত: হিন্দু শাসক শশাঙ্ক, (630 A.D.) আদি শঙ্করাচার্য্য (830 A.D.) এবং কুমারিল ভট্ট ফতোয়া দিলেন, বৌদ্ধ মাত্রই বধ্য বা বৌদ্ধদেরকে হত্যা কর (পৃষ্ঠা ১২, দেশ, কলিকাতা, ৪ মে, ২০০১)।” ভারতে বৌদ্ধদের সমাধির উপরে হিন্দুস্থান প্রতিষ্ঠিত হল। ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রতারণার রাজনীতিতে হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধ ত্রিপিটকের পালি বর্ণমালাকে ব্রাহ্মী বর্ণমালা করেছিল! হিন্দু রাষ্ট্রশক্তি বাংলা ভাষার প্রথম বই বৌদ্ধ চর্যাপদ কে নিশ্চিহ্ন করে হিন্দু ধর্মকে মহিমান্বিত করতে ১৪৪৪ হিজরিতে ১৪২৯ বঙ্গাব্দ করেছে। ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধ ত্রিপিটকের পালি বর্ণমালাকে ব্রাহ্মী বর্ণমালা করেছিল! ব্রাহ্মণ নিয়ন্ত্রিত সমাজে মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচার করার মানসে বৌদ্ধধর্মের প্রয়োজন আজও বিরাজমান।
গৌতমবুদ্ধকে বাদ দিয়ে বঙ্গাব্দ শুরু হল কেন? বাংলাদেশে মাটির নীচে, উপরে, ঘরে ও বাইরে বুদ্ধমূর্তি বিরাজমান অথচ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের চরম বিকৃতির মতো বুদ্ধাব্দ বাদ দিয়ে তৎকালিন হিন্দু ও মুসলমান শাসকগণ বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন প্রচার করেছিলেন। আমরা সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতায় শ্রীলঙ্কা বিজয়ী সর্বপ্রথম বঙ্গবীর বিজয় সিংহ সম্বন্ধে পড়েছি , যিনি ২৬০০ বছর পূর্বে শ্রীলংকা জয় করে “সিংহল” নামে রাজ্য শাসন করতেন।
গৌতমবুদ্ধের শিক্ষা প্রচারে পৃথিবীর সর্বপ্রথম বাংলা বইয়ের নাম “চর্যাপদ।” এই বইয়ের অনুবাদ তিব্বতী ভাষায় বিরাজমান। বিশ্বশান্তি ও বৌদ্ধধর্ম প্রচারে একাদশ শতাব্দীতে অতীশ দীপংকর তিব্বত গমন করেন। তবে হিন্দু শাসক ও পন্ডিতগণ বাংলা সন ও বর্ণমালা আলোকিত বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি। মীরজাফরের সাথে ইংরাজ শাসদের চক্রান্তের মতো সেন রাজার রাষ্ট্রধর্মের মহামন্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতায় বখতিয়ার খিলজির বাংলা জয় এবং প্রাচীন বাংলাদেশের বৌদ্ধগণ মুসলমান হয়েছিলেন!
প্রায় ২৬০০ বছর পূর্বে রাজপুত্র সিদ্ধার্থ (গৌতমবুদ্ধ) বাল্যকালে যে বাংলা লিপি অধ্যয়ন করেছিলেন এর ঐতিহাসিক প্রমান বাংলা বিশ্বকোষের ১৩শ ভাগ, ৬৫ পৃষ্ঠায় সগৌরবে লিপিবদ্ধ আছে। ১৯৪৯ এর বুদ্ধগয়া টেম্পল ম্যানেজম্যান্ট অ্যাক্টে চারজন বৌদ্ধসদস্য, হিন্দু জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটসহ চার হিন্দু সদস্য (৫ জন হিন্দু সদস্য), ম্যানেজম্যান্ট কমিটি নিয়ে বুদ্ধমূর্তির সম্মুখে শিবলিঙ্গ সরিয়ে বৌদ্ধ বাতাবরন সৃষ্ঠির প্রয়াস ছিল। কিন্তু বিধিবাম, উক্ত শিবলিঙ্গ সরিয়ে যেই গর্ত সৃষ্টি হয়েছে সেই গর্তকে ঘিরে ত্যাঁদড় হিন্দু মৌলবাদী গোষ্ঠি বুদ্ধমূর্তির সামনের জায়গা দখল করে সকাল বিকাল গর্তের ভেতরে ও বাইরে সিন্দুর, ফুল, ফল, ধূপ বাতি সহ বিভিন্ন নৈবেদ্য দিয়ে হিন্দুধর্মের প্রার্থনা মন্ত্র এবং হিন্দু বিবাহ অনুষ্ঠানসমূহের সুত্রপাত হয়।
রাম মন্দির আন্দোলনের উত্তাল ঢেউয়ের মাথায় ১৯৯২ সালে ৬ই ডিসেম্বর প্রায় দুই হাজার অপাপবিদ্ধ মানুষ হত্যা করা হয়েছিল এবং বাবরি মসজিদ ভেঙে সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের বিচার না হলে তাদের ঔদ্ধত্য ভারত জাতিকে নষ্ট করে দেবে! হিন্দু যেই মানব, মুসলমানও সেই মানব। মানুষ মানুষকে হিংসা করা আইনত: দন্ডনীয়! ভারতীয় হিন্দু পন্ডিতগণ সম্রাট আকরের আমলে ‘আল্লাহ উপনিষদ’ রচনা করে কি ইসলাম ধর্মকে হিন্দুরাজনীতির হিন্দুধর্মের লেজুড় বানিয়েছিলেন? আল্লাহ উপনিষদের আলোকে বাবরি মসজিদ ধবংস যজ্ঞ! ‘রামের (GOD) জন্মভ‚মির উপর আল্লাহের (GOD) মসজিদ প্রতিষ্ঠা অন্যায় হলে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে হিন্দুরাজনীতি ‘আল্লাহ উপনিষদ’ রচনা করলো কেন?
রামায়নের ঐতিহাসিক উৎস নিরুপণ করতে গিয়ে পন্ডিত ও ভাষাতত্ত¡বিদ ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয় কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির এক আলোচনা সভায় বলেছেন, “ বৌদ্ধ দশরথ জাতকই রামায়নের উৎস ( দৈনিক বসুমতি, কলকাতা, ২ মার্চ ১৯৭৮ ইং)।” দেশ আনন্দবাজার পত্রিকায় হিন্দুরাজনীতির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ ঔদ্ধত্য এবং আনন্দবাজার পত্রিকার (সম্পাদকীয়, ২২ আগষ্ট, ১৯৯৩) মতে, … সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কেমন করিয়া ভুলিয়া গেলেন যে, একদা রাশি রাশি বৌদ্ধ ধর্মস্থান ধ্বংস করিয়া একদিন গড়িয়া উঠিয়াছিল রাশি রাশি হিন্দু মন্দির। তাঁহারা কি জানেন, হিন্দুর কাছে অতি পবিত্র পুরীর মন্দিরের প্রাক্ ইতিহাস সম্পর্কে কানিংহাম কিংবা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের অভিমত? তাই বলিতেছিলাম , অযোধ্যা একটি বৃহৎ প্রশ্ন বটে, কিন্তু নিতান্তই মনগড়া এক নির্বোধ প্রশ্ন।”
গৌতমবুদ্ধ তাঁর ভিক্ষুসংঘকে উপদেশ প্রসঙ্গে দশরথ জাতক (রামায়ন) সমাধান করতে গিয়ে বলেছেন, “তখন (পূর্ব জন্মে) শুদ্ধোধন রাজা ছিলেন দশরথ মহারাজা, মহামায়া ছিলেন সে মাতা, রাহুলমাতা (গোপা) ছিলেন রাজকুমারী সীতা, আনন্দ ছিলেন রাজপুত্র ভরত, সারীপুত্র ছিলেন রাজপুত্র লক্ষন, বুদ্ধ পরিষদ সে পরিষদ, আমি (বুদ্ধ) ছিলাম সে রাম পন্ডিত (দশরথ জাতক নম্বর ৪৬১, জাতক অট্টকথা, পালি টেক্সট সোসাইটি, লন্ডন)। ভারতীয় টিভি চ্যানেলে বাঙালি বৌদ্ধ বীর বিজয় সিংহের শ্রীলঙ্কা জয় দেখানো হয়নি কেন? ব্রাহ্মণ্যবাদের জঘন্য চাতুরীর ইতিহাস লিখতে গেলে একটি মহাভারত লিখতে হয়। বৌদ্ধ প্রধান দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক মহানগরীর বিখ্যাত রাজকীয় এমারেল্ড (মরকত মনি) বুদ্ধ মন্দিরের চারিদিক জুড়ে আছে দশরথ জাতকে রামকীর্তির অভিনব চিত্রশালা।
বৌদ্ধ জাতকে বাসুদেব বা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জিবনি! ঘটজাতক (৪৫৪) বা বাসুদেব জাতকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাতার নাম দেবগর্বা (দেবকি), পিতার নাম রাজপুত্র UPASAGAR, শ্রীকৃষ্ণের পালক মাতার নাম নন্দগোপা (যশোদা) এবং রাজধানীর নাম দোয়ারাবতী (দারিকা)। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম বাসুদেব, তাঁর ভাইয়ের নাম বলদেব, ঘটসহ দশভাই ছিলেন। জরা নামক ব্যায়াধের আঘাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যু হয়েছিল। নলিনীকা জাতক বা শকুন্তলা। সম্ভব জাতক! সম্ভব জাতক (৫১৫) ইন্দ্রপ্রস্থ নগরে ধনঞ্জয় কৌরব্য নামে (Generation of King Judhidtira) রাজা ছিলেন। কুণালজাতকে দ্রৌপদী বা কৃষ্ণার পঞ্চস্বামী ছিল। মহাপন্ডিত ঈশানচন্দ্র ঘোষ বৌদ্ধ সাহিত্যের ছয়খন্ড জাতক লিখে অমর হয়ে আছেন। রাজা হরিশ্চন্দ্রের কাহিনী জাতকে (৫৪৭) রাজা বেস্সান্তর! বৌদ্ধগণ ভারতে হিন্দু রাজনীতির দীর্ঘ সংগ্রামের অগ্নিপথ থেকে ব্রাহ্মণ্যবাদের জঘন্য চাতুরীর ইতিহাস লিখতে গেলে একটি মহাভারত লিখতে হয়।
হিন্দু রাজনীতি বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের ২৫৬৭ বাংলা সালকে (বুদ্ধাব্দ) বাদ দিয়ে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে ‘আল্লাহ উপনিষদ’ রচনা করলো এবং বঙ্গাব্দে ইসলামিক হিজরি সালকে (১৪৪৫ বিকৃত করে ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বানিয়েছিল (ONLY IN BENGALI YEAR, NOT IN THE GUJRATI, PUNJABI, TAMIL, TELEGU, SINDHI,AND OTHER INDIAN LANGUAGES YEAR). হিন্দুরাজনীতির ভারত সরকার বাংলা ভাষাকে দেবনাগড়ির অনুসারী করে রেখে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন, বাংলা একাডেমীর অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সন্মানিত অতিথি হিসেবে “ভাষা চেতনা বাঙালির গর্বের বিষয়” শীর্ষক ভাষণে বলে ন, “অনেকেই মাঝে মধ্যেই প্রশ্ন করে যে ১৪০০ সাল হলো কী ভাবে। এখন ১৪১৭ তে কী ভাবে এলো, ১৪১৭ হচ্ছে মক্কা থেকে মদীনায় মোহাম্মদের (সা.) যাওয়ার দিন থেকে গণনার স্মারক। প্রথম দিকে লুনার এবং তারপরে সোলার ক্যালেন্ডার এই দুটি মিলিয়ে করা‘ (সাপ্তাহিক আজকালে পৃষ্ঠা ১৩, ফেব্র“য়ারী ৪, ২০১১ (সাল, টরন্টো)’!
সম্রাট অশোকের শিলালিপি পালি ভাষায় পালি (ব্রাহ্মী) অক্ষরে লেখা আছে এবং উক্ত পালি ( ব্রাহ্মী ) লিপি (বর্ণমালা) থেকে বাংলা, দেবনাগড়ি, সংস্কৃত, থাই বর্ণমালা সহ ৩৫ টি ভাষায় বর্ণমালার উৎপত্তি। বাংলা ব্যাকরণের সাথে পালি, থাই, বার্মা, কম্বোডিয়া, লাওস ও শ্রীলংকার ব্যাকরণের সাদৃশ্য বিদ্যমান! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, “প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র, দীন, একাকী, কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ। সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হয় বৃহৎ। সেদিন সে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ।”
হিন্দুধর্মের পূর্বে মহেঞ্জোদারোর বৌদ্ধ ইতিহাস! সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা এবং ভারত সরকার গৌতমবুদ্ধের ঐতিহাসিক পবিত্র জন্মভ‚মি নেপালের ‘লুম্বিনী’ ধ্বংস করতে উদ্যত! হিংসা ও লোভের নাম ধর্ম নয়। ভারত সরকার যখন দানব (ও দান্দা নদী, নেপালের দক্ষিন পশ্চিম সীমান্তে) নদীতে বাঁধ দিয়ে দানব হয়ে বুদ্ধের জন্মভ‚মি ধ্বংস করতে উদ্যত তখন নেপাল এবং চীন সরকার লুম্বিনী উদ্যান রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর!
(Bengali Times, October 27, 2011, Toronto, Himalayan Times in Kathmandu and Ambedkar News Reporter). বুদ্ধের জন্মভ‚মি লুম্বিনী নিয়ে হিন্দুরাজনীতির ভয় কেন? দেশ পত্রিকার লেখক দীপঙ্কর রায়ের মতে, “গীতায় একজন বুদ্ধিমান আরেকজন অপেক্ষাকৃত অল্প বুদ্ধিমানকে হত্যায় প্ররোচিত করছেন। এই প্ররোচনার ফলে মানুষ নিহত হয়েছিলেন অগণ্য। এর পর হাজার বছর ধরে সেই প্ররোচনামূলক গ্রন্থটিকে একটি জাতির মহান গ্রন্থ বলে জাহির করে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি অর্থাৎ কায়েমি স্বার্থ কে টিকিয়ে রাখার চেষ্ঠা চলেছে (দেশ, কোলকাতা, জুন ২২, ১৯৯১)।”
বৌদ্ধ DASARATHA মহা জাতকের মহা অরণ্যে রামায়ন প্রসঙ্গ! ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রতারণার রাজনীতিতে হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধ ত্রিপিটকের পালি বর্ণমালাকে নিশ্চিহ্ন করে ব্রাহ্মণ্যবাদী ব্রাহ্মী বর্ণমালা করে রামায়নের অযোধ্যা কান্ডের (অধ্যায়) বত্রিশ নম্বর শ্লোকে বুদ্ধকে (যথাহি চৌর স তথাহি বুদ্ধ, তথাগতং নাস্তিকমত্র বিদ্ধি।) চোর বলে গালাগাল করার পর কি সেই মহাকাব্যটি কি বৌদ্ধ জাতকের আগে রচিত?
হিন্দুত্ববাদী হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধদের সার্বভৌমত্বকে নিশ্চিহ্ন করে বৌদ্ধদের সমাধির উপরে হিন্দুস্থান প্রতিষ্ঠিত করেছিল। ধর্মান্ধ হিন্দুরাজনীতি এমন এক অভিশাপ ধর্মান্ধ জটিল ধাঁধা, যা থেকে নিস্তার পাইনি মানবতাবাদী বৌদ্ধময় ভারতবর্ষ! ব্রাহ্মণ্ পুরোহিত ও হিন্দু রাজ শক্তিই হিংস্র জীব-জানোয়ারের চেয়েও ভয়ঙ্কর মানুষরূপী কোন জীব। নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের বিজেপি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তিশালী জাতিরাষ্ট্র গঠনের কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের ভোটব্যাঙ্কের মুখ চেয়ে জাতপাত নিয়ে এক বিচিত্র ‘কাট অ্যান্ড পেস্ট’ রণকৌশল গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে। আগে এটা ছিল শুধু হিন্দু-মুসলমান বিতর্ক। এখন হয়েছে ব্রাহ্মণ দলিত বিতর্ক।”
ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলালিপি ব্যবহারের সংকট ও সমাধান নিয়ে অংশীজনের উপস্হিতিতে বিভিন্ন সংলাপ ও নীতি সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলোচনায় বেরিয়ে আসছে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাযৌক্তিক সমস্যাটার পেছনে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের ভ‚মিকা রয়েছে। অভিশপ্ত বাংলা ভাষাকে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি গ্রাস করে ফেলেছে। ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের ভ‚মিকায় DEAR BANGLADESH GOVERNMENT AND WEST BENGAL GOVERNMENT, PLEASE THINK ABOUT IT AND TRY YOUR BEST TO SOLVE IT SOON. বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বই জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু! ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধ ত্রিপিটকের পালি বর্ণমালা কে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুরাজনীতি ব্রাহ্মী বর্ণমালা করেছিল! বাংলা ভাষা পালিভাষার বিবর্তিত রূপ এবং গৌতমবুদ্ধ বাংলা ভাষাসহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা ব্রাহ্মণদের হাত থেকে রক্ষা করেন (দেশ, কোলকাতা ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ এবং নয়া দিগন্ত, সোনা কান্তি বড়ুয়া, ২৫ আগষ্ট ২০১০)।
ব্রাহ্মণরা নিজেদের সংরক্ষণকে ধর্ম বলে থাকে। ধর্মকে আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে জুড়ে অন্ধবিশ্বাসের সৃষ্টি করায়। সেইজন্য তাদের সংরক্ষণের উপর আলোচনা হয় না। অপরদিকে বহুজনের সাংবিধানিক অধিকারকে (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) সংরক্ষণ বলে তাকে আলোচনার প্রধান বিষয় রূপে উপস্থাপন করে থাকে এবং সমস্ত প্রকার শক্তিসামর্থ্য লাগিয়ে তার বিরোধিতা করে থাকে। ধর্মরূপ চাদরের মধ্যে ব্রাহ্মণের সংরক্ষণ সুরক্ষিত হয়ে আছে।
ভারতে বুদ্ধকে হিন্দুকরণ এবং ভারত দেশের বার্ষিক আয় ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। ভারতের মন্দিরগুলির বার্ষিক আয় ২২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি, অর্থাৎ দেশের আর্থিক অবস্থানের চেয়ে ঢের বেশি। ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সোনার পরিমাণ হচ্ছে ৩২৫০ টন। কিন্তু দেশের মন্দিরগুলিতে ৩০ হাজার টন সোনা পড়ে আছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির কথা বাদ দিন, সর্বশক্তিশালী আমেরিকার কাছেও এত পরিমাণে সোনা নেই।
দেশের উপর বিদেশি দেশগুলির ১৫ লক্ষ কোটি টাকা দেনা রয়েছে। কিন্তু কেবল কেরলের পদ্মনাভ মন্দিরে ২৫ লক্ষ কোটির বেশি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। অর্থাৎ দেশের একটি মন্দির দেশের সমস্ত েৈবিদশিক ঋণ শোধ করতে সক্ষম। সেইরূপ শিরিড সাই, তিরুপতি, বালাজী, সিদ্ধিবিনায়ক ও জগন্নাথের মতো বড়ো বড়ো বাজেট বিশিষ্ট মন্দিরগুলিতে অমাপা ধনভাণ্ডার রয়েছে। তা ছাড়া ভ‚সম্পত্তি, হীরা, মোতি, মাণিক্য, সোনা, রুপার হিসাব কষতে ক্যালকুলেটরও ব্যর্থ হবে। এইসমস্ত মন্দির এবং এর সম্পত্তিতে শত শত বৎসর ধরে অধিকার কায়েম করে থাকা প্রথম সংরক্ষণ প্রাপ্ত বর্গ হচ্ছে ব্রাহ্মণ।
হিন্দুরাজনীতি চীন এবং নেপালের অদ্বিতীয় বুদ্ধভক্তিকে বিকৃত করে ভারতীয় সংবাদপত্র কেচ (Catch News ১১ই মে, ২০১৬) নিউজ’ গৌতমবুদ্ধের সম্মুখে চীনের বুদ্ধ বন্দনাকে অপমানিত করে ড্রাগনের (China) ছবির মুখে নেপালের তিনটি পতাকা জুড়ে দিয়েছে। আমরা বৌদ্ধগণ সদাশয় ভারত সরকারের নিকট Catch News (১১ই মে, ২০১৬) রচিত, “Buddha in a diplomatic Jam” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী র কার্টুনে মুষ্ঠিযুদ্ধ” শীর্ষক হিন্দুরাজনীতির নামে (Catch News) উক্ত কার্টুনের মহাভারতীয় ভাষার বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারের আশা রাখি। কেন এই হিংসাত্মক আচরণ তা সমাজবিদগণ বিশ্লেষন করবেন।
সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা চীন এবং নেপাল সরকারের বুদ্ধ জন্মভ‚মি লুম্বিনী উদ্যান এবং বুদ্ধভক্তিকে বিকৃত করে ভারতীয় সংবাদপত্র কেচ (Catch) নিউজ’ গৌতমবুদ্ধের সম্মুখে চীনের বুদ্ধ বন্দনাকে অপমানিত করে ড্রাগনের (China) ছবির মুখে ণেপালের তিনটি পতাকা জুরে দিয়েছে। এই ঐতিহাসিক পূঞ্জীভ‚ত দুঃখ ও বেদনায় বৌদ্ধগণ কেমনে রাখে আঁখি বারি চাপিয়া! আমরা বৌদ্ধগণ সদাশয় ভারত সরকারের নিকট Catch News উক্ত কার্টুনের ভাষার বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারের আশা রাখি।
অবলোকিতেশ্বর বোধিসত্বকে শিব বানায়ে বুদ্ধগয়ায় শিবলিঙ্গ প্রতিষ্টা করার পর হিন্দু জঙ্গি ও রাজনৈতিক পান্ডারা বুদ্ধগয়া দখল করার পর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার সাহস পেয়েছে। এইজন্যে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া মানবিক অপরাধ। আলকায়দার চেয়ে ও ভয়ঙ্কর হিন্দু মৌলবাদী নেতাগণ। হিন্দু মৌলবাদী সেনাবাহিনী সন্ন্যাসীর রুপ ধরে শত শত বছর পর্যন্ত ত্রিশূল দিয়ে সর্বত্র ভারতীয় বৌদ্ধগণকে হত্যা করেছে। রাজসভায় ঘোরতোর গালি দেবার অপরাধে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজের হাতের যন্ত্র নর হত্যার চক্র দিয়ে শিশুপালকে হত্যা করেছেন। আইনকে নিজের হাতে তুলে নেওয়া নৈতিক অপরাধ।
বৈদিকপূর্ব চক্রবর্তি রাজর্ষি মহেঞ্জোদারো বোধিসত্তে¡র প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন মহেঞ্জোদারো মিউজিয়ামে বিরাজমান। হিন্দুত্ববাদীদের বাবরি মসজিদ ও বুদ্ধ জন্মভ‚মি ধ্বংস প্রসঙ্গ! প্রাগৈতিহাসিক বৌদ্ধদর্শনের বিভিন্ন প্রসঙ্গ বৈদিক সাহিত্যে বিরাজমান এবং প্রাচীন উপনিষদের বিভিন্ন উপদেশ বৌদ্ধধর্ম থেকে নকল করা হয়েছে বলে গৌতমবুদ্ধ ত্রিপিটকের (মধ্যম নিকায়ের ৭৫ নন্বর) মাগন্দিয় সূত্রে ব্যাখ্যা করেছেন। বৈদিক উপনিষদ সাহিত্য সহ বিভিন্ন পুরাণ কাহিনীতে বৌদ্ধধর্মকে নকল করে হিন্দুধর্ম করা হয়েছে! বৌদ্ধ দশরথ জাতকে রামায়ন প্রসঙ্গ!
বৈদিক রাজা ইন্দ্র প্রাগৈতিহাসিক বৌদ্ধ নগরদ্বয় মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা ধ্বংস করার পর প্রাচীন ভারতে বৈদিক সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন (লেখক স্বপন বিশ্বাসের লেখা ইংরেজি বই ‘বৌদ্ধধর্ম’ মহেঞ্জোদারো হরপ্পার ধমর্, কলিকাতা ১৯৯৯), এবং বৌদ্ধ ত্রিপিটকের মধ্যম নিকায়ের মাগন্দিয় সূত্রে (সূত্র নম্বর: ১৭৫) গৌতমবুদ্ধ ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “পূর্বের বুদ্ধগণ আরোগ্য পরম লাভ এবং নির্বান পরম সুখ সম্বন্ধে যেই শিক্ষা দিয়েছিলেন বর্তমানে সেই শিক্ষা সমূদয় জনসাধারনের মধ্যে প্রচলিত হয়ে রয়েছে।”
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি !