অনলাইন ডেস্ক : গত বছরের শেষ ছয় মাসে ভারতে মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা দল ইন্ডিয়া হেইট ল্যাব। দলটির গবেষকরা মনে করছেন, গত তিন মাসে মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা বৃদ্ধিতে ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ গবেষণা তথ্য জানায় ইন্ডিয়া হেইট ল্যাব।
ইন্ডিয়া হেইট ল্যাবের প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতে ২০২৩ সালে মুসলিমদের উদ্দেশে ৬৬৮টি বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৫৫ টি বক্তব্য নথিভুক্ত হয় বছরের প্রথমার্ধে। বাকি ৪১৩টি বক্তব্য দেওয়া হয়েছে ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিদ্বেষমূলক বক্তব্যগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশ বা ৪৯৮টি ঘটনা ঘটেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত রাজ্যগুলোতে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের রাজ্যগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসলামপন্থি দল হামাসের ৭ অক্টোবরের ইজরায়েল আক্রমণের পর গাজায় ইজরায়েলি অভিযানকে কেন্দ্র করে ভারতীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ৪১টি ঘটনা ঘটেছে। যা ২০২৩ সালের আগের মাসগুলোর তুলনায় শেষ তিন মাসে এসে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।
ইন্ডিয়া হেইট ল্যাব জানিয়েছে, প্রকাশিত প্রতিবেদনে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলগুলোর অনলাইন কার্যকলাপ নজরদারির পাশাপাশি, তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ঘৃণাত্মক বক্তব্যের যাচাইকৃত ভিডিও ও ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট করা বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোর তথ্য সংকলিত হয়েছে।
গবেষণা দলটি দাবি করেছে, তারা প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য যাচাইয়ে জাতিসংঘের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের সংজ্ঞা ব্যবহার করেছে। সংজ্ঞা অনুযায়ী– ‘ধর্ম, জাতি, জাতীয়তা, জাতি বা লিঙ্গ বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি পক্ষপাতমূলক বা বৈষম্যমূলক ভাষা বিদ্বেষমূলক আচরণ হিসেবে গণ্য হবে।’
অবশ্য তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করার অভিযোগ করছে।
২০১৪ সাল থেকে ভারতের ক্ষমতায় থাকা কট্টর হিন্দু দল বিজেপি ২০২৪ সালের নির্বাচনেও জয়ী হওয়ার আশা করছে।