স্পোর্টস ডেস্ক : সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখলো বাংলাদেশ। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে খেলার ৭৯ মিনিটের মাথায় আনাই মগিনি এগিয়ে দেন বাংলাদেশকে। এই এক গোলই শেষ পর্যন্ত শিরোপা নির্ধারণ করে দেয়।
অভিনন্দন বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, এ জয়ের মাধ্যমে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টিম বাংলাদেশকে বিশেষ মর্যাদা এনে দিয়েছে। এ জয়ের অনুপ্রেরণা নিয়ে বাংলাদেশের নারীরা আগামীতে ফুটবলে আরও এগিয়ে যেতে পারবেন বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে নারীদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই সাফ অনুর্ধ্ব-১৯ ফুটবল। আগের লড়াইয়ে নেপালকে হারিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল বাংলাদেশই। সেবার অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছিল। নাম বদলে এবার সেই টুর্নামেন্টই অনুর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ।
খেলার শুরু থেকেই আক্রমণ করে আসছিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে। তবে বাংলাদেশের ম্যাচের ১৬ মিনিটেই লিড পেতে পারতো। ভারতের গোলরক্ষক ভুল করে গ্রিপে নিতে পারেননি। তহুরার নেয়া শট ভারতের গোলরক্ষক গোললাইন সেভ করে।
বাংলাদেশের ফুটবলারদের দাবি ছিল বল লাইন ক্রস করেছে। রেফারি অবশ্য তার অবস্থানে অনড় থাকেন। রিপ্লেতে অবশ্য দেখা গেছে বল লাইনের ওপর ছিল। ৭৬ মিনিটে অবশ্য বল গোললাইন ক্রস করে জালেও গিয়েছিল। তবে সহকারী রেফারি অফসাইডের পতাকা তুললে সেই গোলটিও বাতিল হয়ে যায়।
ফাইনালে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ক্রসবারও। ২৫ মিনিটে বাংলাদেশের থ্রো ইন থেকে করা আক্রমণ সাইনপোস্টে লেগে ফেরত আসে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের শটও পোস্ট লাগে।
তবে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে বাংলাদেশকে খালি হাতে ফিরতে হয়নি। সেই মহেন্দ্রক্ষণ আসে খেলার ৮০ মিনিটের মাথায়। রিপা ব্যাকহিল পাস করেন। আনাই মুঘিনি বক্সের বাইরে থেকে শট নেন। ভারতের গোলরক্ষক বলের ফ্লাইট বুঝতে পারেননি। তিনি বলে হাত লাগালেও গোল লাইন অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখতে পারেননি। সঙ্গে সঙ্গেই উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো কমলাপুর স্টেডিয়াম।
রাউন্ড রবিন লীগ পর্বে বাংলাদেশ তাদের সূচনা ম্যাচে হিমালয় কন্যা নেপালের সঙ্গে গোলশুন্য ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করলেও আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। ভুটানকে ৬-০ গোলে, শক্তিশালী ভারতকে ১-০ গোলে এবং লীগ পর্বের শেষ ম্যাচে শ্রীলংকাকে ১২-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হিসেবে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ছোটনের শিষ্যরা।
অপরদিকে ভারত শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জয় নিয়ে লীগ পর্ব শুরু করার পর ভুটানকে হারায় ৩-০ গোলে। তবে তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের সঙ্গে আর পেরে উঠেনি উপমহাদেশের এই পাওয়ার হাউজ। হার মেনেছে ১-০ গোলে। লীগের শেষ ম্যাচে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে তারা।
এদিকে টুর্নামেন্টের আরেক শক্তিধর নেপাল স্বাগতিক বাংলাদেশকে গোলশূন্য রুখে দেওয়ার পর শ্রীলঙ্কা ও ভুটানকে হারিয়ে দিয়েছিল যথাক্রমে ৬-০ ও ৪-০ গোলে। কিন্তু শক্তিশালী ভারতের কাছে ১-০ গোলে হেরে যাওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয় গতবারের রানার্সআপরা।