অনলাইন ডেস্ক : শীত মৌসুম শুরুর আগেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। প্রতিদিনই বাতাসের মানের অবনতি এবং তা ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় এবার নয়াদিল্লির সকল প্রাইমারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। অবশ্য স্কুল বন্ধ হলেও শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কাজ চলবে অনলাইনে। এছাড়া ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন দিল্লির পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের কারণে দিল্লির সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে বলে কর্মকর্তারা ঘোষণা দিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের রাজধানীর মুখ্যমন্ত্রী অতিশি মারলেনা সিং বলেছেন, শহরটিকে ঘিরে থাকা ঘন ধোঁয়াশার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস অনলাইনে চলবে।

বিবিসি বলছে, দিল্লি এবং আশপাশের শহরগুলো ব্যাপক মাত্রায় দূষণের কবলে পড়েছে যেটাকে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও দিল্লির বাতাসে সূক্ষ্ম কণার পরিমাণ নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ৫০ গুণেরও বেশি ছিল।

মূলত তাপমাত্রা হ্রাস, ধোঁয়া, ধূলিকণা, বাতাসের কম গতি, যানবাহন থেকে ধোঁয়া নির্গমন এবং ফসলের খড় পোড়ানোর কারণে শীতকালে দিল্লি এবং উত্তর ভারতের রাজ্যগুলো প্রতি বছর ধোঁয়াশার সম্মুখীন হয়ে থাকে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দিল্লির দূষণ ঘিরে উদ্বেগের মধ্যেই শুক্রবার থেকে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে ভারতের এই জাতীয় রাজধানীতে। দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মানের অত্যন্ত অবনতি হওয়ায় এই কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।

দূষণ মোকাবিলায় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই কার্যকর হতে চলেছে তৃতীয় স্তরের সতর্কতা (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৩ বা জিআরএপি ৩)। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণও জারি করা হচ্ছে এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপের আওতায়।

ফলে এখনই প্রয়োজন নেই, এমন নির্মাণের কাজ কিংবা ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে। কমে যাবে রাস্তায় চলাচলকারী বাসের সংখ্যাও। এছাড়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশি মারলেনা জানিয়েছেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত শুক্রবার থেকে দিল্লির সব প্রাথমিক স্কুলে অনলাইন পঠনপাঠন চলবে।

মূলত দিল্লি ও সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু অঞ্চলে দূ‌ষণ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার আগ্রায় ধোঁয়াশা এতটাই বেশি ছিল যে—তাজমহলের প্রবেশদ্বার থেকে সৌধ দেখা যাচ্ছিল না।

দিল্লিতেও ছিল ধোঁয়াশার ঘন চাদর। এই অবস্থায় শুক্রবার থেকে একাধিক কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।