অনলাইন ডেস্ক : ব্রাজিলের একটি বস্তিতে অভিযান চালিয়েছে দেশটির সামরিক পুলিশ। এতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির রাজধানী রিও ডি জেনিরোর সবচেয়ে হিংসাত্মক একটি বস্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।
মূলত হিংসাত্মক ওই বস্তিুটি নিয়ন্ত্রণকারী অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় সামরিক পুলিশ। ব্রাজিলীয় পুলিশের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে রিও ডি জেনিরোর আলেমাও বস্তিতে চালানো এই অভিযানে ভারী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত চারশ সামরিক পুলিশ অংশ নেয়। অভিযানে নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সন্দেহভাজন অপরাধী। তবে নিহতদের বাকি দু’জন হচ্ছেন- একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং অন্য একজন পথচারী।
অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে এই অভিযান বৃহস্পতিবার সারাদিন চলে এবং এ কারণে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িতে আটকে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী বস্তিগুলোতে হামলার পরিকল্পনাকারী অপরাধীদের খুঁজে বের করা এবং গ্রেপ্তার করা।
তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও দিয়া জানিয়েছে, অপরাধীদের অনেকে সামরিক পুলিশের মতো ইউনিফর্ম পরা ছিল, আর এ কারণে তাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। অভিযানে ৪০০ পুলিশ কর্মকর্তার পাশাপাশি ১০টি বুলেট প্রুফ যান এবং চারটি হেলিকপ্টার অংশ নেয়।
অভিযানের সময় স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে আহতদের গাড়িতে তুলতে দেখা গেছে। অবশ্য একাজে পুলিশ কোনো সহায়তা করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।
অ্যানাক্রিম হিউম্যান রাইটস কমিশনের গিলবার্তো সান্তিয়াগো লোপেস বলেছেন, পুলিশ সাহায্য করতে অস্বীকার করেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা নয়, পুলিশের লক্ষ্য ছিল তাদেরকে হত্যা করা। আর তাই অভিযানের সময় তাদের কেউ আহত হলে তারা (পুলিশ) মনে করেছে, তারা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য নয়।
অবশ্য রিও ডি জেনিরোর এ ধরনের জনবহুল বস্তিগুলোতে পুলিশের প্রাণঘাতি অভিযান অস্বাভাবিক কিছু নয়। পুলিশ প্রায়ই এ ধরনের নিস্নআয়ের এলাকাগুলোতে মাদক পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে থাকে।
তবে জনাকীর্ণ বস্তিগুলোতে পুলিশের এই ধরনের অভিযানের ব্যাপক সমালোচনা করে থাকে ব্রাজিলের মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তাদের দাবি, এসব অভিযানের মাধ্যমে অপরাধী চক্রগুলোর খুব বেশি ক্ষতি না হলেও বস্তির বাসিন্দাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।