ড: বাহারুল হক : আমার বাসার কাছেই টেইলর ক্রিক পার্ক ও ট্রেইল। পূর্ব-পশ্চিমে পাঁচ/ছয় কিঃ মিঃ- এর মত লম্বা এই ট্রেইলটি আঁকাবাঁকা সরু টেইলর ক্রিকের দক্ষিণ পারে বেশ সুন্দর করে তৈরি করা হয়েছে। এখানে আছে কিছু পিকনিক স্পট, তবে আমার মনে হয় বাইকিং রানিং যারা করেন মুলতঃ তাদের ইচ্ছা পুরণের উদ্দেশ্যেই এই ট্রেইল তৈরি করা হয়েছে। উইন্টার ব্যাতিরেকে অন্য সিজনে আমি হাঁটতে যাই এই পার্কে। ছোট বড় নানা রকম বৃক্ষের সমাহারে এই জায়গাটি পেয়েছে একটা জঙ্গলের রুপ। আমাকে এ রুপটাই প্রবলভাবে আকর্ষণ করে। সময় সুযোগ হলেই আমি হাঁটার উদ্দেশ্যে ঢুকে পড়ি আমার বাসার কাছে অবস্থিত এই পার্কে। টেইলর ক্রিকের পার ধরে আমি হাঁটি আর দেখে যাই নিরবে টেইলর ক্রিকের জলধারা। প্রায়ই আমার চোখে পড়ে সে দুর্বল জলধারার উপর নিঃশব্দে ভেসে বেড়ানো পাতি হাঁসের উপস্থিতি। তবে প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট ক্রিকভরা জলের উগ্র ধারাও অনেকবার আমার চোখে পড়েছে। সে রুপ ও মন্দ নয়। সে রুপ ও আমি উপভোগ করি।
টেইলর ক্রিক পার্কে ছোট ছোট কয়েকটা ডোবা আছে যে গুলো সারা বছর থাকে পানিতে ভরপুর। ডোবা গুলো কেমন গভীর আমি জানি না, তবে খুব বেশি গভীর বলে মনে হয়না। জুন মাসে শুরু হয় সোনা ব্যাঙের কর্ম তৎপরতা। কী কর্ম? সেই আদি কর্ম। বংশবিস্তারের নিবিড় কর্ম। পুরুষ ব্যাঙগুলো শুরু করে ডাকাডাকি। ডাকাডাকি করে তারা জলাশয়ে তাদের উপস্থিতি মেয়ে ব্যাঙগুলোকে জানান দিয়ে যায়। মেয়ে ব্যাঙগুলো কোন শব্দ করে না। কিন্তু বসেও থাকে না। টেইলর ক্রিক পার্ককে এ সময় আমার মনে হয় বৃন্দাবন গার্ডেন যেখানে রাধা আর কৃষ্ণ মেতে উঠে প্রেমলীলায়। কৃষ্ণের বাঁশির মোহন সুরে মাতোয়ারা হয়ে রাধা যেমন ঘর ছেড়ে ছুটে যায় কদম্ব তলায় তেমনি মেয়ে ব্যাঙগুলোও পুরুষ ব্যাঙের কন্ঠের মোহন শব্দ শুনে আর চুপ করে থাকতে পারেনা; মোহন শব্দের প্রবল টানে ছুটে যায় পুরুষ ব্যাঙের একেবারে কাছে। তারপর——। এবার পিঠের উপর বসা পুরুষ ব্যাঙটি তার দুহাত দিয়ে স্ত্রী ব্যাঙটির বুকের নিন্মাংশে প্রবল চাপ দিতে তাকে। এ চাপের প্রতিফল হিসেবে স্ত্রী ব্যাঙটি ছেড়ে দেয় তার পেটে জমা থাকা সব ডিম। পুরুষ ব্যাঙটি সাথে সাথে পানিতে ভাসমান ঐ ডিমগুলোর উপর ছেড়ে দেয় তার শুক্রাণু। ব্যাস হয়ে যায় নিষেক। এরপর ডিমওয়ালি আর শুক্রাণুওয়ালা কারো আর কোন খবর নাই। ডিমগুলো পড়ে থাকে পানিতে। সময় হলে সেসব ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় ; সেসব বাচ্চা ধীরে ধীরে বড় হয় এবং এক সময় শিশু ব্যাঙে রুপান্তরিত হয়। তাই জুন মাসে আমি ঘন ঘন যাই ক্রিক পার্কে। সেখানে আমি পুরুষ আর স্ত্রী ব্যাঙের কার্যকলাপ দেখি। ডিম দেখি। ব্যাঙাচি দেখি; আর দেখি তাদের শিশু ব্যাঙে রুপান্তরিত হওয়া। কী কঠিন এক কর্ম! অথচ কত সহজে ঘটে যায় প্রকৃতির বিধিবদ্ধ নিয়মে। বংশবিস্তারের স্পৃহা প্রতিটি জীবের অদমনীয় অমোঘ এক স্পৃহা। এ স্পৃহা আছে বলেই জীব বেঁচে আছে। নিজ নিজ বৈশিষ্ট নিয়ে প্রতিটি প্রজাতি টিকে আছে।

স্রষ্টা প্রজনন ক্রিয়া সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন একই প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে। এর কোন ব্যাতিক্রম নাই। সে জন্য একই জলাশয়ে দুই প্রজাতির ব্যাঙ থাকলেও এবং প্রজনন ঋতু এক হলেও এক প্রজাতির ব্যাঙ অন্য প্রজাতির ব্যাঙের সাথে কোন অবস্থাতেই যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হবে না। ওরা সীমা লঙ্ঘন করে না।

সেদিন ও গিয়েছিলাম টেইলর ক্রিক পার্কে। সাথে ছিলেন আমার স্ত্রী। সেদিন আমরা বেশ লম্বা একটা সময় কাটিয়েছি সেই পার্কে। দুপুরের খাওয়াটা সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলাম। পার্কের পুর্ব গেট দিয়ে ঢুকে আমরা হাঁটতে শুরু করলাম বরাবর পশ্চিম দিকে। তিন কিঃমিঃ-এর মত পথ অতিক্রম করার পর ট্রেইলের দক্ষিণ পার্শে দেখা মেলে একটা খুব সুন্দর স্পটের। সেই স্পটে পৌঁছতে হলে কষ্ট করে হেঁটে একটু উপরে উঠতে হয়। ক্রিকের পাশে যে ট্রেইল সে ট্রেইল থেকে ভুমি ক্রমশ উঁচু হয়ে টিলাকৃতি ধারন করে দক্ষিণ পাশে উঁচু ভুমিতে অবস্থিত লোকালয়ের রাস্তার সাথে মিশে গেছে। টিলার চুড়ায় রাস্তার পাশে এক টুকরো সমতল ভুমি। সেটাই টেইলর ক্রিক পার্কের একটা অন্যতম বিশ্রাম স্পট। সেখানে আছে তিনটা বেঞ্চ। একটা পশ্চিমমুখী, একটা পুর্বমুখী, আর তৃতীয় বেঞ্চটা উত্তরমুখী। তিন বেঞ্চের মধ্য খানের ভুমিটুকু পাকা। রোদেলা দিন, ফুরফুরে বাতাস, বেশ ভালো লাগছিল আমাদের। সে স্পটে সে সময় কেউ ছিলনা। আমরা একটা বেঞ্চে বসলাম এবং দুপুরের খাওয়া খেয়ে নিলাম। সে স্পটে বসে নিচে টেইলর ক্রিক পার্কের দিকে তাকালে পার্কের অন্য রকম আরেকটা রুপ দেখা যায়। আমরা দুই জন সে স্পটে বসে পার্কের সেই রুপ উপভোগ করছিলাম।

কিছুক্ষণ পর পোশা এক কুকুর নিয়ে এসে খালি এক বেঞ্চে বসলেন এক সাহেব। বয়স ৬৫-৭০ এর মধ্যে হবে। সাহেব যখন আমাদের দিকে আসছিলেন তখন তার গান টাইপের হান্টিং কুকুরটি আদুরে ঢংএ সাহেবের আগে আগে হাঁটছিল। হাঁটার ভঙ্গিতে, পোশাকে, সব মিলিয়ে সাহেব যে বেশ স্মার্ট তা বুঝা যাচ্ছিল। শ্যামলা গায়ের রঙের সাহেবের পরনে ছিল সাদা রঙের টি সার্ট এবং নীল রঙের ফুল প্যান্ট। বাঁ হাতের ঘড়িটি সহজেই চোখে পড়ে। মাথায় আধা কোঁকড়ানো সাদা চুল, গায়ের শ্যামলা রঙ, এবং সর্বোপরি মুখের গঠন দেখে আমি বুঝে নিয়েছিলাম সাহেব জাতিতে ভারতীয় বা গায়ানিজ (দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তর প্রান্তে, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের গা ছুঁয়ে ভেনিজুয়েলা আর সুরিনামের মধ্যখানে বিষুবীয় অঞ্চলে অবস্থিত দেশ গায়ানার মানুষ) হবেন। তবে তিনি গায়ানিজ হবেন এ ব্যাপারে আমি প্রায় নিশ্চিত ছিলাম, কারন ভারতীয়রা ওরকম স্মার্ট হন না। এখানে উল্লেখ্য যে গায়ানিজরাও আসলে ভারতীয়। বৃটেন গায়ানা দখল করার পর জনবল সংকট উত্তরনের জন্য বৃটেন তার আরেক কলোনি ভারত থেকে জাহাজ বোঝাই করে অসংখ্য ভারতবাসীকে কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবনের আশ্বাস দিয়ে গায়ানা নিয়ে যায়।

আঠারশ খ্রীস্টাব্দ থেকে শুরু হওয়া এই গণ স্থানান্তর (ভারত থেকে গায়ানা) চলে ১৯১০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত। ভারত থেকে আসা সেসব ভারতীয়দের মধ্য থেকে খুব কম ভারতীয় নিজ দেশ ভারতে ফিরে গেছেন। যারা গায়ানায় থেকে গেছেন তারা তাদের আদি দেশ ভারতের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারলেও পারেন নি ভাষা ধরে রাখতে। তারা পরিচিত হয়ে উঠেন পৃথক এক জাতিসত্বা গায়ানিজ হিসেবে এবং ইংরেজি হয়ে উঠে এ জাতির মাতৃভাষা। বহু বছর কানাডা থেকে, বহু দেশ থেকে আসা কানাডিয়ানদের সাথে মিশে, আমি দেখে অনেকটা ধারনা করতে পারি এ কানাডিয়ানের পিতৃভুমি কোনটি। এখানেও সে অভিজ্ঞতা থেকে বলেছিলাম সাহেব গায়ানিজ হবেন। সাহেব আমাদের পাশের বেঞ্চটাতে বসলেন। আমি আগ বাড়িয়ে কথা শুরু করলাম। নাম জেনে নিলাম। নাম আড্রিয়েন। বুঝলাম সাহেব তার ফার্স্ট নেম বলেছে। যাক,কোন অসুবিধা নাই। এবার যেই বললাম- তোমার কুকুরটা খুব সুন্দর অমনি আড্রিয়েনের মন চনমনে হয়ে উঠলো। আড্রিয়েন হাসি মুখে প্রথমেই বললো তার কুকুরের নাম অস্কার এবং বেশ আগ্রহ ভরে অস্কারের বর্ণনা দিতে থাকলো। অস্কার কোন টাইপের, কোন ভ্যারাইটির, বয়স কত, ইত্যাদি সব আড্রিয়েন বললো। সে বললো তার অস্কার হান্টিং টাইপের। হান্টিং টাইপের কুকুরও যে নানা নামের হয় তা আমি জানতাম না। আড্রিয়েন বললো হান্টিং টাইপের কুকুর আছে নানা নামের; যেমন, ছেজার, স্কাউট, ড্যাশ, বোল্ট, ট্র্যাপার, বুমার, গানার, ইত্যাদি। আড্রিয়েন সাহেবের অস্কার হলো বুমার। কুকুরটার গায়ের রঙ সত্যি খুব সুন্দর। সাইজও মাঝার গোছের; খুব উঁচা নয় আবার ছোটও নয়। এখানে এবড়ো থেবড়ো মুখওয়ালা কিছু কুকুর দেখা যায়। আবার কিছু কুকুর দেখি যাদের মুখ শেয়ালের মুখের মত। এটির মুখের গঠন খুব সুন্দর, আর লেজটিও বেশ আকর্ষনীয়। এটি মোটা তাজা নয়। বডি স্লিম। আড্রিয়েন আমার কাছে পাঠিয়ে দিলেন কুকুরটাকে এবং আমাকে বললেন অস্কারের বুকের পাঁজর গুলোর উপর হাত বুলাতে। আমি হাত বুলিয়ে দেখলাম পাঁজরগুলো মাংসের পরতের নিচে হারিয়ে যায়নি। অস্কারের পিঠে বুকে হাত বুলানোতে অস্কার একেবারে বিগলিত; অস্কার তার মাথাটা আমার কোলের উপর রেখে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলো। কুকুরের মত এমন আদরের কাঙাল আর কোন প্রানী নাই। ক্ষাণিক পর আড্রিয়েন ডাকলে অস্কার চলে গেল তার প্রভুর কাছে। আড্রিয়েন এবার বললো অস্কারের একজন ডায়াটিসিয়ান আছে। সে ডায়াটিসিয়ানের পরামর্শ মত খাবার প্রত্যেক দিন অস্কারকে খাওয়ানো হয় এবং অস্কারের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়। তিনি বললেন ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা খুব জরুরী। বেশি খাবার খেলে কুকুরের গায়ে মাংসপেশি বেড়ে যায় এবং কুকুরের “সফ্ট টিশ্যু সারকোমাস” নামক ব্যাধি হয়, যা সারানো খুব কষ্টকর। অস্কারকে বাদ দিয়ে এবার আড্রিয়েনের দিকে ফিরলাম। আড্রিয়েনকে বললাম- “তুমিতো মনে হয় গায়ানিজ”।
আড্রিয়েনের তড়িৎ উত্তর- “না, আমি কানাডিয়ান”। আমি বললাম – “তাতো বটে, কিন্তু তোমার পুর্বপুরুষরা কি ভারতীয় নাকি গায়ানিজ”? আড্রিয়েন এ প্রশ্নের উত্তরেও বললো- “না, আমার বাবা মা দুই জনই কানাডিয়ান”। উত্তর শুনে আমি মনে মনে বললাম- আরে পাগল, কানাডিয়ানতো আমিও , কিন্তু তাই বলে আমি কি বাঙালী নই? মনে মনে আরো ভাবলাম কানাডা আর কানাডার মানুষের উপর আড্রিয়েনের পাঠ নেয়া দরকার। তাহলে তিনি জানতে পারবেন কানাডায় আদি কানাডিয়ান বলতে এবঅরিজিনালদেরকে বুঝায় যাদেরকে কানাডিয়ান কনস্টিটিউশনে ফার্স্ট ন্যাশন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আড্রিয়েন সাহেব যে এবঅরিজিনাল স¤প্রদায়ের কেউ নন এটাতো নিশ্চিত করে বলা যায়। তাহলে?

আড্রিয়েন আবারো ফিরে আসলো তার প্রিয় অস্কারের দিকে। অস্কারের কানের উপর ঘোড়ার লেজের মত ঝুলে থাকা চুল গুলো ধরে সেগুলোর অপার মসৃনতা অনুভব করার অনুরোধ জানিয়ে আড্রিয়েন আরেক বার অস্কারকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিল। অস্কার আড্রিয়েনের হুকুম তামিল করতে মুহুর্ত দেরি করে না। অস্কার চলে এল আমার কাছে। চুলগুলো ধরে দেখলাম। আসলেই বড় মিহি সেগুলো। আড্রিয়েন বললো চুলগুলো মাত্র গতকাল ট্রিম করা হয়েছে। অস্কার এবার আমাকে অবাক করে আড্রিয়েনের বিনা হুকুমে সামনের বেঞ্চে বসা আমার স্ত্রীর কাছে চলে গেল। আমার স্ত্রীর আবার কুকুর প্রীতি একদম নাই। আড্রিয়েন সেটা বুঝলো এবং অস্কারকে ডেকে নিজের কাছে নিয়ে গেল। আড্রিয়েন এবার বললো মন্ট্রিয়ালে বসবাসরত তার আইনজীবি কণ্যারও আছে একটা কুকুর। তবে সেটা হান্টিং ডগ নয়। সেটি একটি আমেরিকান পিটবুল টেরিয়ার ডগ। আরো কিছুক্ষণ কথা হলো আড্রিয়েনের সাথে আমার। তারপর আড্রিয়েন বাসায় ফিরে যাচ্ছে বলে আমাদের থেকে বিদায় নিল। আমরা আরো কিছুক্ষণ ছিলাম সেখানে। আমার স্ত্রীর চা-প্রীতি অধিক। তাই এখানেও চা আনতে তার ভুল হয়নি। আমরা চা খেলাম। চা খাওয়া শেষ হলে আমরা নিচে ট্রেইলের দিকে হাঁটতে থাকলাম। ট্রেইল ধরে এবার পথ চলা শুরু হলো বাসার দিকে।

যাওয়ার পথে যে ডোবাতে আমি পুরুষ ব্যাঙের প্রজনন সঙ্গীত শুনতে পেয়েছিলাম এখন সে ডোবার পারে দেখি এক মহিলা হাতে একটা বালতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন; সাথে দুইটা ছেলে। ওরা সেখানে কি করছে তা জানার আগ্রহ জাগলো আমার এবং আমি আর আমার স্ত্রী দাঁড়িয়ে গেলাম। দেখি মহিলার ১০/১২ বছর বয়সী বড় ছেলেটা ইনসেক্ট নেট দিয়ে পানিতে কি যেন ধরছে। আমার আগ্রহ অনেক বেড়ে গেল। আমি ওদের কাছে গেলাম। দেখলাম ছেলেটা ব্যাঙ ধরার চেষ্টা করছে। মায়ের হাতে বালতি। সে বালতিতে কিছু পানি আছে। ছেলে ব্যাঙ ধরে ধরে সে বালতির পানিতে রাখছে। বালতিতে চোখ ফেলে দেখলাম দুইটি ব্যাঙ। দুটোই পুরুষ ব্যাঙ। পুরুষ ব্যাঙ ধরা পড়বে এটাই স্বাভাবিক। কারণ ডাকাডাকি করে পুরুষ ব্যাঙগুলোই তাদের উপস্থিতি জানান দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাঙ দুইটি ডাকাডাকি বন্ধ করে খুব ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বালতিতে চুপ করে বসে আছে। আমার দেখে ভালো লাগলো যে ছেলেটা ব্যাঙ ধরার তার প্রচেষ্টায় সফল হচ্ছে না। ছেলেটা পানিতে নামছে না। অন্য দিকে নেট গায়ে পড়ার আগেই ব্যাঙগুলো লাফিয়ে কিনার থেকে দুরে চলে যাচ্ছে। সকাল থেকে সে মাত্র দুই টা ব্যাঙ ধরতে পেরেছে। আমি ওদের কাউকে কিছু বলিনি। ওদের সঙ্গ ছেড়ে আমরা আবার পথে উঠলাম। এ পথ ঘরে ফিরার পথ। কিন্তু আমি ভুলতে পারছিনা মা-ছেলের ব্যাঙ ধরার কান্ড।