বিনোদন ডেস্ক : ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে ব্যাঙের বিষ শরীরে নিয়ে মারা গেছেন মেক্সিকোর এক অভিনেত্রী। ৩৩ বছর বয়সি এ অভিনেত্রীর নাম মার্চেলা আলকাজার রদ্রিগেজ।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ‘কম্বো’ নামে একটি আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন অভিনেত্রী মার্চেলা। এ অনুষ্ঠান দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসীদের একটি বিপজ্জনক ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুষ্ঠান। সেখানে বিষ গ্রহণের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়।

গত শনিবার এরকমই একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর বমি হয় মার্চেলার। এরপর মারাত্মকভাবে তার ডায়েরিয়া শুরু হয়। অসুস্থ মার্চেলাকে রেড ক্রস হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ওই অঞ্চলের আদিবাসীদের বিশ্বাস, ব্যাঙের এই বিষ শরীরে গ্রহণের পর বমি এবং ডায়েরিয়া হলো ‘শুদ্ধিকরণের’ স্বাভাবিক অংশ।

পুলিশ ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে অন্য একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডুরাঙ্গোর মায়োকোয়ানির একজন আধ্যাত্মিক গুরু অভিনেত্রীকে হাসপাতালে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু মার্চেলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পর ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান। পুলিশ এখন ওই আধ্যাত্মিক গুরুর খোঁজ করছে।

‘সাপো’ নামেও পরিচতি ‘কম্বো’। অ্যামাজনের ‘মাঙ্কি ফ্রগ’ বা বানর ব্যাঙের চামড়া থেকে বিষ সংগ্রহ করা হয়। ব্যাঙটি নিজেকে রক্ষা করতে বিষাক্ত পদার্থটি শরীরে লুকিয়ে রাখে। কোনও প্রাণী ব্যাঙটিকে আক্রমণ করলে এ বিষ ছুড়ে পাল্টা আক্রমণ করে। ‘মাঙ্কি ফ্রগ’-এর বিষ এই কম্বো আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। কম্বো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী এক লিটার পানি পান করার পর, তাদের ত্বকে ছোট ছোট ক্ষতের সৃষ্টি হয়।

এরপর ব্যাঙ থেকে সংগৃহীত বিষ ক্ষত স্থানে প্রয়োগ করা হয়। এতে রক্তচাপ বেড়ে যায়, হার্টবিট বৃদ্ধি পায় এবং বমি বা ডায়েরিয়ার মাধ্যমে শরীর পরিষ্কার হয়। সাধারণত, এই লক্ষণগুলো আধা ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসীরা কয়েক শতাব্দী ধরে কম্বো আচার পালন করে আসছে। তারা বিশ্বাস করে যে, এতে দুর্ভাগ্য কেটে যায় এবং শিকারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।