সোনা কান্তি বড়ুয়া : অহিংসা পরম ধর্ম নিয়ে হিংসা আমাদের অন্তর গিলে খেয়েছে! বাংলাদেশে খাগড়াছড়িতে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যা! ৩১ জানুয়ারি ২০২২, (হিল ভয়েস) খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সদর উপজেলার গুগড়াছড়িতে বিশুদ্ধা মহাথের (৫২) নামের এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা ও চট্টগ্রামস্থ জুম চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষু’র উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা স্থান: চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, তারিখ : ০৪/০২/২০২২। বিগত ১০ বছরে যে পরিমাণে বৌদ্ধ বিহার আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে, বৌদ্ধ ভিক্ষুকে নৃশংসভাবে হত্যা এবং ধারালো ছুরি বা অস্ত্র দিয়ে আঘাত বা জখম করে রক্তাক্ত অবস্থা করা হয়েছে।
গত কয়েক দশকে অবিচার, হিংসা, বিদ্বেষ সমাজের অনেক গভীরে শিকড় ছড়িয়ে ফেলেছে। অহিংসা পরম ধর্ম! হিংসাকে অহিংসার বিশ্বপ্রেম দিয়ে জয় করতে হবে! ধর্মান্ধ নরহত্যার উল্লাস মানবজাতির ধর্ম নয়! ধর্মান্ধ রাজনীতির মাফিয়া চক্রে আবার বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যা ও বৌদ্ধ বিদ্বেসী বই! বৌদ্ধ বিদ্বেসী বই লিখে বাংলাদেশে প্রতিবছর বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যা কেন? মৌলবাদীরা বাংলাদেশে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত নৈতিকতা শিক্ষা’ ইসলাম ধর্মের পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ও বইয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় পাঠ্য বইতে বলছে ‘অমুসলিমরা’ ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম!’
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’! আলবদর চক্র যেখানে সেখানে পুরুষদের বস্ত্র উন্মোচন করে মুসলমানিত্ব পরীক্ষা করা হতো, মুসলমান না হওয়ার একমাত্র শাস্তি ছিল তাত্ক্ষনিক মৃত্যু। ইসলামের নামে আল্লাহের আমানত নর নারীসহ শিশু (আশরাফুল মাকলুকাত) হত্যা করেছে দিনের পর দিন। মৌলবাদীরা ধর্মের মুখোষ পরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে তিলে তিলে ধ্বংস করবে।
বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদী সংগঠনগুলোর বৈশিষ্ট্য ও বিকাশকাল বিশ্লেষণ ও গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য সমন্বয় করে ড. আবুল বারকাত বলেছেন, “১৯৯২ সালের ৩০ এপ্রিল হুজি-বি’র আনুষ্ঠানিক গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদী জিহাদের প্রথম পর্ব বা ‘দাওয়া’ স্তরের শুরু। অতিক্রম করেছে দ্বিতীয় স্তর ‘ইদাদ’। এখন তাদের অবস্থান জিহাদের তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের মধ্যবর্তী কোনো পর্যায়ে অর্থাত ‘রিবাত’ ও ‘কিলাল’-এর মাঝে কোনো একপর্যায়ে। স্বার্থের ঢাকঢোলে, সরকার আর রাষ্ট্রের চোখ বুজে থাকার পথ ধরে ধীরে ধীরে অনগ্রসর শ্রেণি এই ক্ষমতাশালীদের অশান্ত হিংসার ছাতার তলায় সমবেত হয়ে পড়েছে। হিংসার রাজনীতি, হিংসার সমাজ নীরবে তার ভিত তৈরি করেছে। অসংখ্য ছোট ছোট সামাজিক-অসাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে, ধর্মের গোঁড়ামি পথে, রাজনীতির পঙ্কিল পথে, রাজনৈতিক দলগুলো যে মতের বা যে মেরুরই হোক, ঠিক এমন সমীকরণই মেনে নিয়েছে। হিংসা আমাদের রক্তে মিশে গিয়েছে।”
আজ ৩০ সেপ্টেম্বর (২০২২) রোজ বৃহস্পতিবার ‘নট ফর সেল ক্লাব’ এর বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেছেন তরুণ আইনজীবী রিগ্যান বড়ুয়া। নোটিশে এ ধরনের মানহীন কুরুচিপূর্ণ ও কাল্পনিকতার আশ্রয় নেয়া ‘বুদ্ধ’ বইটি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ভাবে করা হয়েছে এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে মর্মে প্রকাশনা সংস্থাকে সতর্ক করার পাশাপাশি কিছু নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে হবে বলে তিনি নোটিশে উল্লেখ করেছেন। রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ৮ বছর শেষে ৯ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার বিচার এখনো শুরু না করে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ ’ শীর্ষক বই লিখেছেন!
নট ফর সেল ক্লাবের ‘বই বিপ্লব’ সিরিজের প্রথম বই কালেক্টার্স এডিশন ‘বুদ্ধ’ গ্রাফিক গাইডটির গত ২০ সেপ্টেম্বর (২০২২) মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বইটি প্রকাশের পর পর বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং কিছু কুরুচিপূর্ণ চিত্র শান্তপ্রিয় বৌদ্ধ জনসাধারণের মনে ধর্মীয়ভাবে আঘাত আনে।বিষয়টি দেশ-বিদেশের অনেকেরই নজরে আসে এবং এ ঘৃন্য কাজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতন বৌদ্ধ জনসাধারণ সোচ্চার, প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানায়। বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে লেখক গোলাম মুস্তাফা, লেখক হুমায়ুন আহমেদ এবং লেখকগণ বৌদ্ধ বিদ্বেসী বই লিখেছেন। এবং ধর্ম বিশ্বাসের কারনে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে লেখক হুমায়ুন আহমেদ ‘রাবনের দেশে আমি ও আমরা’ বইটি লিখেছেন (রহ ২০১০)।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুব রের ভাষায়
বহুদিন মনে ছিল আশা / ধরণীর এক কোণে
রহিব আপন-মনে; / ধন নয়, মান নয়, একটুকু বাসা
করেছিনু আশা।”
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইতে বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই (A father made her daughter as a prostitute) আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও (Buddhist family life is not good) বটে। (1) Mr. Azizul Hoq Khan (2) Mr. Mahamudul Ala (3) Mr.Bilas Mallik and (4) Mr. Ujjal Chakraborty “লেখকগণ “ÒGender, Society and Development শীর্ষক বইটি লিখেছেন (For B.A (Honours) Fourth Year Social Science students in Bengali “গ্রন্থ লিখে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে, ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের চেয়ে উন্নত, better! ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম! বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের পাঠ্য বই অমুসলিম ধর্ম নিয়ে নিয়মিতই কটূক্তি করে যাচ্ছেন! ধর্ম বিশ্বাসের কারনে আফগানিস্থাণের বামিয়ান বুদ্ধমূর্তিকে নিয়ে মুসলমান রাজনীতির ভয় কেন?
ইতিহাসের আলোকে ধর্মান্ধ মৌলবাদী শাসক ও সন্ত্রাসীগণ বাংলাদেশের পার্বত্য জেলার আদিবাসীগণকে দিনের দিনের পর দিন দুঃখের দহনে, করুন রোদনে তিলে তিলে ক্ষয় করেছে। উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি সদরে ধর্মসুখ বিহারের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা ও চট্টগ্রামস্থ জুম্ম চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে রাত পৌনে ১টায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনা সংঘটিত হয়। গতকাল রবিবার (৩০ জানুয়ারি ২০২২) দিবাগত মধ্য রাতে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে গ্রামের একজন মহিলা ছোয়াইং (খাবার) দিতে এসে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে বিহারের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে বিষয়টি গ্রামবাসীরা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেন। পরে খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশ গুগড়াছড়ি ধর্মসুখ বৌদ্ধ বিহার থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুর মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, শ্রীমত বিশুদ্ধা মহাথের রাতে বিহারে একাই থাকতেন। কাল (রবিবার) রাতেও তিনি একাই ছিলেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। এসময় দুর্বৃত্তরা তার টাকা ও মোবাইল নিয়ে যায়। এদিকে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন স্তরের নাগরিকগণ।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রশীদ জানান, রবিবার মধ্যরাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুকে কুপিয়ে ও মাথায় আঘাত করে খুন করেছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করা হবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। আবার বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যায় হিংসা আমাদের অন্তর গিলে খেয়েছে। নিহত বিশুদ্ধা মহাথের গুগড়াছড়ি ধর্মসুখ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ। বিহারে তিনি একাই থাকতেন বলে জানা যায়। পুরো সমাজটাই এখন হিংসার প্রবাহে ভেসে চলেছে। শান্তি প্রিয় বৌদ্ধদের ধর্মীয় গুরু ভান্তে তথা ভিক্ষু নৃশংস হত্যা কিংবা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত বা বিহার ভাঙচুর হলে বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং তার অনুসারীরা কখনো বসে থাকেনি। দোষীদের সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে সুস্থ বিচারের দাবিতে “প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন” করে আসছে এবং করে যাচ্ছে। প্রতিকার শুন্য।
বাংলাদেশের অপাপবিদ্ধ শান্তিকামী বৌদ্ধদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করতে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বাংলাদেশে মুসলমান লেখকগণ গৌতমবুদ্ধকে ব্যঙ্গরুপদানে অত্যন্ত নোংরা ও কুরুচিপূর্ণতথ্য বিভ্রাট ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ ’ শীর্ষক বই লিখেছে ন! এই বিষয়টার মধ্যে যে সা¤প্রদায?িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত! মূলের (TRIPATAKA & Buddhist Text) সাথে মিল না রেখে- মুসলমান লেখকগণ তাদের ইচ্ছে মতো – গ্রন্থটির অভ্যান্তরের বেশ কিছু চিত্র দেখা মাত্রই যেকোনো বৌদ্ধ ধর্মবিশ্বাসীর মনে বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মকে নিয়ে বিরূপ ও বিকৃত ধারনা উদিত হতে বাধ্য! এই যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরা! শিশু কিশোর বা অবৌদ্ধ পাঠকের কথা বাদই দিলাম! মুসলমান লেখকগণ যৌনতায় ভরপুর কুরুচি ও অমার্জিত ছবি/চিত্র সম্পাদনা করে- বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মকে কাম সূত্রের ছায়াপটে উপস্থাপন করেছেন! ‘বুদ্ধ’ বই : নট ফর সেল ক্লাবকে দেওয়া হয়েছে লিগ্যাল নোটিশ!
বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ মানে বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রতিবাদ জানাই অবিলম্বে বিচার দাবি জানাচ্ছি, এই নেক্কারজনক ঘটনা বাংলা জমিনে যেন আর না ঘটে! ফুটনোট: সংসদ সচিবালয় কোয়ার্টার থেকে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক? খাগড়াছড়ির আদিবাসী নারী নিবেদিতা রোয়াজা ধর্মান্তরিত হয়ে মামুন মিল্লাত নামের একজনকে বিয়ে করেন? লাশ উদ্ধার করে গতকাল বিকালে ময়না এবং বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে সংকুচিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামাগুলো এমন হয় জানা ছিলো না? রীতিমতো বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্ট্যাম্পে ডকুমেন্টেশন করে একটা ধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে আরেকটি ধর্মকে মহিমান্বিত করা, এবং ভিন্নমতকে সাংঘাতিকভাবে রুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট কি জংগী শফীর থেকে দিক্ষা নিয়েছেন নাকি?
ভিক্ষু হত্যা ও হামলার বিচার চেয়ে শেখ হাসিনার কাছে টিসিএসএ-এর স্মারকলিপি (By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 5, 2022) হিল ভয়েস, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক! : খাগড়াছড়িতে বিশুদ্ধা মহাথেরোকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা এবং চট্টগ্রামে জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার নিন্দা জানিয়ে এবং হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ভিত্তিক ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (টিসিএসএ)-এর পক্ষ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানীয় মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেট (এসডিএম)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এক স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে বাংলাদেশের আদিবাসীসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জীবন রক্ষার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানানো হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিসিএসএ-এর সদস্যবৃন্দসহ কার্যনির্বাহী সম্পাদক যদন কুমার চকমা, রুপক চাকমাও সুবল চাকমা, ইয়ং চাকমা এসোসিয়েশন (ওয়াইসিএ)-এর পক্ষ থেকে প্রদীপ চাকমা এবং চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (সিএনসিআই)-এর পক্ষ থেকে শুভরঞ্জন চাকমা উপস্থিত ছিলেন।”
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে মুসলিম দ্বারা আদিবাসীসহ হিন্দুদের উপর অত্যাচার, ধর্ষণ, হত্যা এবং মন্দির ভাংচুর নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। এই সমষ্ট কাজে যারা যারা লিপ্ত তাদেরকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির দাবি জানানো হয়। সেই সাথে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি এবং পুলিশ বাহিনী আসামিদের আইনের আওতায় এনে কাউকে শাস্তি দিতে পারেনি বলেও উল্লেখ করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ৮টি শাখা সংগঠনের মধ্যে তিনটি শাখার উদ্যোগে একই সাথে কাঞ্চনপুর এসডিএম, লংথারাই এসডিএম এবং কৈলাশহর এসডিএম-এর হাতে এই স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয় এবং অন্য পাঁচটি শাখা সংগঠনও ২/১ দিনের ভিতরে স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে জানানো হয়।
কেন ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন পাহাড়ীগণ ও বৌদ্ চাকমারা? এখনকার বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে হাজার হাজার চাকমা বৌদ্ধ পাহাড়ীদের ভারতে এসেছেন মূলত দুটো কারণে। এক, ১৯৬২তে কমিশন করা কাপ্তাই লেকের জন্য ভিটেছাড়া হয়ে আর দুই, ১৯৭২-য়ে শান্তিবাহিনী গঠিত হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচতে। গবেষকরা বলেন, কাপ্তাই লেকের কারণে ৬৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, যার মধ্যে ২২ হাজার হেক্টরই ছিল কৃষিজমি। বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন প্রায় ১ লক্ষ উপজাতীয়, যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ছিলেন চাকমা।
% (Percentage) of Total Population
Year Muslim Hindu Buddhist Christian Others Total
1941 70.3 28.3 – 0.1 1.3 100
1951 75.7 22.0 0.7 0.3 1.3 100
1961 80.4 18.5 0.7 0.3 0.1 100
1974 85.4 13.5 0.6 0.
The Buddhist Monk ভদন্ত শরণংকর থের বলেন, “বাংলাদেশে বৌদ্ধদের সংখ্যা মাত্র শতকরা ০.৫ % জনসংখ্যা। সে ক্ষেত্রে যদি মুসলিমরা মহত এবং মানবিক না হত তাহলে এত অল্প সংখ্যক বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে ঠিকে থাকতে পারতো না। বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশী হত্যাযজ্ঞই কি পাকিস্তানী ইসলাম? জামাত মৌলবাদীরা পাকিস্তানীদের বন্ধু হয়ে আত্মঘাতী ইসলামিক মৌলবাদী গোষ্ঠি ঘরের শত্রু বিভীষণ এবং মুক্তিযুদ্ধে পহেলা নম্বরের দুশমন।
রাস্তা-মহল্লায় গণপ্রহার, হিংসায় হিংসায় সালিশি, মোবাইল গেমে যুদ্ধ যুদ্ধ আর খতমের খেলার জনপ্রিয়তা আমাদের যে মানসিকতাকে নগ্ন করে জনতার উঠানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, তা নিখাদভাবেই বাড়িয়ে তুলেছে হিংসারতি। হিংসায় শুরু, হিংসায় শেষ। দেশের অনেক মানুষ, অনেক রাজনীতিবিদ ও বরেণ্য ব্যক্তি যেটা বুঝতে পারছেন না কিংবা বুঝেও অস্বীকার করছেন, তা হলো বাংলাদেশের সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রাখার কথা লোক দেখানো, কত জনে কত কথা। অসা¤প্রদায়িক বিশ্বাসের ফল হিসেবে দিন শেষে ভুক্তভোগীরা মাশুল দিতে হয়। সংখ্যালঘু হওয়ার পাপের প্রায়শ্চিত্ত।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!