স্পোর্টস ডেস্ক : এই খবরটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিলো গোটা ফুটবল দুনিয়া। কয়েক মাসের উৎকণ্ঠা শেষে অবশেষে লিওনেল মেসির সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে বার্সেলোনা। অর্ধেক বেতন কমিয়ে নিজের আশৈশব ক্লাবটিতে থাকতে সম্মত হয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।
ইউরোপিয়ান গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, নতুন করে ৬ বারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকার সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি করছে কাতালান ক্লাবটি। ততদিনে মেসির বয়স হবে ৩৯ বছর! তবে তাতেও রাজি বার্সেলোনা।
২০০৪ সালে বার্সার জার্সিতে অভিষেক হয় লিওনেল মেসির। এরপর নিজের পুরো পেশাদার ক্যারিয়ার এখানেই কাটিয়েছেন মেসি। চলতি মাসে প্রথমবারের মতো ফ্রি এজেন্ট হয়ে যান আর্জেন্টাইন তারকা। গেল মৌসুমে ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে এবারের মৌসুম শেষ হওয়ার পরও ক্লাবের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াননি ক্ষুদে জাদুকর। তবে অবশেষে জানা গেল, ক্লাবটিতেই থাকছেন তিনি।
এরমধ্যে বেশ কয়েকটি ক্লাব তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। তাকে দলে ভেড়াতে উঠেপড়ে লেগেছিলো পিএসজি-ইন্টার মিলান-ম্যানচেস্টার সিটির মতো ক্লাবগুলো। তবে কারো প্রস্তাবেই সাড়া দেননি বিশ্বসেরা ফুটবলার।
চলতি বছরে ফাঁস হওয়া খবর অনুযায়ী, সবশেষ চুক্তিতে ৪ বছরে ক্লাবের পক্ষ থেকে ৫৫০ মিলিয়ন ইউরো পেয়েছেন লিও। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছিলো সবার। সে অনুযায়ী বাৎসরিক ১৩৮ মিলিয়ন ইউরো বেতন পাচ্ছিলেন মেসি।
তবে এবার আর সেরকম আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিতে পারছেনা কাতালানরা। করোনার প্রভাবে আর্থিক সংকট তো আছেই। তার ওপর আছে লা লিগার চোখ রাঙানি। স্প্যানিশ লিগের আয়োজকদের ফেয়ার প্লে নীতি অনুযায়ী মেসির এমন আকাশচুম্বি বেতনকাঠামো নিয়মবহির্ভূত। এ অবস্থায় বেতন না কমালে মেসিকে ক্লাবটি রাখতে পারবেনা বলে হুঁশিয়ারিও দেয়।
ক্লাবের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা প্লেয়ারকে ধরে রাখতে, খরচ কমাতে উঠেপড়ে লাগে বার্সেলোনা। এরইমধ্যে জুনিয়র ফিরপো, ক্লেয়ার তোদিবো, কার্লেস এলেনা ও হুয়ান মিরান্ডাকে বিক্রি করে দিয়েছে ক্লাবটি। ধারে পাঠিয়ে দিয়েছে ফ্রান্সিসকো ত্রিনকাওকে। এছাড়াও ক্লাব ছেড়ে দিয়েছে ম্যাথিউস ফার্নান্দেজকে।
তারপরও নির্ধারিত কাঠামোয় আনতে পারছিলোনা বার্সা। ফলে নিজের বেতন অর্ধেক করতে রাজি হয়েছেন লিওনেল মেসি।
ক্লাবের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় যে কোন ক্লাবের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে পারতেন মেসি। পিএসজি-ইন্টার মিলান-ম্যানচেস্টার সিটি আগ্রহ দেখিয়েছিলো তাকে দলে ভেড়াতে। তার শৈশবের ক্লাব নিওয়েলস ওল্ড বয়েজে ফেরার একটি গুঞ্জনও উঠেছিলো। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর সকার লিগের ক্লাব ইন্টার মিয়ামিও তার প্রতি আগ্রহ দেখায়। এরমধ্যে ফরাসী ক্লাব পিএসজি তাকে আকর্ষণীয় প্রস্তাব দেয়। তবে সবগুলো প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে নিজের ক্লাবেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন মেসি।