অনলাইন ডেস্ক : পানামা খালের পর এবার বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা চাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্বায়ত্তশাসিত ড্যানিশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘খুব জরুরি’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পেপালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা কেন হাওয়ারিকে ডেনমার্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে, গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
গ্রিনল্যান্ডের দিকে নজর ট্রাম্পের এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৯ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদের সময় গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। তবে ওই সময় ডেনমার্ক তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। গ্রিনল্যান্ড কেনার পেছনে ট্রাম্পের আগ্রহের পেছনে রয়েছে দ্বীপটির প্রাকৃতিক সম্পদ ও ভূরাজনৈতিক গুরত্ব। তবে ওই সময় ডেনমার্কের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তাদের রাষ্ট্রের অংশ এই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল বিক্রির জন্য নয়।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেত্তে ফেডেরিকসেন বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রি হবে না। গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্ক নয়। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডেরই। আমি আশা করি, ট্রাম্প সত্যি সত্যি এটা কেনার কথা বলেননি।’ ফেডেরিকসেনের মন্তব্যের পালটা হিসাবে তখন ট্রাম্প ডেনমার্কে তার রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল করেন।
মূলত ১৯৭৯ সালে ডেনমার্ক থেকে স্বায়ত্তশাসন লাভ করা সত্ত্বেও, গ্রিনল্যান্ড বৈদেশিক বিষয়, নিরাপত্তা এবং আর্থিক বিষয়ে কোপেনহেগেনের ওপর নির্ভরশীল। অঞ্চলটি ইউরেনিয়াম, সোনা, তেল এবং গ্যাসের বিশাল মজুদাগার হিসাবে পরিচিত। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ১৯৪৬ সালে গ্রিনল্যান্ড কেনার জন্য ডেনমার্ককে ১০০ মিলিয়ন ডলারের স্বর্ণের প্রস্তাব দেন।
বিশ্লেষকদের ধারণা, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ডেনমার্কের ওই দ্বীপ কেনার পেছনে ভূরাজনৈতিক কারণও থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে ‘ঠুলে এয়ার বেস’ নামের একটি সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে। আর্কটিক সার্কেলের সাড়ে ৭০০ মাইল উত্তরে অবস্থিত ওই সেনাঘাঁটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন। সেখানে একটি রাডার স্টেশন রয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রিম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সতর্ক ব্যবস্থার একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্স স্পেস কমান্ড ও নর্থ আমেরিকান অ্যারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ডও সামরিক ঘাঁটিটি ব্যবহার করে থাকে। ইউরোপে সামরিক শক্তি বাড়াতে গ্রিনল্যান্ড কেনার চিন্তাভাবনা করতে পারেন ট্রাম্প।