অনলাইন ডেস্ক : কলকাতার সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (আরজিকর) নারী চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ন্যায়বিচার চেয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে যে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছে তার সাথে বাংলাদেশের ঘটনার সাথে তুলনা টানলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বিরোধীদলকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিআইএম এবং বিজেপি আপনারা রাজনীতি করছেন। আপনারা ভাবছেন বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গেছে, আমরা সেটাকে টেনে এনে যদি ক্ষমতা দখল করতে পারি! আমি বলব আমি ক্ষমতার মায়া করি না। আমি মনে করি যতদিন বাঁচবো মানুষের সেবা করে যাব, মানুষকে ন্যায়বিচার দিয়ে যাব। আর যার জন্যই আমি দোষীর ফাঁসির দাবি করেছিলাম। আমাদের পুলিশকে দিয়ে আমরা অনেক কাজ করিয়েছিলাম তা সত্ত্বেও আপনারা হাইকোর্টে গেলেন।’

১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস। তার আগে বুধবার বেহালায় এ সম্পর্কিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত ৯ আগস্ট কলকাতার সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (আরজিকর) নারী চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল গোটা পশ্চিমবঙ্গ। প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে ডাক্তারদের মধ্যে। পথে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। হাত মিলিয়েছে সাধারণ মানুষও।

ইতোমধ্যেই ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন আরজিকরের প্রিন্সিপাল ডা. সন্দীপ ঘোষ। কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার চলে গিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। দায়িত্ব পেয়ে তারাও তদন্তে নেমে পড়েছেন।

এরই মধ্যে স্বাধীনতা দিবসের মধ্যরাতে রাজ্যজুড়ে রাস্তায় নামেন নারীরা। নারীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে স্বাধীনতার মধ্যরাতে বুধবার কলকাতাসহ রাজ্যটির জেলায় জেলায় পথে নামেন নারীরা। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেয়েদের রাত দখল’।

এই পরিস্থিতিতে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরজিকরের ঘটনা টেনে এনে যারা চরিত্র হরণ করছে এরা ছাত্র-ছাত্রী নয়। এরা হচ্ছে রাজনৈতিক দল। পরিকল্পিতভাবে করছে। কারণ তারা মমতা ব্যানার্জিকে সরাতে চায়। আরে মমতা ব্যানার্জির শর্তে রেল থেকে দুবার সরে এসেছে। জাস্ট একটা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে চলে এসেছি। আমার এক সেকেন্ড লাগে কিন্তু আমি অন্যায়ের কাছে কোনোদিন মাথা নত করিনি করবোও না।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের রূপ নেয়। আর তাতেই পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পর থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন হাসিনা। সেই থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি।