অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী দল আখ্যায়িত করে তাদের ধিক্কার জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশালে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যখন উন্নয়ন করি তারা করে অগ্নিসন্ত্রাস। রেললাইনের প্লেট উপড়ে ফেলে রেলে আগুন দিয়ে মানুষ মারে। বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন দেয়। তারা মানুষ হত্যা করে। আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি-জামায়াতকে। কারণ তারা সন্ত্রাসী দল। তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে। অগ্নিসন্ত্রাসীদের মানুষ আর চায় না। তাদের দোসর যারা একাত্তরে লুটপাট, গণধর্ষণ করেছে তারা। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি, সেই যুদ্ধাপরাধীরা তাদের দোসর। খুনি-সন্ত্রাসী মানিলন্ডারিংকারী সেই দল, তার সঙ্গে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল।’
বরিশালবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা ৭ তারিখে সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। কারণ, এই নৌকা নুহ নবীর নৌকা। এই নৌকা স্বাধীনতা এনেছে, দেশ থেকে দারিদ্র বিমোচন করে। এই নৌকা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছে। এবার এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।’
বরিশালের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সড়কব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয়লেনের রাস্তা করে দেব। এই বরিশালে আর কষ্ট থাকবে না। বরিশাল বিভাগ ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। আট লাখ ৪১ হাজার ৬২৩ জন হতদরিদ্রকে বিনামূল্যে ঘর দিয়েছে। এই বাংলাদেশে কেউ হতদরিদ্র থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট দেশ হবে। তাই দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে দেশকে স্মার্ট দেশ করব। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আজকে ছয় লাখ ৮০ হাজার ফিল্যান্সার ঘরে বসে আয় করছে। এজন্য ১০৯টি আইটি পার্ক করেছি। প্রত্যেক স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করেছি। ভোলার গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় নিয়েছি। ভবিষ্যতে এই গ্যাস বরিশালের শিল্পাঞ্চলে দেওয়া হবে।
বরিশাল একসময় শস্যভাণ্ডার ছিল, আবার বরিশালকে সেই শস্যভাণ্ডারে রূপান্তর করতে চান বলে জানান সরকারপ্রধান। পুরো দক্ষিণাঞ্চলে ওয়াফাই ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল বিভাগের নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকার প্রার্থী বিএনপি ছেড়ে যাওয়া শাহজাহান ওমরকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী দল ছেড়ে সে নৌকায় এসেছে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল ১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, আবদুল হাফিজ মল্লিক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ-ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, জাতীয় পাটির (মঞ্জু) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, শাজাহান ওমর বীর উত্তম, আওয়ামী লীগের দফতর সস্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বরিশাল মহনগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গির, সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।