Home কলাম বালুকা বেলা : ম্যাপল লিফের দেশে

বালুকা বেলা : ম্যাপল লিফের দেশে

হাসান জাহিদ : কথাশিল্পী হাসান জাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন ইংরেজি সাহিত্যে, আর কানাডায় পড়াশুনা করেছেন সাংবাদিকতা ও কালচার এন্ড হেরিটেজ বিষয়ে। তিনি ইকো-কানাডা স্বীকৃত পরিবেশ বিশেষজ্ঞ। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের লেখক হাসান জাহিদ ‘বালুকা বেলা’ কলামে ‘বাংলা কাগজ’ এর পাঠকের কাছে তুলে ধরবেন তাঁর প্রিয় সব বিষয়ের অনুসন্ধিৎসু ক্যানভাস।

বালুকা বেলায় বিচরণ করতে করতে প্রতিবারই ভাবি, পরের এপিসোড কী বিষয়ে লিখব? যথারীতি ভাবছিলাম, কী লিখব। সহসাই মনে উঁকি দিলেন রবার্ট ফ্রস্ট। ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করেছি। কমবেশি সব কবিতাই ভালো লাগত? বিশেষত রোম্যান্টিক যুগের কবি কোলরিজ, বায়রন, শেলি, কীটস, ওয়ার্ডসওয়ার্থ। তবে টি. এস, এলিয়ট আর রবার্ট ফ্রস্টের কবিতাগুলো অসাধারণ লাগত।

জীবনের অনেকগুলো বসন্ত পার করেছি। কিন্তু অর্জন তেমন কিছুই হয়নি; চিনতে পারিনি নিজেকে। জানতে পারিনি অজানা অনেককিছু। আমার খেদ, না পাওয়ার বেদনা ফ্রস্টের ভাষাতেই বলি:
The woods are lovely, dark, and deep,
But I have promises to keep,
And miles to go before I sleep,
And miles to go before I sleep

জীবনে অনেক বিলাসিতা করেছি। কিন্তু আমার আনন্দঘন মুহূর্তের দিনগুলো যে দানবের মুখব্যাদান হয়ে একদিন আমাকে গ্রাস করবে, ভাবিনি। নব্বই’র দশক, তারপর শূন্য দশক পার করেও প্রায় এক দশক আমি শুধু বেগার খেটেছি। ভাগ্য বদল করতে পারিনি। সেইসময় আমার নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। সরকারি চাকরি করেও আমার বেহাল অবস্থা ছিল। উপরি নেয়া বা ঘুষ খাওয়া আমার বারণ ছিল। বারণ করেছিল আমার অবচেতন মন আর আমার পিতামাতার শিক্ষা।

এই সময় জীবনের পথ বাঁক নিল। জীবনের মোড় ঘুরে যাওয়া মানে পজিটিভ কিছু। কিন্তু সব পজিটিভিটির কোনো না কোনো লুপহোল থেকেই যায়। পাড়ি দিয়েছিলাম দূরদেশে; কিন্তু যা হারিয়েছি, তা আর কোনোকিছুর বিনিময়ে ফিরে পাবো না। তাই ভেতরের রক্তক্ষরণ আমার নিত্যসঙ্গী হয়েই রইল।

আমাদের কানাডা আগমনের সুযোগ ঘটে গেল। এই বিষয়ে আমার স্ত্রী ও ছেলের আগ্রহটাই বেশি ছিল।
আমি ঢাকায় জন্মেছি, বড় হয়েছি, পড়াশোনা করেছি, সাহিত্য ও সঙ্গীত চর্চা করেছি। ঢাকায় অনেক বন্ধুবান্ধব আছে। তাছাড়া, ইউকে-বেজড একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে আমার একটা চাকরির সুযোগও এসে গেছিল। তবে, মায়া, সংসার ধর্ম, স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি আত্মার বন্ধন আমাকে টেনে নিয়ে গেল সুদূর টরোন্টোতে।

একটা আয়রনি হলো, যখন আমি সব খুইয়ে, ফতুর হয়ে আর দিনরাত পরিশ্রম করে ঢাকায় মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই করে নিয়েছিলাম, সেইসময়ই আমার স্ত্রী’র মাথায় একটা অসম্ভব সুন্দর প্ল্যান খেলে গেল! তার দূরদেশ গমনের শখ জাগল।

সারাজীবন ভাড়া বাড়িতে থেকেছি। তাই যাবার আগে দেড়টি মাস পল্লবীতে তিনতলার পুরোটা জুড়ে আমার ফ্লোরে কাটিয়ে দেবার সুযোগ হলো। আরেকটি সুপ্ত আকাক্সক্ষা ছিল। আমাদের বিদায়ক্ষণে নিশ্চয়ই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের মেলা বসবে। ঠিক তাই হয়েছিল। এখানে ওঠার পর থেকে আমার কলিগ ও বন্ধু, আমার ভাইবোন ও তাদের সন্তানদের, আমার ছেলের বন্ধু ও তাদের অভিভাবকদের, আমার স্ত্রী’র কলিগ ও স্বজনদের আগমনে পল্লবীর বাসা মুখরিত হয়ে উঠল।

দেড়টি মাস বড় সুখের কেটেছিল। তিনজনই পিয়োর বেকার। শাহদিব সেন্ট যোসেফ স্কুল থেকে টিসি নিল। স্ত্রী চাকরিতে রিজাইন দিল। আমি সর্বশেষ যে পত্রিকায় ছিলাম, তা থেকে একটু আগেই বিদায় নিয়ে নিলাম। অতএব, আমরা মুক্তবিহঙ্গ!

মেজপা সেসময় তার দুই ছেলেমেয়ের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে কাটাচ্ছিল। তার গাড়িটা আর ড্রাইভারকে আমাদের জন্য রেখে গেল। সুতরাং কানাডা যাবার প্রস্তুতি হিসেবে গাড়িটা আমাদের খুব কাজে লাগল। রাজিয়া সুলতানা রোডের বাসায় থাকতেই আমাদের পনেরো বছরের সংসার-জীবনের প্রায় সমস্ত কিছুই বিক্রি/বিলি করে দিলাম। আমার কিছু কিছু প্রিয় জিনিস/কালেকশন/বই/প্রকাশনা পল্লবীর বাড়ির একটা রুমে তালাবদ্ধ করে রেখে গিয়েছিলাম।

পরে, কয়েকবার এসেছিলাম ঢাকায়। কোনোকিছুই ঠিক ছিল না। বইপত্র, স্মারক, শখের অনেক জিনিস। তারপর ছিল দোটানা। একবার টরোন্টো টানে, আরেকবার টানে ঢাকা। এমন করে করে বেলা বয়ে গেল। জমল অনেক সুখের বা তিক্ততার স্মৃতি।

স্বজনদের অশ্রুসজল বিদায়ের মধ্য দিয়ে আমরা তিনটি প্রাণী ক্যাথে প্যাসেফিকের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে টরোন্টোতে উড়ে চললাম…।

এখন কানাডা দেশটি সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করছি। কানাডায় বাংলাদেশি যারা আছেন, তারা এই দেশ সম্পর্কে কমবেশি জানেন। এখানে এই দেশ সম্পর্কে তথ্য দেয়া তাদের জন্য, যারা কানাডায় পাড়ি দিতে চান বা এই দেশ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। তবে, সবচেয়ে বড় কারণটি হলো যে, কানাডায় যখন এসে পড়েছি তখন এই দেশ সম্পর্কে আমার নিজেরই কিছু জানা দরকার ছিল। এই তাড়ণা থেকে কানাডার মাটিতে পা রেখে তখনই কিছু পড়াশোনা করেছিলাম। এখানে কানাডা সম্পর্কে আমার বিবরণ কানাডার ভেতরের ও বাইরের মানুষদের কিছু তথ্যের খোরাক যুগাবে আশা করি।

কানাডা উত্তর গোলার্ধের একটি দেশ। উত্তর অ্যামেরিকা মহাদেশের উত্তরপ্রান্তে তার অবস্থান। আয়তনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। ভাগ হয়ে যাবার পরও রাশিয়া এখনো বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশ। কানাডার আয়তন ৯,৯৮৪,৬৭০ বর্গ কি.মি.। লোকসংখ্যা আনুমানিক মাত্র ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৪৭ (২০২১)। প্রতি বর্গ কি.মি.তে জনসংখ্যার ঘনত্ব মাত্র ৩.৯২ জন!

কানাডার ১০টি প্রদেশ রয়েছে আর রয়েছে তিনটি টেরিটরি- রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ড বা দেশের অধিকারাধীন সমুদ্র এলাকা। কানাডার সরকারের ধরন হচ্ছে ফেডারেল পার্লামেন্টারি ডিমোক্রেসি ও কনস্টিটিউশনাল মোনার্কি। মোনার্কি বা রাজতন্ত্রের প্রধান রাণী এলিজাবেথ দ্বিতীয়। সোজাভাবে বললে বলা যায়, কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান হলেন রাণী এলিজাবেথ দ্বিতীয়। তারপরের পদ হলো গভর্নর জেনারেল। প্রধানমন্ত্রী হলেন রাষ্ট্রের নির্বাচিত নির্বাহী প্রধান। ফেডারেল গভর্নমেন্টের প্রধান তিনি। প্রধানমন্ত্রী ফেডারেল ইলেকশনে সবচেয়ে বেশি আসনপ্রাপ্ত হয়ে নির্বাচিত হন। তিনি কোনো রাজনৈতিক পার্টির নেতা এবং শতকরা ৫০ ভাগ ভোট পেলে তিনি নির্বাচিত হন। কানাডার তিনস্তরের শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান: ফেডারেল, প্রাদেশিক বা টেরিটরিয়াল এবং মিউনিসিপ্যাল। প্রথম দুইটি পদ রাজনৈতিক পার্টির সাথে সংযুক্ত এবং কানাডীয় জনগণের ভোট দ্বারা নির্বাচিত। মিউনিসিপ্যাল রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক পার্টির সাথে সাধারণত যুক্ত থাকেন না। কানাডার অফিসিয়াল ভাষা হলো ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ। এছাড়াও আঞ্চলিক কিছু ভাষার প্রচলন রয়েছে: যেমন?ইনুকটিটুট, ক্রি, স্ক্র্যাভি, ইনুভিয়ালুকটুন ইত্যাদি।

কানাডার পার্লামেন্ট সিনেট পরিচালিত আপার হাউস ও হাউস অব কমনস পরিচালিত লোয়ার হাউস দ্বারা বিভক্ত। পার্লামেন্ট ভবন রাজধানি ওড-আ-ওয়া’র পার্লামেন্ট হিলে অবস্থিত। কানাডার সবচাইতে বড় শহর টরোন্টো। দেশটির অর্থনীতি বহু ধারায় বিভক্ত?মূলত এর অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল এবং প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যের সম্পর্ক। কানাডা জি-৮, জি-৭, জি-২০, ন্যাটো, ওইসিডি, ডব্লিউটিও, কমনওয়েলথ অব নেশনস, ফ্রাঙ্কোফোন, নাফটা, জাতিসংঘ প্রভৃতির সদস্য।

পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহের অন্যতম একটি দেশ হলো কানাডার। কানাডার বর্তমানে মাথাপিছু আয় ৪৩,২৪২ (আনুমানিক) ডলার, যা ২০১৯এর থেকে ৬.৬৬% হ্রাস পেয়েছে প্যান্ডেমিক ও অন্যান্য অর্থনৈতিক মন্দার কারণে।

কানাডারকে বুঝতে হলে এর তিনটি ফাউন্ডিং (পত্তন) গোষ্ঠির কথা ভাবতে হবে: আদিবাসী, ফরাসি ও বৃটিশ। ইয়োরোপীয় অভিযাত্রীদের উত্তর আ্যমেরিকায় আগমনের বহু পূর্ব থেকেই কানাডার আদিবাসীদের পূর্বপুরুষগণ এখানে অধিস্থিত ছিলেন। আজকের কানাডার সমাজের একটা সিংহভাগ ইয়োরোপ থেকে আগত ঔপনিবেশিক ইংরেজ ও ফরাসি খ্রীষ্টিয় সভ্যতা দ্বারা প্রভাবিত। সুতরাং আজকের কানাডার আইনি ভিত্তিগুলো মূলত মধ্যযুগের ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে প্রোথিত আইন ও গণতান্ত্রিক ভাবধারায় আবর্তিত। এদেশের আইন সবার জন্য সমান সুযোগ দিয়ে থাকে। অভিবাসন প্রক্রিয়া চালু থাকার কারণে দেশটিতে মাল্টিকালচারাল (বহুস্তর বিশিষ্ট কৃষ্টি) বিদ্যমান। সূত্রমতে, দেশটিতে প্রতিবছর প্রায় ২,৫০,০০০ অভিবাসী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিদ্যমান ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় আগমন করে থাকেন এবং কানাডার মাল্টিকালচারকে আরো বর্ণিল করে তোলেন। অবশ্যি এই ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া ও অভিবাসীদের সংখ্যা সীমিত করে দেবার কথা শোনা যায়। তাছাড়া, দুয়েকটি খাস কানাডীয় সংস্থা এত বিপুল সংখ্যক অভিবাসনের বিরোধিতা করে আসছে।
কানাডার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আরো তথ্য আপনাদের দিতে চাই। বালুকা বেলা কলামে এইসব তথ্য পরবর্তীতে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করব।

ঢাকা থেকে টরোন্টো ঢাকা থেকে টরোন্টোর দূরত্ব ১২৪৪৯.৮৯ কি.মি.। স্বজনদের যেই দলটি আমাদেরকে বিদায় জানাতে পল্লবীর বাসায় ছিল বা ভিড় করেছিল, তাদের অনেকেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও এলো। আমাদের বিমানটি প্রথমে কাঠমাণ্ডু যাবে, সেখানে একঘন্টা অবস্থান করে তারপর উড়াল দেবে হংকংয়ে। হংকংয়ে বিমান বদলিয়ে তারপর সেই বিমানে সোজা টরোন্টো পিয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। ডাউনটাউন টরোন্টো থেকে এয়ারপোর্টের দূরত্ব ২২.০৫ কি.মি. এবং এটি মিসিসগায় (Mississauga) অবস্থিত। ঘটনাক্রমে আমরা মিসিসগাতেই উঠব আমার স্ত্রী’র খালার বাসায়।

ঢাকা থেকে টরোন্টো আসা পর্যন্ত তেমন কোনো জটিলতা আমাদের পোহাতে হয়নি। তবে একটা বিষয়ে আমার আক্ষেপ থেকে গেল। এক্সট্রা লাগেজের পয়সার ভয়ে আমি আমার সদ্য কেনা স্কেলচেঞ্জার হারমোনিয়ামটা এয়ারপোর্ট পর্যন্ত আনিনি। এয়ারপোর্টে এক্সট্রা লাগেজসহ সমস্ত লাগেজ দেয়ার পর দেখলাম আরো একটি এক্সট্রা লাগেজ নেয়ার মতো টাকা আমার পকেটে আছে। সেই এক্সট্রা লাগেজটা হতে পারত আমার স্কেলচেঞ্জার। ক্যানেডা রওনা হবার কিছুদিন আগে আমি যন্ত্রটা কিনেছিলাম পয়তাল্লিশ হাজার টাকা দিয়ে সায়ান্স ল্যাবরেটরির সুরনিকেতন থেকে।

ইমিগ্রেশনে মামুলি কিছু কথাবার্তা হলো ইমিগ্রেশন অফিসারের সাথে। আমাদের সাথে কাস্টমস পর্যন্ত ছিল ছোটো ভাই ডিউ’র পরিচিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একজন অফিসার। কাস্টমসে কিছুটা প্রশ্নের সম্মুখিন হলাম। কত ডলার নিয়ে যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি ইত্যাদি। যাইহোক, এই ঝামেলা দ্রুত মিটে গেল।

কাঠমাণ্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘন্টাখানেক বসে রইলাম প্লেনের ভেতরে। বসে বসে ভাবছিলাম এই কাঠমাণ্ডুতেই অনেক বছর আগে একবার এসেছিলাম। সেই গল্প অন্য এক সময়ে বলব।

খালাদের বাড়ি বারডক প্লেসে। মসৃণ অ্যাসফল্টের টানা রাস্তার দুইপাশে থরে থরে সাজানো ছবির মতো বাড়ি। তার বাড়িটি আবার কোণের প্লটে। দুই রাস্তার মিলনস্থলে। বাড়ির সামনে, পেছনে আর পাশে চমৎকার সাইডওয়াক, তারপর একটু নিচের দিকে অ্যাসফল্টের রাস্তা। ভেজা থাকার সুবাদে গাঢ় কালো রং। রাস্তা ভেজার কারণ হলো স্নো-ফল।

খালাদের বাড়িতে কাটালাম দশদিন। তারপর চলে আসি মূল টরোন্টোর সেভেন ক্রেসেন্ট প্লেসে। জায়গাটা ভিক্টোরিয়া পার্ক সাবওয়ে সংলগ্ন। তাই যাতায়াতের বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়।

কানাডায় আগমন ঘটল। প্রথম কিছুদিন আমি বারান্দায় এসে সিগারেট টানতাম আর নীরবে চোখের জল ফেলতাম। ঢাকায় বাড়িটি নির্মাণের সময়ও টাকা-পয়সার অভাবে চোখের জল ফেলতাম। আমার স্ত্রী’র গয়না বিক্রির টাকা, হাউস বিল্ডিং-এর লোন, আমার অফিস থেকে যাবতীয় লোন। আমার নানা’র বাড়ির রেলস্টেশনের পাশে আমার জায়গা বিক্রি, আমার নগদ কিছু টাকা? সবকিছু ঢেলেও স্বপ্নের বাড়ি নির্মাণের খরচ পোষাতে পারছিলাম না। একটা সময় এই ট্র্যাজেডির অবসান হলেও আমি তখন সুদূর টরোন্টোতে।

আমার স্ত্রী সুখি, আমার ছেলে খুশি। আর আমি আধ-খুশি। তবে কানাডাকে ভালোবেসেছিলাম। আজও ভালোবাসি। ভালোবাসব।
সবাইকে ঈদ মোবারক জানাই। সবাই ভালো থাকুন।

Exit mobile version