সুহেল ইবনে ইসহাক, টরন্টো, কানাডা: বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কানাডায় এসে পড়াশুনা সহজ করতে “জয়েন্ট বা ডাবল ডিগ্রি চালু করার চিন্তা করছি”। এক্ষেত্রে পড়ুয়া ছাত্রের অতিরিক্ত টিউশন ফিও গুনতে হচ্ছে না অথচ পরবর্তী দু’বছর কানাডার ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগসহ কানাডায় পি. আর. ও পর্যায়ক্রমে সিটিজেনশিপ নেয়ার সুযোগ থাকছে। অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন এর হাই কমিশনার ডঃ খলিলুর রহমান কানাডার সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জনসংখ্যার তুলনায়, এখানে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা পাকিস্তান, ফিলিপিনের চেয়ে অনেক কম, ভারত অনেক বড় দেশ, এক্ষত্রে ভারতের কথা বাদ-ই দিলাম। সেই হিসেবে অনেক কম ছাত্রছাত্রী বাংলাদেশ থেকে কানাডায় আসে। ৬০০০ কিংবা ৬,৫০০ ছাত্রছাত্রী এখানে আসে। এদের বেশিরভাগের বাবা মা হলেন দেশের পয়সাওয়ালা লোকজন। তিনি বলেন, “আমাকে আবারো দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, এদের বড় অংশ অবৈধ উপায়ে টাকা পয়সা উপার্জন করে এদেরকে পাঠায়। যারা আসল মেধাবী, বাবা-মা সৎ তাদের আসার সুযোগ কম। এই সকল সৎ বাবা মায়ের মেধাবী সন্তানদের এখানে পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য কানাডাতে আমি আমার দায়িত্ব গ্রহণ করার পূর্বেই বিষয়টি চিন্তা করেছি, জয়েন্ট বা ডাবল ডিগ্রি চালু করার কয়েকটা উদ্দেশ্য আছে, একটা উদ্দেশ্য হলো দুটি ইউনিভার্সিটির মধ্যে সমঝোতা হবে, প্রথম দুই বছর বাংলাদেশে পড়বে, পরের দুই বছর বিদেশের ওই ইউনিভার্সিটিতে চলে আসবে। ওই ইউনিভার্সিটিও ডিগ্রি দেবে এরাও দেবে, জয়েন্টলি দিক অথবা আলাদা আলাদা দিক, আর বিদেশে (কানাডায়) দুই বছরের ডিগ্রি শেষে নিয়মানুযায়ী তারা পি.আর. এর জন্য এনটাইটেলেড হবে। একটা ছাত্রের বিদেশে থাকা খাওয়ার খরচ দুই বছর চালিয়ে যাওয়া একটু সহজ হতে পারে, যেখানে চার বছর চালানো পরিবারের পক্ষ্যে কষ্টকর। একজন ছাত্রের আনুমানিক ১,৫০০ কানাডিয়ান ডলার যদি প্রতি মাসের একটা খরচ ধরা হয়, তাহলে ওই দুই বছর তথা ২৪ মাসের খরচ বাবদ ৩৬,০০০ (ছত্রিশ হাজার) কানাডিয়ান ডলার দেশেই থাকছে। এক্ষেত্রে পড়ুয়া ছাত্রের অতিরিক্ত টিউশন ফিও গুনতে হচ্ছে না অথচ পরবর্তী দু বছর কানাডার ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগসহ কানাডায় পি.আর. ও পর্যায়ক্রমে সিটিজেনশিপ নেয়ার সুযোগ থাকছেই। এই সংখ্যাটা আমি মনে করি বাড়ানো উচিত। কারণ কানাডিয়ান সিস্টেমের সাথে আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে এখন থেকে গ্রাডুয়েশন করলে, পার্মানেন্ট রেসিডেন্স হওয়া ও পরবর্তী উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পথ সুগম হয়। আমাদের দেশ ছোট, তাই দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে এসে পড়াশোনা করে দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করার অবকাশ রয়েছে।”
ডঃ রহমান জানান, “যে সকল শিক্ষার্থীরা আসছে, তারাতো আসছেই অধিকন্তু এই প্রসেসের মাধ্যমে আরো অনেক শিক্ষার্থী আসার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমি এটাই চাইছি, এটা ইনশাল্লাহ বাস্তবায়িত হবে। আমি এখনকার কয়েকটি ইউনিভার্সিটির সাথে কথা বলা শুরু করেছি। দোয়া করবেন, এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের শিক্ষার্থীরা বেশি সংখ্যক কানাডায় আসতে পারবে।”