Home কলাম বঙ্গবন্ধু শস্যচিত্রের নেপথ্য মানুষ

বঙ্গবন্ধু শস্যচিত্রের নেপথ্য মানুষ

ড. শোয়েব সাঈদ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি নিয়ে শস্যচিত্র (ক্রপ ফিল্ড মোজাইক) গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। এটি কোনো রং-তুলির কাজ বা আলপনা নয়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুরের বালেন্দা গ্রামে ১০০ বিঘা জমিতে দুই জাতের ধান লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

স্বাধীনতা সংগ্রামে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যুগান্তকারী নেতৃত্বের বিরল জায়গাটিতে বঙ্গবন্ধু আমাদের অহংকার। মাটি আর মানুষের শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি শ্যামল বাংলার শস্যক্ষেতে শস্যচিত্রে বিশ্ব রেকর্ডের সক্ষমতায় ফুটিয়ে তোলার এই কাজটি আদতেই ছিল সময় সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং জটিল একটি কাজ।

এই কাজটির পেছনে জড়িত ছিলেন অনেকেই। কৃষিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয় আর সংশ্নিষ্ট বিভাগগুলোর সার্বিক সহায়তা আর শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের পৃষ্ঠপোষক এবং প্রধান সমন্বয়ক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের ভূমিকার কথা আমরা জানি। আমরা এটিও জানি পুরো প্রকল্পের নকশা বাস্তবায়ন এবং অর্থায়ন করেছে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রæপ।
এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপ শুধু অর্থায়ন নয়, বলা যায় প্রতিটি স্তরে ছিল নিবেদিত। সবকিছুতেই একজন নেপথ্যের কারিগর থাকেন, মুখ লুকিয়ে আগলে রাখা যার কাজ; আর এই জায়গাটিতে একটি প্রাইডের ক্ষেত্র আছে এবং এটি হচ্ছে শস্যচিত্রের পেছনের সবচেয়ে নিবেদিত মানুষটি, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান; আমার ব্যাচমেট আর খুব কাছের একজন বন্ধু। বন্ধুরা সবাই তাকে শ্যামল নামে চিনি।

ব্যক্তিজীবনে সদা হাস্যময়, চমৎকার মনের মানুষ শ্যামল খুব সফল কৃষিবিদদের একজন; দেশের সেরা একজন এন্ট্রাপ্রেনিউর। বাংলাদেশে অনেক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ সচিব পদে আছেন কৃষিবিদরা, পুলিশের শীর্ষ পদগুলোসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূতের পদেও আছেন কৃষিবিদরা। বিশ্ববিদ্যালয়, স¤প্রসারণ আর গবেষণা বলয়ের বাইরে নিজস্ব ব্যবসায়ে নিয়োজিত আছেন অনেক কৃষিবিদ। কৃষিবিদ মোস্তাফিজ শ্যামল ব্যবসার গতানুগতিক প্রোফাইল ছাড়িয়ে একজন বড় মাপের সফল উদ্যোক্তা। ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার, ওয়ান ফার্মাসহ বহু প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।

বাংলাদেশে ছয় শতাধিক এগ্রোকেমিক্যালস কোম্পানির মধ্যে অন্যরা যখন আমদানি করে, তখন শ্যামলের এই ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার বাংলাদেশে নিরাপদ পেস্টিসাইড উৎপাদন করে এবং রপ্তানি করে। যা বাংলাদেশে একমাত্র এবং সর্বপ্রথম নিরাপদ ডব্লিউডিজি ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট। স¤প্রতি কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক উদ্বোধন করেন।

আশির দশকে ছাত্রজীবনে এই শ্যামলের হাত ধরে এগিয়ে চলা একটি সংগঠন আজও তার পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে; জনকল্যাণমূলক কাজে নিবেদিত কৃষাণ থিয়েটার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু আছে দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনে জড়িয়ে থাকা একটি সংগঠনকে এত দীর্ঘ সময় আগলে রাখা বিরল উদাহরণ বটে।

করপোরেট রেসপন্সিবিলিটি আর বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার পরশে সৈয়দ মোমেনা মমতাজ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত করছেন পিএইচডি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। সর্বশেষ সেশনে পিএইচডি স্কলারশিপ পেয়েছেন ১২ জন।

পেশাদারিত্বে, সামাজিক দায়িত্ববোধ আর বন্ধুবাৎসল্যে সদা উদ্দীপ্ত বন্ধুটির জন্য নিরন্তর শুভকামনা।
মাইক্রোবিয়াল বায়োটেকনোলজিস্ট

Exit mobile version