সাদা আর কালোর মাঝে মস্ত বড় একটি জায়গা আছে– যে জায়গাটা বড়ই অনির্দিষ্ট, যেখানে শূন্যতা ঝুলছে পেণ্ডুলামের মতন। সেখানে নিরাশা থাকে, নিরাশার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে আশা। প্রেম থাকে- ঠিক অপর পিঠে হৃদয়ের ক্ষরণ।
ফারহানা নীলার কবিতার জগতটি তাই সহজ সরল নয়।
তার সাথে এগুতে এগুতে আমরা আবিষ্কার করি এ জীবন বর্জনের নয়- যাপনের।
এ জীবন গভীরভাবে যাপনের, তুমুলভাবে বেঁচে থেকে আস্বাদ নেবার- এমন একটা প্রতীতিরই জন্ম দেন তিনি। ফারহানা নীলার কবিতার জীবনঘনিষ্ঠতা তাই পাঠককে মুগ্ধ করে, দুর্বারভাবে ছুঁয়ে দেয়।
প্রকরণগতভাবে ফারহানা নীলার কবিতা আধুনিক কবিতার এগিয়ে চলবার ধারাকেই অনুসরণ করে- কখনও তা ছন্দের অনুশাসনে ছন্দবদ্ধ, কখন ছন্দের অনুশাসন ভেঙে বহতা নদীর মতন সরল হয়ে যায়। তিনি ছন্দ নিয়ে খেলেন ভাঙাগড়ায়।
আর তার কাব্যগাথা ক্ষণে ক্ষণে চকমকি পাথর ঠোকে কেবল- ঝলকে দেয় পাঠকের চোখ।
এসব কিছুকে ছাপিয়ে ক্রমাগত ভেসে ওঠে জীবনের প্রতি সীমাহীন দরদ, নৈকট্য, অনিঃশেষ ভালোবাসা।
ফয়জুল ইসলাম
ফারহানা নীলা পেশায় চিকিৎসক। জন্ম ঢাকায়। বেড়ে উঠেছেন পাবনার আলো বাতাসে। জন্ম ১৭ নভেম্বর ১৯৬৪। বর্তমানে সহযোগী অধ্যাপক, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কর্মরত। কবিতায় তিনি আশ্রয় প্রশ্রয় খোঁজেন। জীবনের ঘাত প্রতিঘাত নানানরকম রং মাখে শব্দের আঁচড়ে। তিনি কবিতার পথে হাঁটেন অবিরত শুধুমাত্র একটি কবিতা লেখার অদম্য বাসনায়।
কবিতা কি জীবনের কথা বলে? তিনি কবিতায় জীবন খোঁজেন অহর্নিশ। তাঁর কবিতায় ছন্দের কারুকাজ। তিনি ছন্দ ভাঙেন আবার গড়েন। যেখানে কবিতার শেষ বিন্দু সেখানেই পাঠকের জন্য আলোর বন থেকে তিনি তুলে আনেন আলোর চঞ্চল উর্মিমালা।
গলির মোড়ের সেই লাইটপোস্টের মতন তাঁর কবিতা হলুদ আলো আর নিয়ন আলোর শহরের মাঝে নিয়ে আসেন বাকরূদ্ধ কথা- যা কখনও হয়নি বলা কোনো আদলে। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ চারটি- জলজ সুখে জলকণা, শিশির অথবা শ্রাবণ ভেজা রোদ, জলের আয়নায় অচেনা কেউ, জলে নেই আগুনেও নেই এবং প্রকাশিত গল্পগ্রন্থের সংখ্যা ৫ টি- শ্যাওলা সবুজ অবাক দেয়াল, শব্দেরা সিঁড়ি ভাঙে, গল্পটা রোদ্দুরে নেই, সূর্যের কুসুম, তবু নয় রূপকথা। তাঁর লেখা চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক বইয়ের নাম রক্ত পরিসঞ্চালনের জানা অজানা খুঁটিনাটি।
বাঁচো
আমি ঈশ্বর দেখিনি কখনও….
আমি ঈশ্বরের কাছে যাইনি কখনও!
আমি দেখেছি মানুষ….
মানুষের হাতে রেখেছি হাতটা, নির্ভীক আমি হয়েছি দুরন্ত নির্ভার।
মানুষ… জীবন
কথাটির মধ্যে আমি অনেকবার দেখেছি ঈশ্বর।
বৃদ্ধ সে ভিখিরি একদিন তীব্র ক্ষুধা নিয়ে
আমার দরজায় গোগ্রাসে ভাত খেতে খেতে বলেছিল যেই কথা;
সেই কথাটি আমি ঈশ্বরকে বারবার বলেছি।
হাসপাতালে আমার পুনর্জন্মের সময়…..
চলে যেতে যেতে ফিরে এসেছিলাম ঈশ্বরের কৃপায়।
আমার দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে উঠে আমি দেখেছিলাম
সাদা এপ্রোণ আর কতগুলো মুখের ভাঁজে
আমাকে ফিরিয়ে আনার সুতীব্র আহ্বান।
তাঁরা আমাকেই ছুঁয়ে বলেছিল….
জাগো জাগো! জেগে ওঠে! পৃথিবী সুন্দর, জীবন সুন্দর,
বেঁচে থাকার এই সময়টা সুন্দর।
আমি সেদিন জেগেছিলাম…. আমি ঈশ্বরের ছোঁয়ায় জেগেছিলাম।
খুব অভিমানে আমি নিজেকে যেদিন নিয়ে গেলাম মৃত্যুর খুব কাছাকাছি….
ছোট ছোট হাতের মুঠোয় আমার হাতটা; আমি ছাড়াতে পারিনি।
ফেরেশতার মতো তারা আমায় খুব ভালোবেসে
ফিরিয়ে এনেছিল জীবনের কাছে।
কেউ একজন বলেছিল…. বাঁচো! আমি সেই শব্দে বেঁচে থাকি।
ওটা ঈশ্বরের কন্ঠস্বর কিনা আমার জানা হয়নি।
বারবারই মানুষের মাঝে আমি…
আমার মাঝে মানুষ!
জীবনের কাছে কতবার তো হয়েছি নতজানু;
কতবারই আমি জিতে গেছি নিয়ে বেঁচে থাকার উদ্দীপনা।
একটা ঘাসফুলের কাছে,
একটা সবুজ টিয়ের লাল ঠোঁটের কাছে,
ইউক্যালিপটাস গাছের বাকলে
প্রবল জোছনার ফেনার কাছে
রোদ্দুর ভেজা দিনের কাছে
শ্রাবণ মেঘের কাছে
বৃষ্টির সোঁদা ঘ্রাণের কাছে
কিম্বা মাধবীলতার ঝুলন্ত ফুলের কাছে
মহুয়ার মাতাল ক্ষণের কাছে
….. হয়তো আমার জমেছে অনেক দেনা।
আমি সমুদ্রের জল ছুঁয়েছি গভীর ভালোবেসে
আমি চিম্বুক পাহাড়ের বুকে এঁকেছি পদছাপ।
সুন্দরবনের নৈঃশব্দে দীর্ঘ পথ আমি মাড়িয়ে এসেছি
নিয়ে বুকে স্মৃতির তোলপাড়।
ঈশ্বরের কাছে নতজানু আমি….
সৃষ্টির কাছেই নতজানু আমি…
জীবনের কাছে নতজানু আমি…
বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বলীয়ান।
আমি আবারও ছুঁয়ে দেবো ভালোবাসা আদর
আবারও ছুঁয়ে দেবো কান্নার জল…..
ঈশ্বরকে ছোঁয়ার অদম্য বাসনায়!
আমি বারবার ছুঁয়ে দেবো জীবন….
আমি বারবার ছুঁয়ে দেবার জন্য জীবনকে বলেছি বাঁচো!
রাতের শরীরে ছাই
প্রতিদিন সে দুপায়ে রাত পেঁচিয়ে হেঁটেছে অন্তর্বর্তী বিষাদের ভারে
শেকল পড়ার গল্প জেনেছে পায়ের পাতা;
আসামীর মতো হাঁটে রাত পায়ে পায়ে
পদছাপে আঁকা নিঃসঙ্গতা
মুঠোর ওষুধ ছুঁড়ে দেয় সেই পথে; যেখানে অনন্ত পথে রাত যাত্রা করে
বিড়বিড় শব্দে তীব্র জ্বালাময় ক্ষোভের দ্রবণে
সে ঢেলেছে গরলের মতো নিছক খেলার একটা জীবন
রাত জানে কোন ব্যথা দেয়নি ঘুমুতে কতকাল ধরে!
হুলুস্থুল আয়োজন করে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির মাঝে
দংশনে বিষের সেই নিয়তি হরফে লেখে ভবিতব্য
তার দুচোখে জমেছে যুগের শব্দরা; ক্লান্তি নুয়ে পড়ে পায়ের পাতায়
তবুও পেঁচিয়ে রাত দুপায়ে সে হাঁটে
পাগল না কী সে? কিসের অসুখ? জল্পনায় মাতে রাতদিন
নিজেকে এমন উল্টেপাল্টে দেখে সে; কাউকে দোষ দেবার উপায় নেই
যত কথা বলে একা- ঈশ্বরের সাথে
ঈশ্বরই জানে- কখন পাগল হয় জীবনের কথা?
ঘোলাটে দৃষ্টিতে জড়ো হয় যত দুঃখ তারও বেশি ছাই ওড়ে
রাতের শরীরে।
আত্মার কলরব
মধ্য দুপুরের রোদ ভেদ করেনি সবুজ;
নির্জনতা হয়ে আছ ভেবে নিই মনে
দূরে কাছে কতজন- তাঁরা কাঁদে কিন্তু শব্দ নেই
কেউ অবিচল বোধে জীবন উপকরণে ব্যস্ততায় খুব মগ্নতাকে ডাকে
পথিকের মতো আমি পথের দিকেই চোখ
বাঁক ঘুরে চলে গেছে পথ; দেখা যায় না তোমাকে
এই যে ঘরের থেকে এখানে এলাম-
কেউ কি দেখেছে আর এই অবয়ব?
যতটুকু দেখা যায় ততটুকু দেখি
যতটা সম্ভব চোখ মেলে থাকি
প্রাণের সঞ্চিত আলো দেখিয়েছে পথ
দেখিনি বলেই তুমি নেই- সত্য নয়; মৃত্যু নিয়েছে শরীর
আত্মার অস্তিত্বে তুমি থাকো আজীবন; কথা বলো আমি শুনি
আমি বলি তুমি শোনো; নীরবতা জানে এই ভাষা
এতো জল জমে আছে বুকের ওমের মাঝে;
বরফ শীতল শয্যা কে কাকে দিয়েছে?
দিন গড়িয়েছে জলে
জল গড়িয়েছে দিনে
রাতের ফানুস মন উতলা বাতাসে
জাল বোনে স্মৃতি আর গল্পে
দেখিনি বলেই তুমি নেই
এই কথা অবান্তর; তোমাকে পেয়েছি আত্মার ভীষণ কলরবে।
কল্পদ্রুম
এত দূরে চলে এসেছি উজানে
কিছু ব্যথা পড়ে আছে পথের কিনারে;
বাতাসের ঝাপটা লাগে চোখেমুখে
বৃক্ষের বাকলে ছায়া, ঝরে গেছে কতগুলো পাতা
ফি বছরে সেই ঝরাপাতা গল্প
বলে গেছে বৃক্ষ সটান দাঁড়িয়ে
ঋজু দেহে জীবনের কাছে এসে রেখেছে আদল
কিছু বীজ বোনে সময়ের ঘেরে আগামীর কথা
গল্প দ্রুম হয়ে আছি; হয়ে গেছি অভিশপ্ত বনসাই যেন
যাত্রাপথে!
তবুও চলেছি-
ফেলে রাখি ছায়া চোখে
জন্মান্ধ দৃষ্টিতে জড়ো হয়
স্মৃতি সরোবর
কবে থেকে আমি গল্প দ্রুম? কল্প দ্রুম হয়ে বেঁচে আছি
পথের আদলে
মূর্ছনায় কাঁপছে
মূর্ছনায় কেঁপে ওঠে রাতের নিঝুম ঘুম-
সাথি হারা পাখি খোঁজে সকালের আলো
ভোর হয়- সূর্যের হাসিতে
এটা তো ঘটনা নয়; রটনাও নয় বলে চুপ হয়েছে সময়
ঘুম ভাঙে যেন শব্দের মতন-
অথচ কী শব্দহীন ব্যথা ভোর ভাঙে শিথানের কোলে
এসব কথায় কাজ নেই
ভাবনায় নেই খেই; বরাদ্দ আলোতে উজ্জ্বল পথটা মগ্ন বিবশতা আঁকে
এই আবেশের কথা তবে থাক!
বধির বোধের নগ্ন চিবুকের ঘাম মুছে নাও
আহ্লাদী জোছনা ভেজা ভুলটুকু গোগ্রাসে গিলতে থাকো বুভুক্ষু হৃদয়ে
কে বাজায়? কাকে বাজিয়েছে এই মূর্ছনায় প্রতাপের কেউ?
নৈঃশব্দের দীর্ঘ পথ হাঁটি
জানি আরও পথ বাকি- আলো চলে সামনে পেছনে সারি সারি
মাঝখানে আমি কেন তবে এতো কালো মাখি?
শূন্যতার কোলাহলে কে কাকে মাতিয়ে রেখেছে এমন?
এই গন্ধ উৎকট ভীষণ
যেন ভয়ের থাবায় ডোরাকাটা দাগ
এই গন্ধ আলো আঁধারের গায়ে পাপের ফসিল
এই মূর্ছনা কুহক- দিনের ভ্রমণ শেষে রাতের চিবুকে ক্লান্ত পদরেখা
রেণু বা পরাগ যে নামেই ডাকো-
ফুলের খোয়াব লেখে মূর্ছনায় কেঁপে কেঁপে নিয়তি আখরে!
জল কাঁদে
ভালোবাসি শব্দটা খেলুড়ে বড্ড
কখনও ডাঙ্গুলি খেলা, সাপলুডু কিংবা কানামাছি
রুমাল চোরের মতো অথবা মিউজিক্যাল চেয়ারে ভালোবাসা;
খেলায় ভীষণ পটু
ভালোবাসার কথায় ক্রমাগত ফুরিয়ে হারায় রং;
প্রচলিত ছন্দে ভালোবাসা হঠাৎ
ছন্দের পতনের মধ্যে বেদিশা বা অপারগ বোধ
ভালোবাসা যেন রংধনু-
রোদ বৃষ্টি হলে কিছুটা সময় উঁকি দেয় মনের আকাশে
তবুও মানুষ এই একটা শব্দের অপব্যবহারে পারদর্শিতা দেখিয়ে
জিতেছে বারবার পক্ষান্তরে হারে ভালোবাসা
ভালোবাসা- শব্দটা নাজুক
আবার দাপুটে ভীষণ
শৃঙ্খল পড়ায়- বাঁধে শত বাহানায়
আদতে কেউই কি ভালোবেসেছে এমন?
বৈঁচি ফুল ফোটে নিরানন্দে ভালোবাসার ক্লেদাক্ত মাটি জুড়ে;
জল জানে, কিছু অশ্রু জানে কেন নদী হয় মন?
কেন ঝড় এলে অশান্ত জলের বাড়াবাড়ি-
ভালোবাসা মরা ফুলের মতন ভাসে আর ডোবে- জল কাঁদে
সোনা রং রোদ
নদীটা হয়তো মরা? জল ছিল কোনো একদিন
হয়তো গল্পের দিন ছিল
নৌকার পালের মাঝে গেঁথেছিল অচেনা বাতাস
গাছটা হয়তো ফলবতী ছিল কোনো একদিন
হয়তো শেকড়ে জল বুনেছিল ভালোবাসা
গাছটায় পাখি বসেছিল কোনো এক ফাগুনের দিনে
ঘরটায় ঘর ছিল ব্যবহৃত সরঞ্জাম ছিল
ওখানে সংসার ছিল খুনসুটি আর নিত্য ফর্দে
এসব মামুলি যতসব
এসব মায়ার ছল হয়তোবা? অথবা ছায়ার সাথে অবিরাম যুদ্ধ
যুদ্ধ ময়দানে সৈন্য- একদিন ফিরে যায় যুদ্ধ শেষে
জীবনে কিংবা মরণে
হারজিৎ গণনার দিন দেখে হাতের রেখায় আঁকা জয় পরাজয়!
রাশিফলে কী লেখা? হাতের তালুতে তালু ঘষে সোনা রং রোদ
অবরুদ্ধ চলাচল
অনেক বিষ্ময় নিয়ে পাড়ি দিই
বিষময় পথ
জঞ্জাল কেবলই আমি?
হতবাক বোধে হতবিহ্বল আমাকে অনুভূতির জারক ভেবেছি কতই-
ক্ষার আর ক্ষারকের কী গভীর রসায়নে?
বিস্মিত বিস্মৃতি থেকে নড়ে ওঠে সুখের পায়রা
ওরা দুখের বেসাতি গড়ে তোলে নিন্দিত নরকে
মেলে দিই আকাশটা-
চাঁদ টিপে নামে দুর্বোধ্য শব্দের অহেতুক আনাগোনা
কী গভীর প্রণয়ের ভুলে- ভুল করি, ভুল ভাবি
এই বিস্ময়ের আমি!
যদি জানতে কিসের এতো ব্যথা তুলেছে সুনামি?
কোন ঢেউ এসে বসে পাড়ে?
নদীর পাড়ের ভাঙনের শব্দ জানে-
কীভাবে গড়েছে নতুন পাড়ের চিহ্ন?
দুই পাড় মুখোমুখি বসে
সমান্তরালে রেখায় আঁকা ভাঙনের ছবি
তবুও তো জাগে নদী;
কোন রসায়নে মাটি থেকে তোলে জল?
আমার কলস ভাঙা; ভাঙা চাঁদে নিয়তির টিপ
বিষম বিষাদে গীত গায় কত বিষ্ময় জোনাকি?
জোনাকির ফুল ঝরে জলের ডাহুকী মনে নেশা ধরে
মহুয়া নৈঃশব্দ্যে আসে; মাতাল বাতাসে
এতটা বিস্তৃত খোলা মনে কেউ হুড়কো এঁটে দেয়
মিটসেফে ওড়ে প্রজাপতি আবদ্ধ খেলায় অবরুদ্ধ চলাচলে।
শতাব্দীর শোক
এই উজানের আমি জোয়ার চিনিনি বলে
আজও বসি চাঁদের বাথানে
একটা ঘরের মাঝে বাতাসের তুমুল সে বৈরী আচরণ
জানালাটা আটকে রাখি
দরজায় তালা
ঠক ঠক শব্দ শুনি
কেউ নেড়ে গেল কড়া
টিকটিক করে ঘড়ির পেছনে- ঘড়ির কাঁটায় রাত নামে
টিকটিকির কাটা লেজ নড়ে
আমাদের কেটে গেল শতাব্দীর আয়ু
শতাব্দীর শোক জমে গল্পের শরীরে
বীজ বুনি তবু আঁধারের গায়ে