হাসান গোর্কি : আমি জার্নালিজমে এম ফিল করার সময় প্রফেসর সাখাওয়াত আলী খান এডিটিং এর কোর্স পড়িয়েছিলেন। প্রথম দিন সম্পাদকরা কীভাবে অন্যের লেখা আর্টিকেল এবং সংবাদদাতাদের প্রেরিত সংবাদের অপ্রয়োজনীয় অংশ কেটে ছেঁটে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী করেন তার বর্ণনা দিলেন। অনেক সময় প্রাপ্ত সংবাদের শতকরা ৮০ ভাগও যে কেটে ফেলা হয় সেটা বললেন। এরপর একজন সম্পাদকের ব্যবসা উদ্যোগের গল্প বললেন। গল্পটা এরকম : এক পত্রিকা সম্পাদক তার পাঁচ বন্ধুর সাথে সমান অংশীদারিত্বে যৌথ মাছ ব্যবসার উদ্যোগ নিলেন। সম্পাদক অফিসে ব্যস্ত থাকেন। ব্যবসার খুঁটিনাটি তিনি বোঝেন না। তাই অন্য বন্ধুরা মিলে একটা দোকান ভাড়া করলেন, মাছের আড়তের সাথে যোগাযোগ করলেন, কয়েকজন অভিজ্ঞ সেলসম্যান নিয়োগ দিলেন এবং দোকানের সামনে বড় করে লিখে দিলেন, “ফ্রেস ফিস সোল্ড হেয়ার”- অর্থাৎ, এখানে তাজা মাছ বিক্রি হয়।
দোকান উদ্বোধনের আগের দিন সম্পাদক বন্ধুকে ডাকা হলো। তিনি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “‘হেয়ার’ লিখেছ কেন? মাছ তো এখানেই বিক্রি হবে। অন্য কোথাও বিক্রি হলে তো আমরা এখানে দোকান দিতাম না।” অন্য বন্ধুরা বুঝতে পারলেন ‘হেয়ার’ শব্দটার দরকার নেই। পেইন্ট দিয়ে ‘হেয়ার’ ঢেকে দেওয়া হলো। সম্পাদক এবার বললেন, “‘সোল্ড’ শব্দটা অতিরিক্ত লেখা হয়েছে। দোকানে মাছ বিক্রিই হয়, বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় না, এটা সবাই জানে।” পেইন্ট দিয়ে ‘সোল্ড’ ঢেকে দেওয়া হলো। সম্পাদক বললেন, “‘ফ্রেস’ শব্দটা থাকলে দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রোপাগান্ডার মত শোনাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যদি লিখে দেওয়া হয়- “একটি ধূমপানমুক্ত আদর্শ শিক্ষাঙ্গন”, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বাড়বে না, বরং হানি হবে।” সবাই একমত হলেন এবং ‘ফ্রেস’ শব্দটিও কালি দিয়ে ঢেকে দিলেন। থেকে গেল শুধু ‘ফিস’। সম্পাদক বললেন, “দেখো, কত স্মার্ট এবং অভিজাত একটা নাম হলো- ‘ফিস’”। বন্ধুদের একজন বললেন, “তাহলে ফিস শব্দটা রাখার দরকার কী! মাছের গন্ধেই তো লোকজন কিনতে চলে আসবে।”
সম্পাদকদের গল্পটা এখানেই শেষ। এরপর আমরা কাহিনী আরও কিছুটা এগিয়ে নিতে পারি- বিব্রত সম্পাদক চলে যাবার পর ‘ফিস’ শব্দটিও কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হলো এবং সাইনবোর্ডে কোন লেখা ছাড়া মাছের দোকান চালু হলো। মাছ সাজিয়ে বিক্রেতারা বসে থাকল। কিন্তু কোন ক্রেতা এলো না। কারণ মাছ কোন গন্ধ ছড়াচ্ছে না। পচেও যাচ্ছে না। আড়তের লোকজন বিক্রির আগে মাছগুলো শক্তিশালী রাসায়নিকের দ্রবণে চুবিয়ে নিয়েছিল। তারা জানত যে দোকানে এগুলো বিক্রি হবে তাদের স্লোগান- “ফ্রেস ফিস সোল্ড হেয়ার।” তাই মাছগুলোকে তাজা রাখা দরকার।
উপরে যে গল্পটা বলা হলো সেটা একটা কৌতুক। কিন্তু বাস্তবে আমরা এধরণের ‘ফ্রেস ফিস’-ই খাচ্ছি এবং নিজেদের জন্য বিপদ ডেকে আনছি। শতকোটি বছরের বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে মানব প্রজাতি আজকের অবস্থায় এসেছে। এই বিবর্তনের পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল প্রকৃতির সাথে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকার দ্বৈরথ। বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীরা ফসিল দেখে বলছেন, প্রায় দেড় কোটি বছর আগে প্রাইমেট থেকে মানুষের আদি পুরুষের জন্ম। তারা পশু শিকার করে কাঁচা মাংস খেয়েছে, গাছ থেকে আপেল পেরে খেয়েছে, প্রাকৃতিক উৎস থেকে পানি পান করেছে। এভাবে যে তারা টিকে ছিল তার প্রমাণ আমরাই। মানুষ আগুনে খাদ্য ঝলসানো শিখেছে দুই মিলিয়ন বছর আগে। জ্ঞান বৃক্ষের ফল খেয়ে তখনই হয়তো মানুষ আদি পাপটা করেছিল। জানা ইতিহাসের দশ হাজার বছরে মানুষ অনেক ধরণের প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে। ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের পর থেকে মানুষ বিস্ময়কর দ্রুতগতিতে প্রযুক্তি নির্ভর হতে শুরু করেছে। এই নির্ভরতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আমরাও যে একটা প্রাকৃতিক প্রাণী সেটা ভুলতে বসেছি। আমাদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার সবগুলোই এখন পূরণ করা হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার করে। এতে জীবন স্বচ্ছন্দ হয়েছে, নিরাপত্তা বেড়েছে। মিলিয়ন বছর আগে মানুষ যখন গুহার মধ্যে বা গাছের ডালে বাস করতো তখন তাদের হয়তো এরকম আয়েশ ছিল না। অবশ্য আমরা নিশ্চিত নই তাদের জীবন আসলে কেমন ছিল। আজকের পিঁপড়া, তিমি, শিম্পাঞ্জি বা ঈগলের জীবন স্বচ্ছন্দ নয়, সেটা আমরা বলি কী করে!
অতিরিক্ত প্রযুক্তি নির্ভরতা দীর্ঘ মেয়াদে পৃথিবীর প্রাণীকুলের জন্য কীভাবে বিপদ ডেকে আনছে সে বিষয়ে নেচার ম্যাগাজিনে ছাপা একটা নিবন্ধে (Humans are driving one million species to extinction) বলা হয়েছে এক মিলিয়ন উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি বিলুপ্তির পথে রয়েছে। কিন্তু মানুষ নিজেই যে বিলুপ্তির বিপদে আছে সে বিষয়ে আলোচনা কম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিউচার অব হিউম্যানিটি ইনস্টিটিউটের গবেষক নিক বসট্রোম বলছেন, বিশ্বের ইতিহাসে এটাই প্রথম শতাব্দী, যখন মানুষের অস্তিত্বের সংকট সবচেয়ে বেশি। তার মতে আমরা যদি ভুল করে বসি, তবে এটাই হতে পারে মানুষের জন্য শেষ শতাব্দী। তিনি মনে করছেন, বিপদটা তৈরি হতে পারে সিনথেটিক বায়োলজি, ন্যানোটেকনোলজি ও যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তার অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ থেকে। তবে বিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ হারাবেন এরকম মনে হয় না। যেমন ক্লোন করে প্রাণীর জন্ম দেওয়ার প্রযুক্তি পৃথিবীতে আছে। কিন্তু মানব ক্লোনের ওপর স্ব-আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বিজ্ঞানীরা মেনে চলছেন। অনেকে মনে করছেন একটা সর্বব্যাপী পরমাণু যুদ্ধ পৃথিবী থেকে মানুষের বিলুপ্তি ঘটাতে পারে। বাস্তবে তার সম্ভাবনাও খুব কম অথবা শুন্যের কাছাকাছি। এরকম একটা যুদ্ধ কেউ-ই শুরু করবে না। কারণ যে শুরু করবে তাকে এটা ধরে নিতে হবে যে সে-ও প্রতিপক্ষের ছোড়া বোমায় মরে যাবে।
আসল বিপদটা আমাদের ঘরের মধ্যে। মানুষ তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে আগামী কয়েক শতাব্দী বা সহস্রাব্দের মধ্যেই পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। মনে হতে পারে মানুষ জেনেশুনে বিলুপ্তির কোন বিপদকে প্রশ্রয় দেবে কেনো? আসলে অনেক বিপদকে মানুষ ইতোমধ্যে প্রশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে সংকটের সাময়িক সমাধান পেতে। যেমন কার্বন নিঃসরণ পৃথিবীর জলবায়ুর ওপর অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে এটা জানার পরও জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। জেনেটিক্যালি মোডিফাইড (জি এম) ফুড দীর্ঘ মেয়াদে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বিপজ্জনক রকম দুর্বল করে দিতে পারে এটা জানার পরও তার উৎপাদনের ঊর্ধ্বগতি থেমে নেই। আজকেই যদি হাইব্রিড প্রাণী ও ফসলের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে প্রতি বছর কয়েক কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে।
এন্টিবায়োটিকের আবিস্কার এ পর্যন্ত হয়তো শত কোটি মানুষের জীবন রক্ষা করেছে। কিন্তু এই দ্রব্যটির একটা ভয়াবহ দিক আছে। কোন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যখন এটার অসম্পূর্ণ প্রয়োগ করা হয় তখন সে নিজের শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। পরবর্তীতে ঐ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে আরও উচ্চ ক্ষমতার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। সেক্ষেত্রে আবারও অপরিমিত বা অসম্পূর্ণ প্রয়োগ ঘটলে ব্যাকটেরিয়া আরও শক্তাশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এভাবে এমন কোন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হতে পারে যাকে মারতে যে মাত্রার এন্টিবায়োটিক লাগবে সেটা আমাদের শরীর ধারণ করতে পারে না। এরকম ক্ষেত্রে সাধারণ সংক্রমণেই কোটি কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করতে থাকবে এমনকি খুব দূরবর্তী কিছু দ্বীপবাসী ছাড়া সারা পৃথিবীর মানুষই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে।
আজ থেকে পাঁচ’শ বা হাজার বছর পর কী ঘটতে পারে তার একটা চিত্র আমরা কল্পনা করতে পারি: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পাবে। কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সীসা সহ ক্ষতিকর উপাদান বৃদ্ধি পাবে। মুক্ত বায়ু শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য উপযুক্ত থাকবে না। মানুষকে নির্ভর করতে হবে কৃত্রিম অক্সিজেনের ওপর। পৃথিবীর সব বাসগৃহে এয়ার কন্ডিশনারের পাশাপাশি অক্সিজেনের লাইন থাকবে। নভোচারীদের পিঠে যেমন অক্সিজেনের বাক্স থাকে, সবাই সেরকম একটা অক্সিজেনের বাক্স পিঠে নিয়ে বাইরে যাবে। গাড়ি, অফিস, শপিং মল, স্কুলে অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকবে। খাদ্যের চাহিদা পূরণ করবে জিএম ফুড। সবাই প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবে। বিশুদ্ধ পানি পান করবে। রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে শতগুন। পুরো জীবন প্রনালী হবে জীবাণুমুক্ত। এই ব্যবস্থার ফাঁক গলে কেউ আক্রান্ত হলে সে নিশ্চিত মরে যাবে। কারণ ইমিউনিটি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়বে যে তা মানুষকে জীবানুর হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না। রোগাক্রান্ত হয়ে কিছু মানুষ তো এখনও মরছে! তাহলে সমস্যা কোথায়! আমাদের কল্পিত পাঁচ’শ বছরের পরের সময়ে মানুষের বিলুপ্তির কথা আসছে কেন!
টিপু সুলতানের সেরিংগাপত্নাম দুর্গে যে সামরিক শক্তি সঞ্চিত ছিল তা ইংরেজদের বিপক্ষে যুদ্ধ জয়ের জন্য অপ্রতুল ছিল না। কিন্তু অবরুদ্ধ থাকায় সে শক্তি ব্যবহার করতে না পেরে তিনি হেরে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ দিয়েছেন। যারা দাবা খেলতে পারেন তারা জানেন যে সবগুলো গুটি থাকা অবস্থাতেও রাজা চেক দিতে পারলে খেলা শেষ হয়ে যায়। মানুষ প্রকৃতিকে যেভাবে নষ্ট করছে, প্রকৃতি থেকে ক্রমাগত নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে এবং কৃত্রিম পরিবেশে বসবাসে নিজেকে অভ্যস্ত করে তুলছে তাতে টিপু সুলতানের মতো নিজের তৈরি সুরক্ষিত দুর্গে বা তিতুমীরের মত অরক্ষিত বাঁশের কেল্লায় তাদের প্রাণ দিতে হতে পারে। প্রকৃতি রাজা চেক দিয়ে দিতে পারে। (এই আর্টিকেলের একটা কপি যদি কোন কারণে এক হাজার বছর টিকে যায় তাহলে সেটা পড়ে সে সময়ের মানুষ আমাকে নস্ত্রাদামুস ভাবতে পারে!)
এই বিপদের কথা কি বিজ্ঞানীরা জানেন না? জানেন, এবং আমাদের চেয়ে সহস্রগুন বেশি জানেন। তাহলে তারা ক্ষতিকর উদ্যোগগুলোকে অনুমোদন দিচ্ছেন কেন? নদীতে বাঁধ দিলে দীর্ঘ মেয়াদে ভূ-প্রকৃতির ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ে। এ সত্যটি সবাই জানে। কিন্তু শহর বা ফসলের জমি রক্ষা করতে বাঁধ নির্মাণ করা হয়— আপাতত বাঁচা যাক, এই চিন্তা থেকে। এর ফলে আজ থেকে এক হাজার বছর পর ভূ-প্রকৃতির পরিবর্তন মানুষের জন্য কী অকল্যাণ বয়ে আনবে সেটা ভেবে আমরা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকতে রাজি থাকব না, সেটাই স্বাভাবিক। আমরা জি এম ফুড খেলে তার আসল কুফল ভোগ করবে আজ থেকে পাঁচ’শ বা এক হাজার বছর পর পৃথিবীতে আসা আমাদের উত্তরসূরীরা। আমার পিতামহর পিতামহ আমাকে নিয়ে ভাবেননি। আমার নাতির নাতি আমার কোন কৃতকর্মের জন্য কষ্ট পাবার সম্ভাবনা আছে সে চিন্তা করে আমি আমার জন্য লোভনীয় কিছু থেকে বিরত থাকব না।
ধরা যাক আমার একটা অপারেশন হয়েছে। আমাকে যদি বলা হয় আমি এন্টিবায়োটিক খেলে আমার গ্রান্ড গ্রান্ড গ্রান্ড সন বা আজ থেকে এক হাজার বছর পর পৃথিবীতে আসা আমার কোন উত্তরসূরির শরীরে এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না, তাতে আমি এই ওষুধ খাওয়া থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করব না; কারণ আমার জীবন আমি কাল্পনিক ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য বিসর্জন দিতে চাই না। তাহলে কি এক, দুই, তিন শতাব্দী বা এক সহস্রাব্দ পর আমাদের বাঁশের কেল্লা ভেঙে পড়বে? হ্যাঁ, সম্ভাবনাটা খুব বেশি, যদি না মানুষ কোন এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রকৃতি নির্ভর জীবন প্রণালীতে প্রত্যাবর্তন করে।
অন্য প্রাণীরা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মানুষের তৈরি ক্রমকক্ষয়িষ্ণু অট্টালিকা, মহাসড়ক, রনতরী, বাসগৃহ আছে; মানুষ নেই— এরকম একটা অবস্থার কথা আমরা ভাবতে পারি না। কিন্তু সে সম্ভাবনা একেবারে কম নয়। আমরা আছি বলেই পৃথিবী আছে; গাছপালা, নদী, পর্বত, মহাসাগর আছে ব্যাপারটা এমন নয়। পৃথিবীতে মানুষের তুলনায় ১.৬ মিলিয়ন গুণ বেশি পিঁপড়া আছে। তারা তো ভাবছে পৃথিবীটা তাদের সম্পত্তি। তাদের ভাবনা ভুল, সেটা আমরা বলি কি করে!
hassangorkii@yahoo.com
রয়্যাল রোডস ইউনিভার্সিটি, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, জুলাই ৩১, ২০২১।